তসলিমা নাসরিন (পোস্টমর্টেম ৪র্থ ও ৫ম পর্ব)

তার নিজের বলা কথার বিরোধিতা করে স্ববিরোধী লেখার অংশ দিয়ে। এই সিরিজটির ৩টি পর্ব সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে। আশা করি আগামী বই মেলাতে এই Taslima Nasrinসিরিজগুলোকে এক করে একটি বই ছাপাতে পারব। তবে বইটির জন্য মূল্য থাকবে না।এই বইটি স্পন্সর যারা করবেন, সেই প্রকাশনী সকল খরচ বহন করবেন।আবার কেউ যদি মনে করে আমি আমার নাম ফাটাবার জন্য বইটি প্রকাশ করব, তাদের সেই চিন্তাতেও গুড়ে বালি, কারন বইয়ের লেখকের যায়গায় লেখা থাকবে “কেউ না”।

এখন এই “কেউ না” যদি মানুষের কাছে প্রিয় হয় তবে হোক। আমার কি? আমি শুধু এইটাই প্রমাণ করতে চাই যে, নিজেকে নারীবাদী দাবী করা, নিজেকে মনুষ্যবাদের বা সাম্যবাদের একজন মানুষ মনে করা তসলিমা নাসরিন আসলে ভেতরে ভেতরে একজন নারী নির্যাতন কারী,প্রতিক্রিয়াশীল, ভন্ড, মিথ্যেবাদী, লেখা চোর,ভয়ানক মানসিকতা সম্পর্কিত একজন দুই পেয়ে মানুষ, যার জীবনে একমাত্র আকাংখা হচ্ছে দেশের বাইরে বসে দেশের নারীদের নিয়ে বড়-বড় নারীবাদী কথা বলা,মানুষের নজরে পরার ধান্দায় থাকা।

বিলিভ মি আর নট, আপনি আমার এই সিরিজ গুলো যদি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন এবং আমি মিথ্যা উদাহরণ দিচ্ছি এমন দেখাতে পারেন তবে এই ব্লগে সবার সামনে নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইব। আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম, আসুন কেউ এগিয়ে, আমার কথা মিথ্যে প্রমাণ করতে।

তনার এক ভক্ত জনাব তমশো দিপ বার বার দাবী করছেন যে তনা ভালু, তনা ভালু। তনা ভন্ড না। ব্লগার একলব্য১৯৭১ এর একটি মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে তমশো অনেক কথাই বলেছেন। সবই খাপ ছাড়া আবেগেময় অযৌক্তিক কথা বার্তা।
দেখুন তমশো কি বলছে-

তমশো বলেছে-

হেলাল হাফিজকে দেখলাম তসলিমার প্রেমে পড়তে। দেখলাম তসলিমার প্রেমে গড়াগড়ি খেতে। তারপর দেখলাম হেলাল হাফিজ তসলিমার বাসায় আসছেন। সঙ্গে করি ফরিদ কবির। তসলিমা নাসরিন বিব্রত। এবং সেজন্যই,তিনি সুদর্শন হেলাল হাফিজের সাথে কথা না বলে বলছেন “শেওড়া গাছের ভূতের মত দেখতে” ফরিদ কবিরের পাশে।

কত বড় মিথ্যে কথা ও মিথে উপমা তমশো দিলো আমি আপনাদের কে দেখাচ্ছি। তমশো উপরের উদাহরণে কি বললো? বল্ল যে, তনা বিব্রত কারন হেলাল হাফিজ তার প্রেমে পড়েছে এইজন্য। তাই, সেই বিব্রত হবার কারনেই তার সাথে আসা সময় প্রকাশনীর ফরিদ কবিরকে তনা বলেছে,

“ শেওড়া গাছের ভূতের মত দেখতে”

হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা…

অথচ, আপ্নারা “ক” বা “দিখন্ডিত” বইটি খুলুন। সেই বইয়ের “অন্যভুবন” নামক লেখাটি পড়ুন। ৬০ নং পৃষ্ঠায় দেখুন লেখা আছে,

“হারুন আমার দিকে যতই প্রেম প্রেম চোখে তাকাতে চায়, আমি চোখ সরিয়ে নারকেল গাছে ঝুলে থাকা নারকেলের দিকে চেয়ে থাকি…………
বলার মত কোনো শব্দ খুঁজে পাই না। বরং শব্দ খুঁজে পাই শেওড়া গাছের ভুতের মত দেখতে ফরিদ কবির নামের যে কবিকে হারুন সঙ্গে এনেছিলো,তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে”

হা হা হা হা, দেখেন তো কি কান্ড!!!

জলজ্যান্ত হারুন হয়ে গেলো হেলাল হাফিজ!!! হেলাল হাফিজের সাথে তো ফরিদ কবির আসেই নি। অথচ তমশো বলছে হেলাল হাফিজের সাথে নাকি ফরিদ কবির এসেছিলো।

যদি যুক্তির খাতিরেই ধরি যে সুদর্শন এক যুবকের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো ও তনা বিব্রত ছিলো বলেই মহান যুক্তি ও মানবতাবাদী তনা একজন মানুষকে “শেওড়া গাছের ভূত” বলে আখ্যায়িত করবে? এ কেমন কথা? এ কেমন মানবতা রে ভাই?

এখন যদি একজন খুব ভালো একজন মানুষের পাশে তমশো দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেই ভালো মানুষটার কোনো আচরণে আমি বিব্রত হই, তাহলে কি আমি বলবো যে,

“ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাধার বাচ্চা গাধা, হাঁদারাম, আবালচোদা তমশো”

আমার বলা কথা কি “ভাই তমশো”র উপর অত্যাচার হয়ে যেত না? অন্যায় হয়ে যেতনা? কেউ পাশে সুদর্শন দাঁড়িয়ে থাকলে আর বিব্রত হলেই কি তনা আপা একজন মানুষকে এইভাবে বর্ণনা করবেন? এ কেমন মনুষ্যবাদ? এ কেমন ভন্ডামী?
আবার সবচাইতে অকাট্য দুইটা উদাহরণ দেখাই, তনা যখন দেশে মোল্লাদের ভয়ে ও তার জীবন হানির ভয়ে সুইডেনে “পেন” এর আমন্ত্রণে গেলেন এবং গিয়েই যে ফ্ল্যাটে উঠলেন সেখানে, এক ভদ্রমহিলাকে তিনি কি বললেন?

দেখুন-

(আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ, পৃষ্ঠাঃ১৬)

আপ্নারাই বলুন শুধু অসময়ে ঘুম ভাঙিয়েছে বলে একজন মানুষকে কি বললো?

