প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পাল্টানোর ইঙ্গিত

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনই ইঙ্গিত দিলেন।

শেখ হাসিনাবৈঠকে অংশ নেওয়া এক মন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বিমানবন্দর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণের স্বার্থের হানি ঘটে, এমন কোনো পরিকল্পনা সরকার নেবে না। আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণে যদি স্থানীয় লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যদি ওই এলাকার মানুষ না চায়, তাহলে অন্য জায়গা ঠিক করা হবে। প্রয়োজনে আমরা নদীর ওপারে বা চর এলাকায় জায়গা দেখব।’

আজ সকালেও প্রস্তাবিত বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আড়িয়ল বিল এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ করে। বেলা দুইটার দিকে মুন্সিনগর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আড়িয়ল বিল রক্ষা কমিটির আহ্বানে বড় জমায়েত হয়। সোয়া তিনটার দিক থেকে সেখানে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে যে সরকার আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে। এরপর ওই এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরকারের সরে আসার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার এবং মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিল এলাকায় প্রস্তাবিত নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্তের পর থেকে মাস খানেক ধরে সেখানকার মানুষ আন্দোলন করে আসছে।

জানুয়ারির শুরু থেকে ২৫ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। এর মধ্যে ১০ হাজার একর জমিতে বিমানবন্দর এবং বাকি ১৫ হাজার একর জমিতে বঙ্গবন্ধু সিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত রয়েছে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নীতিগত অনুমোদন দেন। এর পর থেকে স্থানীয় জনগণ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। গত সোমবার হাজার হাজার গ্রামবাসী বিল রক্ষা কমিটির আহ্বানে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক অবরোধ করে। গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত এবং সাংবাদিক, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, গ্রামবাসীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। প্রতিটি মামলায় সাত হাজার করে গ্রামবাসীকে আসামি করা হয়। এর পর থেকে পুলিশ আড়িয়ল বিলসংলগ্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জের আদালতে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করে মামলা করেন মুন্সিগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সরকারি কৌঁসুলি আবদুল মতিন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্র, উসকানি ও তাঁর নির্দেশে বিএনপির লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহাসড়কে ওই নারকীয় ঘটনা ঘটায়। আদালত মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। সে নির্দেশ মোতাবেক আজ বুধবার মামলাটি শ্রীনগর থানায় নথিভুক্ত করা হয়।

সূত্র: প্রথম আলো