হিজবুত তওহীদের সাথে এলাকাবাসির সংঘর্ষে

ঘন্টাকালব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন এলাকাবাসি আহত হয়েছে। মুর্মুর্ষ অবস্থায় আহত ৫ জনকে উজিরপুর ও অন্যান্য আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ হিজবুত তওহীদের ১৭ জন সশস্ত্র কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান জেহাদী বই, আপত্তিকর লিফলেট, সিডি, হাতুরি, রামদা, চাপাতি উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিশালের উজিরপুর লঞ্চঘাট এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শী, আহত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে উজিরপুর সদরে জঙ্গী হিজবুত তওহীদের সশস্ত্র কর্মী মাসুদ হোসেন ও ফরিদ হাওলাদারের নেতৃত্বে তাদের (হিজবুত তওহীদের) কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকায় মুসুল্লীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গতকাল মঙ্গলবার আছর নামাজের পর উজিরপুর সদর জামে মসজিদের মুসুল্লীরা একত্রিত হয়ে জঙ্গী হিজবুত তওহীদের আপত্তিকর কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি উজিপুর লঞ্চ ঘাট এলাকায় পৌঁছলে হিজবুত তওহীদের সশস্ত্র ২৫/৩০জন কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অর্তকিত ভাবে মিছিলের ওপর হামলা চালায়। এসময় এলাকাবাসি মুসুল্লীদের সাথে একত্রিত হয়ে হিজবুত কর্মীদের পাল্টা ধাওয়া করে। এলাকবাসির সাথে হিজবুত কর্মীদের প্রায় ঘন্টাকালব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় উজিরপুর বন্দরের ব্যবসায়ীরা দোকান পাট বন্ধ করে দিগবিদিক ছোটাছুটি করেন। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এলাকাবাসি রাজ্জাক বালী (৪০), নাজমুল বালী (৩০), মোকলেচুর রহমান (৩৫), ইসমাইল হোসেন (২৮), রোকন উদ্দিন (৩০), নাসির উদ্দিন (৪৫), উজিরপুর আলীম মাদ্রাসার সহকারি অধ্যক্ষ আবু হানিফ (৪৫), ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান (২৫), আনিসুর রহমান (১৮), ভবতোষ হালদার (৪৫)সহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। গুরুতর আহতদের উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ হামলাকারী হিজবুত তওহীদের সশস্ত্র ক্যাডার মোজাম্মেল হক (৪৫), জালাল উদ্দিন (৩৩), মাসুদ আহম্মেদ (৩২), ফরিদ হাওলাদার (৩৯), মোকলেচুর রহমান (৩৭), শাহাদাত সিকদার (৩৩), মিলন হাওলাদার (৩০), তাইজুল ইসলাম (৩০), হাসান আলী (২৯), রুহুল আমীন (৩৭), সেলিনা বেগম (৩০), লুৎফুন নেছা (৩৫), রেশমা বেগম (৩০), সেলিনা আক্তার (২২), সিরাজ হাওলাদার (৫০), রুবি বেগম (২৮), মর্জিনা বেগমকে (২২) গ্রেফতার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান জেহাদী বই, আপত্তিকর লিফলেট, সিডি, হাতুরি, রামদা, চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সুকুমার রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হিজবুতের অন্যান্য কর্মীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শিকারপুর শেরে বাংলা কলেজের প্রফেসর হিজবুত তওহীদের উজিরপুর উপজেলা কমান্ডার মোজাম্মেল হোসেন মানিকে পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় গ্রেফতার করেছে। হামলায় উজিরপুর থানার এসআই শামীম শেখ ও কনষ্টবল কামাল হোসেন আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা উজিরপুরসহ পাশ্ববর্তী এলাকার হাজার-হাজার গ্রামবাসি লাঠিসোঠা নিয়ে জঙ্গী হিজবুত তওহীদ সদস্যদের এলাকা থেকে বিতারিত করার জন্য মহরা অব্যাহত রেখেছেন। উজিরপুরে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।


রিপোর্ট করেছেন : খোকন আহম্মেদ হীরা, ওমর আলী সানি ও মিজানুর রহমান মিজান