১) লিক লিকে
২) স্তনহীন
৩) দাঁত উচু

আবার যেই কায়সারের সাথে তসলিনা যৌন্সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলো কায়সারের বউয়ের অবর্তমানে, সেই কায়সারের বউকে দেখে কি বলো তসলিমা?

১) বেঁটে

আমার কথা হলো, কি দোষ ছিলো লেনা’র? শুধু ঘুম থেকে অসময়ে উঠিয়েছে বলেই এমন ভাবে তাকে বর্ণিত করবে তনা? এই বইটি তো লেনার সাথে দেখা হবার অনেক পরে তনা লিখেছিলো। এতদিনেও তনা রাগ পুষে রেখেছিলো ওই সামান্য কারনটির জন্য? একজন নারীবাদী মানুষ কিভাবে পারে মন কাজ করতে? এমন মনুষ্যবাদী মানুষ কিভাবে পারে ওমন কাজ করতে?

আবার কায়সারের বউকেই বা কেন “বেঁটে” বলে সম্ভোধন করা? কি অন্যায় ছিলো হেনুর??????

মেয়েদের স্তনহীন,বেঁটে,দাঁত উচু,লিকলিকে এগুলো বলেই কি তনা নিজেকে মনুষ্যবাদী হিসবে গড়ে তুলছেন? তনার ভক্তরা আবার বলছেন তনা আসলে মানুষের বাহ্যিক রূপ দেখে কাউকে অমানুষ বলেনি। তনা নাকি ভেতরের রূপ্টাই শুধু দেখে। হায়রে…আর কত মিথ্যাচার আর হিপোক্রেসি?

তসলিমা বিদ্বেষীরা এই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন পুরোপুরি। তসলিমা নাসরিন নানা লোককে রুপের বিশেষণে বিভূষিত করে দেখিয়েছেন রুপের থেকে গুণ, সততা, মেধার দাম অনেক বেশি। একটা মানুষকেও তিনি খারাপ রুপের জন্য খারাপ বলেননি, অমানুষ বলেননি।

সুনীলের প্রসংসা করতে গিয়েও বা জয়ের প্রসংসা করতে গিয়েও সেই একই দৃষ্টিভংগী ফুটে ওঠে। সুনীলকে বিশাল বপু বা গয়কে হাড় গিলগিলে বলে আবার তাদের প্রশংসা। যেমন প্রশংসা তিনি করেছেন, “ক” বইটির “ঘটনার ঘনঘটা” লেখাটি লিখতে গিয়ে এক পর্যায়ে শহীদুল হক নামে একজনের নামে বলছেন,

“প্রতিভা আছে লোকটির, লোকে বলে বড় শঠ লোক, আমি অবশ্য তার শঠতা দেখিনি নিজ চোখে”

লক্ষ্য করুন, একজন লোকের শঠতা তনা নিজে দেখেনি। লোকটি তার সাথে সব সময় ভালো। অথচ শোনা একটি কথা চামে চিকনে কিভাবে লাইন্টির মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো। তনা একটা মানুষের প্রসংশা করতে গিয়ে একটা না একটা বাঁকা কথা বল্বেই। কি সমস্যা তনার? এই পুরো পৃথিবীর উপর তার এত রাগ কেন? নিজে “লুজার” বলে কি সবাইকেই এই দৃষ্টিতে দেখতে হবে?

সুনীল আর জয় কে প্রসংশা করে ফাঁকে যে তাদের শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করলো ঠিক আমি যদি আজকে এইভাবেই বলি,

“নেতিয়ে পড়া দু*(বুদ্ধিমান পাঠক বুঝে নিন) তসলিমার, অথচ কি সুন্দর কবিতা লিখে”

বা যদি বলি,

“একটা সাইজ ছাড়া মহিলা, বিশাল পাছা, অথচ কি দারুন লেখে তনা”

তখন কি হবে? তখন তনা আর তার ভক্তরা আমাকে কচুকাটা করার জন্য কলম নিয়ে বসবে। আমি আগে কি লিখেছি তার ব্যাঞ্জন ধনি দেখাতে চাইবে সবাইকে। তখন তনারা চেঁচাবে, পুরুষতন্ত্র!!!!পুরুষতন্ত্র

অথচ একজন পুরুষকে যে এভাবে বর্ণনা করলেন, তাতে কিছু আসে যায় না।
সামনের পর্ব গুলাতে আমি আরো অনেক অনেক উদাহরণ দিব, যেখানে তনা মানুষের শারিরীক অবয়ব নিয়ে কি নোংরা কথাই না বলেছেন।

আবার যখন নাঈমুল হাসান খানের সাথে পরিচয় হল তনার, তখন কিন্তু তনাকে ঘুম থেকেও জাগায় নি, কোনো সুদর্শনের সাথেও দাঁরায় নি। বরং একের পর এক উপকার করেছে নাইম। কিন্তু সেই উপকারকারীকে কিভাবে বর্ণনা করছে তনা?

১)ছাদ ছিরি হীন

আর এই পার্ভার্ট এর পক্ষেই সাফাই গেয়েই তামাশার পাত্র হচ্ছে তমশোর মত চোখ থাকিতেও অন্ধ ভক্ত।

তমশো আরো প্রসঙ্গ আনলো তনা খারাপ হলে কি সত্য কথা অকপটে বলতে পারত? ( এই কথার উত্তর নীচে দিয়েছি)

আবার বলেছে, হেনু কেন পত্রিকায় বলে নাই, লিখে নাই?

এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দেই? বাংলাদেশে অনেক মেয়েই পরিবারের কথা চিন্তা করে অনেক নির্যাতনের পরেও পুলিশের কাছে যায় না, অনেক পুরুষ স্ত্রীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েও পুলিশের কাছে যায় না। সবাই তার সামাজিক অবস্থান,সম্মান এগুলো চিন্তা করে। যেখানে হেনুকে একজন সামান্য গৃহবধু হিসেবে দেখানো হয়েছে সেখানে বলাই বাহুল্য, হেনু হয়তবা এই সাহস করেনি।
আমার এক বন্ধু আছে, যার স্ত্রী এইভাবে পরকীয়া প্রেম করত। তাদের দুইটা বাচ্চা ছিলো, শুধু বাচ্চাদের কথা, সমাজ আর পরিবারের কথা চিন্তা করে সে কখনো পুলিশের কাছে যায় নি।

কাজের মেয়েকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করার ক্ষেত্রে তমশোর যুক্তি দেখুন-

