মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ছিলেন সংগ্রামী নেতা

একজন সংগ্রামী নেতা। সে ছিলেন এ দেশের উজ্জল নক্ষত্র। সেই ইতিহাস আজ সবাই ভুলে যেতে বসেছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস তুলে ধরতে বর্তমান মহাজোট সরকার বদ্ধপরিকর। অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রিসভার সমবায় ও ঋণদান মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভার বিচার ও পূর্ত মন্ত্রী, বাংলার তৎকালীন কেন্দ্রীয় অন্তর্বতী সরকারের আইনমন্ত্রী এবং পাকিস্তান সরকারের আইন ও শ্রমমন্ত্রী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মৈস্তারকান্দি গ্রামের প্রয়াত মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের ১০৮তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উল্লেখিত কথাগুলো বলেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস।

জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মৈস্তারকান্দি গ্রামের মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের জন্মভূমিতে প্রতিষ্ঠিত ‘মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল স্মৃতি পরিষদ’-এর উদ্যোগে গতকাল শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের পৌত্র (নাতী) দ্বিজেন্দ্র নাথ মন্ডল। আলোচনা সভার প্রধান বক্তা স্মৃতি পরিষদের ইতিহাস ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বলেন, যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল আমৃত্যু পর্যন্ত নির্যাতিত-নিপীড়িত, শোষিত-অনুন্নত, শিক্ষা-দীক্ষায় পশ্চাদপদ, সামাজিকভাবে অবহেলিত, দরিদ্র-অর্থক্লিষ্ট ও রাজনৈতিক অধিকারবঞ্চিত মানুষের সার্বিক উন্নয়ন এবং অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। ফলে তিনি ভারত সরকারের দেয়া মহাপ্রান খেতাব অর্জন করেছেন। ১৯০৪ সালের ২৯ জানুয়ারি মৈস্তারকান্দি গ্রামের কৃষক রামদয়াল মন্ডল ও সন্ধ্যা দেবীর ঘর আলোকিত করে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল এ ধরায় আসেন। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। বাড়িতে গ্রাম্য পাঠশালায় তার বাল্য শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯২৬ সালে আইএ ও ১৯২৯ সালে বিএ পাস করেন। ১৯৩৪ সালের জুলাই মাসে কলকাতা আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন। পরে ১৯৩৬ সালে প্রথমে কলকাতায় ও একই বছরে বরিশালে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৭ সালে অবিভক্ত বাংলার আইনসভার একটি মাত্র সাধারন আসনে তফসিলি জাতির একমাত্র প্রার্থী হিসেবে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল এমএলএ নির্বাচিত হন।

স্থানীয় সেবা আশ্রম প্রাঙ্গনে মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের ১০৮তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ব্যাপক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যে রয়েছে শনিবার সকালে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ, মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের প্রতিকৃতিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ ও মাল্যদান, শ্রীমদ্ভগবত গীতা পাঠ, দুপুরে ভক্তি গীতির অনুষ্ঠান, মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের জীবনী ও সংগ্রামী কার্যক্রমের ওপর আলোচনা সভা ও কবিগান। আজ রবিবার রাতেও কবি গান অনুষ্ঠিত হইবে। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গৌরনদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ আলম খান, গৌরনদী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ, গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম-পিপিএম, দেশবরেন্য জিতেন লাল ভৌমিক, পঙ্কজ সরকার, অসীম কুমার বাড়ৈ, বিনয় ভূষন হালদার প্রমুখ।