লীগ নেত্রীর নির্যাতনে গৃহপরিচারিকার মৃত্যু

মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিনের নির্যাতনে অসুস্থ্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী গৃহপরিচারিকা জেসমিন আক্তার (১৮) মারা গেছে। শনিবার বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

ঢাকার খিলগাঁও তালতলা এলাকার বাসিন্দা কেন্দ্রীয় যুব মহিলালীগের সাংগঠনিক সম্পাদিকা ও জাতীয় মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিনের বাসায় গৃহপরিচারকার কাজ করত জেসমিন। সে বাবুগঞ্জের রহমতপুর ইউনিয়নের লোহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা এস্কেন্দার ব্যাপারীর চার মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে জেসমিন দ্বিতীয়। বড়ভাই মো. রিপন ব্যাপারী বলেন, আনুমানিক দেড় বছর আগে ইসরাত জাহান নাসরিন তার ঢাকার খিলগাও তালতলা এলাকার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজের জন্য নেয় জেসমিনকে। ওই বাসার কাজ করার কিছুদিনের মধ্যে সে আরো মানসিক অসুস্থর পাশাপাশি শারীরিক ভাবেও অসুস্থ হয়ে পরে। কিছুদিন পূর্বে সে বাথরুম নষ্ট করে। এই অপরাধে জেসমিনকে জুতা পেটা করার পর দুই দিন তাকে অভূক্ত রেখেছে গৃহকর্তী। নাসরিন ও  তার বোন জোসনাও প্রায়ই জেসমিনকে মারধর করত। দুই বোনের মারধরে জেসমিনের শরীর ফুলে ওঠে। এমনকি একটি কানে শুনতেও পেত না।

এই অবস্থায় তাকে (ভাই) খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে এক সপ্তাহ পূর্বে  ঢাকার সেই বাসায় যায় সে(রিপন)। এমন অসুস্থ হয়ে ছিল যে বিছানা থেকে উঠতে এবং কথা বলতেও পারত না। সেই অবস্থায় বাড়ি নিয়ে আসা হয়। অর্থের অভাবে কয়েকদিন বাড়ি রেখে অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার মারা যায় জেসমিন। আজ তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে হাসপাতাল সুত্র জানিয়েছে। ভাই রিপন জানায় তিনি এই হত্যার ঘটনায় মামলা করা হবে।

কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদিক ও জাতী মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিনের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত (০১৯১১২৫২০৮৪ ও ০১৭১১৩৫৫১৮১) মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। বাবুগঞ্জ থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, ঢাকায় খিলখাও এলাকায় ইসরাত জাহান নাসরিন নামে এক মহিলার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করত জেসমিন। সে মারা গেছে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পায়নি।