“একবার ভেবে দেখুন, কত কাজের মেয়ে যাচ্ছে পত্রিকা অফিসে,গিয়ে বলে দিচ্ছে কিভাবে তাদের নির্যাতন করছে গৃহকর্তা বা কর্ত্রী। তসলিমা নাসরিনের কাজের মেয়ে কিছুই বলেনি। কারণ সে সেটা বোঝে না। সে বোঝে না তসলিমা তার সাথে অন্যায় করেছে। তাই তসলিমার খারাপ লেগেছে, নিজের কোন অপরাধের কথাই তিনি লুকোননি সেজন্যই। কারণ তিনি জানতেন তিনি না বললে কেউ আর ওই কথা বলবে না। আর তখন তসলিমার নিজের কাছে নিজের খারাপ লাগবে। নিজে নিজে তিনি অপরাধবোধে ভুগবেন”

তাহলে তমশোর কথা অনুযায়ী কি দাঁড়ায়? তনা কাউকে চড় মেরেছে এই কথাটি যেহেতু ওই মানুষটি কখনই বলবেন না এই ব্যাপারটা তনা বুঝে গিয়েছেন তাই তনা তার বইতে তা লিখে ফেলেছে। লিখে ফেলার কারনেই তিনি মহান।

কি হাস্যকর যুক্তি!!!!

তার মানে এই দাঁড়াচ্ছে যে, ধরা যাক আমি তমশোর পুটকি মারলাম। এখন লোক লজ্জায় বা সামাজিক কারনে তমশো কিছু বলতে পারলো না। আমি খুব দুঃখিত হলাম। এই দুঃখিত হয়ে একদিন বই লিখে তমশোকে পুটকি মারার কথা জানিয়ে দিলাম। এতে করে কি তমশো কে পুটকি মারার দায় উবে গেলো? এতে করে কি আমি মহান হয়ে গেলাম?

আর তাছাড়া চড়-থাপ্পড়ের জন্য বাসাতে কাজ করে এমন নিরীহ মানুষেরা পুলিশের কাছে যায় না যেখানে খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিলেও যেতে চায় না। বাসার কাজের মেয়ের গায়ে হাত তোলা যে কত বড় অন্যায় একটি কাজ আর এই কাজকে বইয়ে তুলে দিয়ে অনুশোচনার নাটক সাজিয়ে মহান সাজাবার যেই চেষ্টা তনা আর তার ভক্তকূল করছেন তাতে কি বাংলাদেশের আইন আদালত তনাকে নির্দোষ বলে প্রতীয়মান করতে পারে? আর দেড় বছরের যেই মেয়েটিকে তনা “চতুর হাসি”র জন্য পিটালো, তা আপনি কি আশা করেন যে, সেই দেড় বছরের মাসুম বাচ্চাটা সাংবাদিক ডেকে এনে আর পুলিশের কাছে গিয়ে বিচার চাইবে? এত বছর পর দেশের বাইরে নিরাপদে গিয়ে দোষ স্বীকার করছেন আমাদের তনা আপা। দারুণ!!!!

তমশো ভাইয়ের কাছে এই বিষয়ক আইন জানতে চাই। পিলিজ আমাকে দেখান তো, বাংলাদেশের কোন আইনে আছে যে, নিজের সমালোচনা মূলক লেখা বা আত্ন সমালোচনা মূলক লেখাতে কিভাবে সাত খুন মাফ হয়ে যায়?

তমশো যে কত বড় যুক্তিবাদী তা নিজের বোকামী দারা বার বার প্রকাশ করে যাচ্ছে। নিজেই বলছে আবার নিজেই উত্তর দিচ্ছে-

“তসলিমার সাথে হেনুর স্বামীর সম্পর্ক ছিল হেনু যদি তা জানিয়ে দিতেন, তাতে তসলিমার কোন ক্ষতিই হতো না। তসলিমা এমনকি অস্বীকারও করতে পারতেন, বলতে পারতেন আমাকে নিয়ে গুজব রটাচ্ছে আমার বিদ্বেষীরা(যদিও তা তসলিমা কস্মিনকালেও করতেন না, কারণ কায়সার সত্যি ছিল)।। তাতে হেনুর কিছুই হতো না। আম ছালা দুটোই যেত। শেষতক লোকে বলত যে ঘটনা সত্যি হলে কায়সারেরও দোষ আছে। তাতে কায়সারের কোন লাভ হতো না। সমাজের সম্মান ধুলিসাৎ হয়ে যেতো। যা হয়”

হ্যাঁ এই কারনেই তো হেনু রিপোর্টার বা পুলিশের কাছে গিয়ে লাভ হতো না। আম আর ছালা দুটি যেত বলেই তো তনার মত নির্যাতন কারীরা পার পেয়ে যায়।

তনা ভক্ত তমশো সাফাই গাইতে গাইতে লাইন ছাড়া হয়ে যান সব সময়ই। তিনি বলেছেন-

“আর তসলিমা নিজে কোনদিনই এত অসৎ নন যে হেনু বলে দিলে তিনি বলবেন মিথ্যে বলছে। তসলিমা যে নিজেই আগ বাড়িয়ে কায়সারের কথাটা লিখলেন, সেটাই তার প্রমাণ। তসলিমা নিজেই লিখেছেন কায়সারকে নিয়ে তিনি সব জায়গায় যেতেন। সুতরাং যারা তসলিমাকে চিনত তারা কায়সারকেও চিনত। তারাই বা কেউ লেখেনি কেন?”

সবাই তো আর তনা না, যে, “আ” বললে আব্দুল ভাববে। কায়সারের সাথে তনাকে সবাই দেখলেই কি মানুষ কাহিনী ফেঁদে ফেলবে? আর কাহিনী ফাঁদে নি বলে তাতে কি প্রমাণিত হয়? তনা খুব ভালো কাজ করেছে অন্যের স্বামীর সাথে শরীর-শরীর খেলাতে?

তমশো আবার বলেছে-

তসলিমার নিজের কখনো কোন মুখোশ ছিল না, আজও নেই। তসলিমা নিজে সবসময়ই বলেছেন নিজে তিনি কি কি অন্যায় করেছেন। তিনি নিজে বলেন যে আমার যে ভুলগুলো আছে তা নিয়ে আমি অনুতাপ করি। আমি তো মানুষ, দেবী তো নই। সেজন্যই কেউ তাকে মাথার দিব্যি না দিলেও তিনি বলে দিয়েছেন নিজের সব কথা।

ও… কি যুক্তি রে বাবা!!! তনা তার ভুল গুলোর জন্য অনুতাপ করেন একদিকে আর অন্যদিকে আপনি বলেন তনা সাধু সন্যাসী। তিনি ভালু। এইসব ভুল তো তিনি একবার করেননি, উপরে কতগুলো মেয়ের জীবন সর্বনাশ করেছে দেখেছেন? যান আবার দেখে আসুন লিস্ট ধরিয়ে দিয়েছি পৃষ্ঠা নাম্বার সহ। এই হচ্ছে তনার আত্নসমালোচনা। একের পর এক অন্যায় করেছেন, নির্যাতন করেছেন মেয়েদের।

“শুধু সৈয়দ হক আর হেলাল হাফিজদেরই দোষ ধরেননি। আপনি মনে হয় দ্বিখন্ডিত বইটা পড়েননি। তসলিমা যে কতখানি অহংকারহীন সেটা দেখতে পাবেন পড়লে। এক জায়গায় উনি লিখেছেন – “হুমায়ুন আজাদের মতো লেখক দেশে থাকতে আমি কেন আনন্দ পুরষ্কার পাবো?” আরও অনেক লেখক সম্পর্কে এই একই কথা লেখা হয়েছে। ভাবুন তো, জনৈক বাঙালরা কেমন খুশি হবে এই কথা শুনলে?এখন তারা তসলিমার অহংকারহীনতার নিকুচি করে বলবে তসলিমা নিজেই বলেছে তার যোগ্যতাই ছিল না আনন্দ পুরষ্কার পাওয়ার”

কি আর বলবো আপনাকে। আপনি আসলে হয় তনার বই ঠিক মতো পড়েন নি ( যেভাবে হারুন কে হেলাল হাফিজ বানালেন, তাতে আমি শিওর) তা না হলে এই কথা কিভাবে বলেন? এই হুমায়ুন আজাদকে প্রসংসা করেছেন আবার এই বইয়েই তাকে কতবার অপমান করে কথা বলেছেন। সেসব কথা বাদ, তনার বই “তুই নিষিদ্ধ তুই কথা কইস না” বইটির ৫০ পৃষ্ঠায় হুমায়ুন আজাদ যখন চাপাতির আঘাতে মৃতপ্রায়, তখন সে বিষয়কে নিয়ে তনা লিখেছে-

“আজ যখন এক পুরুষের উপর আঘাত হানা হলো, পুরুষটি যতই নন্সেন্স কাজ করুক, সব কেমন এক তুড়িতে এক কাট্টা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। গোটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এখন বুনো ষাঁড়ের মত খেপে উঠেছে পুরুষের অধিকার রক্ষা করতে”

তিনি আরো বলেন ওই ৫০ পৃষ্ঠাতেই-

“ এখন তারা বাক স্বাধীনতার দাবী করছে গলা ফাটিয়ে, চারদিকে হইহুল্লোড় এখন।সভা মিছিল,পত্রিকাগুলোয় উপচে পড়ছে প্রতিবাদের কলাম। দেশ গেলো দেশ গেলো রব”

আবার ৫১ পৃষ্ঠাতে তনা দাবি করেছে যে, তার উপর এই আক্রমণ হলে কেউ তা নাকি তনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার হয়ে যেত। এবং এই কথাটি তিনি বলেছেন, তার একটা বই নিষিদ্ধ হবার সাথে তুলনা করে ।

১) হুমায়ুন আজাদকে চাপাতির কোপে জর্জরিত করেছে সন্ত্রাসীরা আর এই দুঃখ জনক ও নিন্দনীয় ঘটনায় সেই “আমার হইলে কি হইতে পারিত” মানে সেই আমিত্ব নিয়ে এসেছেনই তনা। একজন মানুষ এমন স্বার্থপর কিভাবে হয়? এরা আগেও এমন হয়েছে।

২)রুদ্র যখন মারা গেলো, সেই রুদ্রকে দেখতে গিয়ে তনার সবার আগে কি মনে পড়েছে জানেন? রুদ্রকে যেখানে শুইয়ে রাখা হয়েছিলো, সেই স্থান দেখে তনার শুধু মনে পড়েছে এই বিছানাতেই কতবার তার রস আস্বাদিত হয়েছে, কতবার তারা শারিরীক ভাবে মোলাকাত করেছে। আচ্ছা আপ্নারাই বলেন, একটা মানুষ মারা গেছে। দুনিয়া থেকে চলে গেছে। এমন একটা সময় তার সাথে করা যৌন স্মৃতি রোমন্থন আরেকটা মানুষ কিভাবে করে? ঠিক একি ব্যাপার ঘটেছে হুমায়ুন স্যারের উপর আক্রমনের কথা বলতে গিয়ে। কোথায় হুমায়ুন স্যারের কথা বলবে, তা না, শুরু করে দিয়েছে তার সাথে কি কি হয়েছে বা সে ওই যায়গায় থাকলে কি হতে পারত?

তনা কে বলি, তনা কি ভুলে গেছে ১৯৯৪ সালের কথা? যখন মোল্লারা তনার মাথা চেয়ে মিছিলো করেছিলো তখন আমরা মিছিল করেছি ঢাকা ইউনিতে। আমাদের পরিষদ থেকে কোথায় যাইনি আমরা এই মোল্লাদের ঠেকাতে? আমি এক অভাজন লেনিনের নাম তনা হয়ত শোনে নাই কখনো। জানে নাই কখনো। আজকে তিনি আমাদের প্রতিবাদ শেখায়?? আমি থু দেই নিজেকে আজকে। কার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে ছুটেছিলাম একদিন। কার জন্য আন্দোলন করেছিলাম!!!

তনা কি জানেনা যে, হুমায়ুন স্যারের উপর আক্রমনের পর নারী পুরুষ আরা আলাদা ছিলো না? সব মেয়েরা হল থেকে বেরিয়ে এসেছিলো মিছিলে, সব পুরুষেরা বেরিয়ে এসেছিলো মিছিলে। আর তনা আজকে শোনাচ্ছে পুরুষতন্ত্রের গপ্প?
থু দেই আপনার ওই ভন্ড মুখে। থু!!!

এই তনা “ক” বইয়ের ১৯৩ পাতায় “পেষন” নামক লেখায় লিখেছেন যে হুমায়ুন আজাদ স্যার নাকি কিছু চ্যালা চামুন্ডা নিয়ে মেলায় হাঁটেন।

“ চেলারা উঠতে বসতে তার প্রসংশা করেন,তিনি বেজায় রকম উপভোগ করেন এসব”

বাহ!!! ভক্তদের অপর নাম তাহলে চ্যালা। আসলে বাংলাদেশের অন্য সব লেখকেদের ভক্তদের উচিত তনা আপার চ্যালা হয়ে যাওয়া। আচ্ছা, একসময়, তো আমাদের তমশো ভাই-ও হুমায়ুন আজাদ স্যারের “ডাই-হার্ড” ভক্ত ছিলেন। সেই সময় কি তমশোর অপর নাম ছিলো “চ্যালা-চামুন্ডা”?

আর এখন তো তমশো আপনার ভক্ত, তার নাম কি আপা? “ফুল চন্দন”??

তনার আহংকার নাই না? ভাইরে হাসতে হাসতে মরেই যাই কি না…

“ক” বইটার ২১৯ পাতাতে “আনন্দ ধারা” লেখাটার শুধু ওই পাতাটা পড়েন। কি লিখা আছে-

“আমার মেয়ে মানুষ পরিচয়টিতে তাই আমি একটি অহংকার জুড়ে দিতে চাই”

তনা তার একটা কবিতায় লিখেছেন,


“আমার এখন দশ পাঁচ টাকায় ছেলে কিনতে ইচ্ছা করে। ছেলে কিনে ছেলেকে তছনছ করে বুকে পিঠে লাথি কষে বলব, যাশশালা। ছেলে কিনে ছেলের কুঞ্চিত অন্ডকোষে লাথি কষে বলে উঠবো, যাশশালাহ”

তনা, আপনি কি সমাজের স্বপ্ন দেখেন তা এই কবিতা থেকেই প্রমাণিত। যেই নারীদের অধিকার নিয়ে আপনার তথাকথিত সংগ্রাম আপনি কি সেই কারন্টি-ই কন্ট্রাডিক্ট করছেন না? আপনি মেয়েদের অধিকার চান, কারন মেয়েরা ছেলেদের দ্বারা বা পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত (আপনার ধারনা)। সেই আপনি যখন চালকের আসনে যাবেন বা ধরা যাক আপনি নারীতান্ত্রিক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করলেন ( যদিও আপনি নিজেই নারী নির্যাতন কারী। দেড় বছর বয়সী বাচ্চা পিটান) তাহলে কি আপ্নি-ই সেই একই অত্যাচার পুরুষদের উপর করবেন না? আপনার কবিতা দেখে কি তা-ই বোঝা যায় না?

আসলে লেজ লুকিয়ে রাখা টাফ তনা আপা…লেজ লুকিয়ে রাখা টাফ…

তমশো আমাকে উদ্দিষ্ট করে একটি মন্তব্য করেছে তনাকে নিয়ে এমার আগের পোস্টটিতে। সেখানে তিনটি পয়েন্ট আছে। আমি উত্তর সেই ভিত্তিতেই দেয়ার চেষ্টা করছি।

তমশোর দেয়া মন্তব্যের (১) নাম্বারের উত্তর-

তসলিমা নাসরিন আত্নসমালোচনা করেছেন বটে। আমাকে তা মওতেও বোঝানো কেন যাবেনা আসুন দেখি-

ধরা যাক মুকিম গাজী একজন বড় দরের খুনী। এই পর্যন্ত সে নৃসংশভাবে ১০০ টা খুন করেছে। এখন কোর্টে উঠে মুকিম গাজী কোনো প্রেসার ছাড়াই দোষ স্বীকার করল। নিজের আসল চরিত্র স্বীকার করে সবাইকে জানালো। মুকিম এমন ভাবে খুন গুলো করেছে যা কোনোভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব ছিলো না।

এখন এই মুকিম গাজীর এই যে সত্য বলার সাহস আছে, আপনি কি শুধু সেই কারণে তার অন্যায় ভুলে যাবেন? তাকে তার করা অন্যায় থেকে মুক্তি দিবেন? না দেবে না। কোর্ট তার শাস্তি হয়ত কমাবে, কিন্তু শাস্তি সে পাবেই। কারন সে দোষী।
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন একজন খুনীর সাথে তনা আপুর তুলনা কেন করলাম? উত্তরটা হচ্ছে এখানে মূলত “খুন” শব্দটাকে বাদ দিয়ে যদি যেকোনো অপরাধকেই আপনি ওই জায়গাতেই বসান না কেন, কথা একই দাঁড়ায়।

তসলিমা আত্নসমালোচনা করেছেন এটা এপ্রিশিয়েট করি। কিন্তু যেখানে তস্লিমা নিজেই নিজেকে “লেখা চোর” “নারী নির্যানকারী” “নারীর সর্বনাশকারী” এইরকম ভাবে উল্লেখ করে পরিষ্কারভাবে পাঠকদের জানান দিয়েছেন, সেখানে কি করে তার ভক্তরা এই জবানবন্দীকে উপেক্ষা করে তনার পক্ষে ওকালতি করতে আসে?

তনা যে আত্নসমালোচনা করে একটি সুক্ষ ফাঁক রেখে দিয়েছে তার দিকে নজর দেয়া যাক।

উপরের ছবিটিতে লাল কালি দেয়া অংশের একদম প্রথম ভাগে লক্ষ্য করে দেখুন, তিনি বলছেন “পরিবেশ,প্রতিবেশ থেকে শেখা”। দেখুন,কাজের মেয়ে এবং দেড় বছরের মাসুম বাচ্চাকে “চতুর হাসির” জন্য পিটিয়ে নিজেকেই নিজে বকছেন পাঠকদের সামনে কিন্তু চিপা দিয়ে একটা ক্লজ রেখে দিয়েছেন। কি সেই ক্লজ?

“পরিবেশ-প্রতিবেশ” থেকে শেখা ক্লজ। মানে অন্যায় তনা করেছেন ঠিক কিন্তু তা তার চারপাশের পরিবেশ ও তার পরিবার থেকেই শেখা। আমাদের তনা চারপাশের পরিবেশে যা ঘটে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী বলে নিজেকে দাবী করেন। অথচ কাজের মেয়েকে মারা বা দেড় বছরের মাসুম ফুটফুটে সরল নিষ্পাপ টুকটুকে বাচ্চাকে পিটানোতে তিনি আর বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী নন। তিনি তখন দোষ চাপান পরিবার আর পরিবেশের শিক্ষাকে। হায়!!! ভন্ডামী কত প্রকার!!!!

আরো একটা মজার তথ্য আছে। তনার গ্রন্থ “ক” এর ১৮৩ পাতায় তনা নিজেই এই প্রসঙ্গের সাথে সম্পর্কযুক্ত একটি কথা বলেছে। নির্ম্লেন্দু গুণ একসময় ডাকাত ছিলো। এবং ডাকাতি করত এবং একবার ডাকাতি করে মামলাও খেয়েছিলো। এই প্রসঙ্গে তনা বলে-

“নির্মলেন্দু গুনের চুরি ডাকাতি জুয়াখেলা এসব আমি পছন্দ না করলেও তাঁর স্বীকারোক্তি আমি পছন্দ করি” (পৃঃ১৮৩, “ক”)

তাহলে তনার ভাষ্যমতে কি দেখতে পাই? তনা সত্য স্বীকারোক্তি পছন্দ করে কিন্তু অপরাধ পছন্দ করে না। তার মানে কি? অপরাধ যে করেছে তার শাস্তি হওয়া চাই। ঠিক কি না? তাহলে সেই ক্ষেত্রে আমি যদি তনার করা নারী নির্যাতন, লেখা চুরি, নারীর সর্বনাশ কারী, ইত্যাদির জন্য তনার স্বীকারোক্তিকে এপ্রিশিয়েট করিও, সেই ক্ষেত্রে কি তনার করা অপরাধ গুলা ভালো হয়ে যায়?

আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, “ক” বইটার ১৯৮ পাতায় তনা পেষন কমিটির লিডারের সাথে আলাপ কালে তনা উল্লেখ করেছে,

“আমি তো জানি,আমি মেয়েদের পক্ষে লিখি,আমি তাদের সর্বনাশ করতে যাবো কেন?”

এই যে তনা উপরের এই কথাটা বলল, অথচ দেখেন-

১) বিবাহিত কায়সারের সাথে তার বউ হেনুর উনুরোধ উপেক্ষা করেও শোয়া

২) বিবাহিত ইমদাদুল হক মিলনের সাথে কাশ্মীরে গিয়ে শোয়া এবং সেই সময়ে মিলনের কাছ থেকে পাওয়া অবজ্ঞার পরেও একদিন মৌচাকের মোড়ে ইমদাদুল হক মিলনের সাথে দেখা হবার পর তার সাথে বাসায় এসে শুয়েছেন তিনি।তনা জানে যে মিলন তাকে ভালোবাসে না এবং মিলন বিবাহিত, তারপরেও তনা একবারের তিক্ত অভিজ্ঞতার পর আবার একি কাজ করলো। তনার ভাষায়, আমার সব টুকু রস সুষে নিলো মিলন।

“শরীরে মধু যেটুকু ছিলো সেটুকুই শুষে নিয়ে চলে গেলো মিলন”

৩)বিবাহিত নাইমের সাথে শোয়া

৪)রুদ্রের অন্য গার্ল ফ্রেন্ড থাকা অবস্থায়ও রুদ্রের সাথে শোয়া

৫) মিনার মাহমুদ অন্য এক ধনী নারীর সাথে প্রেম করছেন, সেই অবস্থাতেও মিনারের সাথে শুয়েছে।

উপরের ব্যাপারগুলিতে আমরা যা দেখতে পাই, এতে কি তনা ওই বিবাহিত পুরুষগুলোর স্ত্রীদের সাথে প্রতরণার একজন সহযোগী হচ্ছে না? আমি জাস্ট এই ব্যাপারটাই বিজ্ঞ পাঠকদের কাছে জানতে চাই। কিন্তু দেখেন, উপরে কিন্তু সে ঠিকি বলেছে যে সে নারীদের কোনো সর্বনাশ করে না। অথচ তনা নিজের মুখেই “ক” বইতে বলেছে-

“নারী হয়ে নারীর সর্বনাশ করছি”

তনার ভক্ত তমশো বলেছে-

“প্রেম করার আগে হেনুর কথাটা মনে করা আগে কায়সারের দায়িত্ব, পরে তসলিমার। অথচ “নারী হয়ে নারীর সর্বনাশ করছি” কথাটা তসলিমা নাসরিন নিজেই লিখেছেন। কেন? উনি কাউকে ঠকালে কেন লিখতে গেলেন?”

কায়সার অবশ্যই সবচাইতে বড় দোষী। বলার অপেক্ষাই রাখে না। আমি যদি ধরেও নেই, যে পুরুষরা তনার কাছে আসে এতে “তনা”র কি দোষ? কিন্তু তনার ক্ষেত্রে কে এই কথা খাটে? যেখানে পুরুষের করা এই ধরনের নির্যাতন নিয়ে তনা সোচ্চার, যেখানে তনা বলছেন যে “মেয়েদের অধিকার দিতে হবে” ইত্যাদি ইত্যাদি… সেখানে কি এটা নিজেকেই নিজে কন্ট্রাডিক্ট করা নয়?

আর তনা তো কায়সারকেও ঠকিয়েছে, দেখুন তনা “ক” বইয়ের ২৪৬ পৃষ্ঠায় লিখেছে,

“এটি যত না কায়সারের প্রয়োজনে, তার চেয়ে বেশী আমার নিজের প্রয়োজনে। কায়সার চুপসে থাকে প্রথম দিনে,আমার উথলিত উষ্ণ শরীরটির ওপর তার আশংকার আঙুল কাঁপে…………… আমার ছিলো শরীরের প্রয়োজন, তার ছিলো মনের”

শুধু নিজের দরকারেই একজন নারীর সর্বনাশ করলো তনা। এত এত মেয়েদের সেক্স টয় পাওয়া যায় বাজারে, এত এত পদ্ধতি আছে হস্ত মৈথুনের যেই কথাটি তনা তার কোনো এক কবিতাতে-ই বলেছিলেন (নাম মনে আসলে রেফারেন্স সহ দিব) সেখানে পুরুষের উপর ক্ষোভে টগবগ ও তেঁতে থাকা তনা কি করলো? তার গরম দেহটি ঠান্ডা করলো অন্যের সর্বনাশ করেই।

আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, নাঈমুল ইসলাম খান। তনার প্রাক্তন স্বামী। এই স্বামী রাজাকারের ছেলে। এই নাইমের অনেক অনেক খারাপ অভ্যাস আর খারাপ গুনের কথা আমরা তনার কাছেই জেনেছি।( “ক” বইয়ের ১১৪ থেকে ১২০ পৃষ্ঠা দেখুন)

সেই তনা তাহলে শুধু শারিরীরক চাহিদা মেটানোর জন্য কিভাবে একজন অতি খারাপ ও অতি বদ ও পৌরুষতন্ত্রের প্রতিভূ নাঈমের সাথে যৌণ সম্পর্ক করলো? যেই মোল্লাদের কথা তনা এত ঘৃণা সহকারে বলে, যেই মোল্লারা এত খারাপ, যেই রাজাকারদের তনা ঘৃণা করে সেই রাজাকারের ছেলে এত খারাপ এই কথা জানতে পেরেও কেন তনা নাঈমের সাথে সম্পর্ক করলো। এর উপরে আবার আছে নাঈম বিবাহিত। সদ্য এক মেয়েকে বিয়ে করেছে নাঈম। এইটা জানার পরেও কিভাবে তনা যৌন সম্পর্ক করলো?
তাহলে কি যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে-ই তনার আর আদর্শ কাজ করে না? একজন পাড় মোল্লা, যে কিনা তনার মুন্ডু চায়, তনার শরীর চাইলে সেই মোল্লার সাথেও তনা শারিরীক সম্পর্ক করতে পারে। আমার যুক্তি ভুল থাকলে প্লিজ ধরিয়ে দিবেন।

এই যে তনা শারিরীরক সম্পর্ক কে তনা এত সহজ ভাবে দেখছে ব্যাপারটা সত্য না। আপ্নারা “ক” বইটির ২০৬ পাতার শেষ থেকে শুরু করে ২০৭ পাতার প্রথম দিকের কয়েকটা লাইন পড়ুন। দেখুন সেখানে লেখা আছে,

যখন তনা শান্তি নিকেতনে রাতে ঘুমাচ্ছিলেন তখন রাতে তনার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভেঙ্গে তনা শুনতে পায় তাদের সহযাত্রী রেখা মৈত্র অন্য ঘরে কোনো এক পুরুষের সাথে সেক্স করছে।

এই ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তনা’র অনুভূতি কি দেখুন-

“বাকি রাত আমি আর ঘুমুতে পারিনা। কি অদ্ভুত রহস্যে মোড়া এই জগত”

যেই মানুষের কাছে যৌন সম্পর্ক কোনো ব্যাপার না, একটা নারী-পুরুষের সম্পর্ক হতেই পারে এমন মনোভাব লালন করে, সেখানে তার সহযাত্রী অন্য পুরুষের সাথে সেক্স করছে জানতে পেরে তনা রাতে ঘুমুতেই পারেন না।

পাঠক একটা ব্যাপার কি এই ঘটনা থেকে বুঝতে পারছেন? যে তনা শারিরীক সম্পর্ক্টা যে ভাবে সহজে পাঠকদের বিশ্বাস করাতে চায় বা বলতে চায়, এই ব্যাপারটা তনা নিজেই আসলে সহজ ভাবে নেয় না।

এর আগেও আমি আপনাদের ১ম ও ২০ পর্বে দেখিয়েছি যে আম্বিয়া খাতুন আর — সাহেবের যৌন স্মপর্কে কিভাবে ব্যাঙ্গ করে কপোত-কপোতির প্রেম এবং আম্বিয়া স্নো পাউডার লাগিয়ে আসেন, এই বলে ব্যাঙ্গ করেছেন। (আমার এই সিরিজের ১ম ও ২০ পর্ব দ্রষ্টব্য)

(২) এর উত্তর-

আমি ইউকে তে আপাতত একটি রিসার্চে যুক্ত আছি। ইন্টারনেট ও কম্পিউটার আমার ইউনি’র প্রথম রিকোয়ারমেন্ট। তাই আমার ল্যাপি ও ইন্টারনেট আমি বিক্রি করে দরিদ্রদের দিতে পারছি না। কারন এই নিজেকে আমি আগে তৈরী করতে চাই। তবেই না দেশের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারব। ঠিক না?এইটাতো গেলো এক পয়েন্ট। দুই নাম্বার হচ্ছে, যেখানে তনা নিজেই বলেন,

“ এরকম কি কেউ কখনো বলে যে, এবারের পুজোয় খরচের টাকাটা উন্মুল উদ্বাস্তু মানুষের জন্য ব্যয় করব। অথবা খরচ হতে যাচ্ছে যে কয়েক হাজার কোটি টাকা, সেই টাকা দুভাগ কি তিন ভাগ খরচ হবে অন্য খাতে। ইশকুলে পড়তে না পারা বালক-বালিকাদের লেখাপড়ায়! এবছর বাজি পোড়ানোর খাতে যে টাকা বরাদ্দ ছিলো, সে টাকাটা ছাই করে না দিয়ে বরং অন্য কিছু হোক”
(সুত্রঃতুই নিষিদ্ধ তুই কথা কইস না, পৃষ্ঠা-৫৮)

সেই সূত্র ধরেই বলেছি, এই অনুষ্ঠান করা ও উতসব করা যদি টাকার অপচয় হয়, তাহলে কোলকাতায় শুধু আসবে, এই কারণেই হাজার টকার নকশী কাঁথা আর জামদানী কেন কিনেন তনা? তিনি না নিজেই অর্থ সাশ্রয় করার কথা বলেন তার ওই একি বইতে? কেন তার এই কন্ট্রাডিক্টরী কথা-বার্তা?

আমার যুক্তিতে না পেরে আমাকে ঘায়েল করতে তনার ভক্ত আমাকে আমার কম্পিউটার আর ইন্টারনেট বিক্রি করার যেই পরামর্শ দিলো সেটা কতটা হাস্যকর দেশে বসে তমশো কি তা বুঝবে? এই দেশের হাট,বাট,বাজার,ঘর,অফিস,আদালত সব চলে নেটে। একবেলা ভাত না খেয়ে থাকা যায় কিন্তু একবেলা নেটে না বসে এই জীবনে টেকা দায়। এই সামান্য জ্ঞানটুকুও কি তনা ভক্তদের নেই?

(৩) নং এর উত্তর-

“নিষিদ্ধ মত, দ্বি-খন্ডিত পথ” গ্রন্থ টিতে তনা আমার করা প্রশ্নের জবাব দেয় নি। যদি দিয়ে থাকে তবে উদাহরণ সহ দেখান যে আমার কোন কোন প্রশ্ন বা ধরিয়ে দেয়া ভন্ডামীর উত্তর দিয়েছে।

আর আমার মত হাজার হাজার লেনিন হায়দারদের লেখা বলতে কি বোঝালেন আমি জানিনে। বাট, তনার ভন্ডামীর এই ভয়াবহ চিত্র এর আগে কে কে তুলে ধরেছেন আমি জানিনা। আমি কেবল তনার বই পড়ে আমার মতামতকেই ব্যাক্ত করেছি। সেসব বই দেখে কিছু লিখিনি। তার প্রশ্নও আসে না। এইটা আপনাকে এখন কি করে বোঝাই? যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই যে, আমি সেখান থেকে পড়ে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেছি তাতেও কি কিছু এসে যায়?

তনাকে ভন্ড আকাশ থেকে বা যুক্তিছাড়া দেখাই নি। খোদ তনার নিজের কথা থেকেই, নিজের বলা লেখা থেকেই ধরিয়ে দিয়েছি চোখে আঙুল দিয়ে। এটাতো পাঠকদের মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়। আমি যুক্তি আর তথ্য প্রমাণ ছাড়া তনাকে কোথায় অভুযুক্ত করেছি, একটু দেখাতে পারেন?

পারলে দেখান প্লিজ।

চলবে…

 

এই সিরিজটি বেশ আগ্রহ ভ’রে শুরু করেছিলাম। তবে সিরিজের পর্বগুলোতে অনাকাংখিত ভাটা পড়ে বিভিন্ন কারনে। এর পুরো কারনটা জুড়েই আছে কাজ ও অলসতা। তবে এই সিরিজ নিয়ে নাগরিক ব্লগের ও ব্লগের বাহিরে অনেক মানুষের প্রশংসা পেয়ে সিরিজটিকে আরো নিয়মিত লিখবার সাহস পেয়েছি। পাঠকরা অনেক মনোযোগ দিয়ে এই সিরিজের প্রতিটি পর্ব পড়েছে এবং ব্যাক্তিগত ভাবে অনেক কিছুই আরো ডিটেইল জানতে চেয়ে আমাকে লিখেছেন, ফোন করেছেন। তাদের তাগাদা পেয়েই ৫ম পর্ব লেখার জন্য আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠলাম। তবে অনাকাংখিত ভাবে এই সিরিজে বিভিন্ন সময়ে কিছু বুদ্ধিহীন,নির্বোধ ও মেরুদন্ডহীন অপাংক্তেইয় বাচ্চা কাচ্চাদের অহেতুক জ্বালাতনে সিরিজের শ্রী হানি ঘটেছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। যদিও নাগরিকব্লগ সেসব শ্রীহানিকর উপাদান শক্ত হাতে দমন করেছে অনেক আগেই, তবুও বেশ কিছুদিন লেখা হয়নি এই বিষয়ে। পাঠক প্রিয়তা ও অনুরোধের প্রেক্ষিতে আজ এই সিরিজের ৫ম পর্ব লিখলাম। আশা করি তসলিমা নাসরিনের ভন্ডামির আরো নানাবিধ চাল-চিত্র প্রমাণসহ এ পর্বে দেখবার ফুরসত পাবেন।

আজকের পর্বটি শুরু করি একটা মজার ও অবাক হবার মত তথ্য দিয়ে। তসলিমা নাসরিনের(তনা) “ক” বইটার ৩০৬ ও ৩০৭ পাতা ঘেটে জানতে পারলাম, তনার ইন্টারভিউ নেবার জন্য কলকাতার আজকাল পত্রিকার সাংবাদিক বাহারুদ্দিন এসেছিলেন তনার সাক্ষাতকার নেবার জন্য। অনেক প্রশ্নের মধ্যে তনাকে তিনি একটি প্রশ্ন করেছিলেন-

-বিপদ এলে দেশ ছেড়ে পালাবেন, অন্য কোনো দেশে আশ্রয় খুঁজবেন?

তনা উত্তরে কি বলেছিলো শোনেন-

-আমি কি কম বিপদের মধ্যে আছি? যত বিপদই আসুক, আমি কখনো দেশ ছেড়ে পালাবো না।

অথচ তিনি কয়েকজন হুজুরের মিছিল দেখে দেশ ছেড়ে পালালেন। কত বড় মিথ্যুক ও ভন্ড, চিন্তা করে দেখেন!!!

এখন বাংলাদেশের শাষন ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ। তনার উপর কোনো মামলাও নেই। হুজুররাও এখন আছে বেকাদায়। কিন্তু দেখেন, তারপরেও তনা দেশে ফিরবে না। বিদেশের মধু, সুখ, ইত্যাদি ছেড়ে কি তনা আসবে?

আচ্ছা, পালালেন তো বটেই। এরপর যারা যারা তাকে দেশে আশ্রয় দিয়েছে, বিদেশের মাটিতে আশ্রয় দিয়েছে, তাকে নিরাপত্তা দিয়েছে সবার বিরুদ্ধেই তনা লিখেছে। একটা আশ্চর্যজনক জিনিস লক্ষ্য করলাম তনার সব লেখার মধ্যেই, এই পর্যন্ত যত মানুষ তনাকে আশ্রয় ও সাহায্য করেছে, একটা সময় এসে দেখা গেলো তাদের বিরুদ্ধেই তনা লিখেছে। গালাগাল করেছে এবং কোনো এক কারনে তনা এদের সবার নামেই অনেক কিছুই লিখেছে যার কোনো প্রমাণ নেই। সব এক তরফা।

একটা উদাহরণ দেই,

তনা যখন দেশ থেকে খামাখাই পালিয়ে সুইডেনে আসেন, তখন তাকে মূলত সুইডেনে এনেছিলো “পেন” নামক একটি সুইডিশ লেখক সংস্থা। যারা আমাদের হুমায়ুন আজাদকেও জার্মানীতে এনেছিলো। এই পেন এর প্রধান মিঃগ্যাবি সব সময় তনার নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাস্ত ছিলো। সুইডেনের টাকায় নিরাপত্তা রক্ষী, বাসার খরচ, খাবার খরচ, চলার খরচ সবই চালানো হতো। কিন্তু “আমি ভালো নেই স্বদেশ, তুমি ভালো থেকে” নামক তনার বইয়ের শুরু থেকেই আছে এই পেন ও তার প্রধান মিঃ গ্যাবি সম্পর্কে সব অপঃপ্রচার।

গ্যাবি তনাকে ব্যাবহার করেছে কুমিরের বাচ্চার মত, বিক্রি করছে, মুলামুলি করছে, ইত্যাদি সব নিম্নরুচির কথা বলে পুরো বইয়ের প্রথম ভাগ ভরিয়ে রেখেছে। কয়েকটি নমুনা দেই-


আবার এখানেই শেষ নয়। দেশ থেকে একজন ব্যাক্তি তনার সাথে তনাকে সাহায্য করতে দেশে তার সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে এসেছিলো। সেই লোকটির প্রতিও তার এই হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলো তনা। পরে এই কথা বলে আবার নাকি কান্না কেঁদে পাঠকদের সামনে ভালো মানুষ হবার চেষ্টাও করেছে এই ধূর্ত মহিলা। নীচে শুধু নমুনা গুলো দেখুন-

শুধু এখানেই তনার মনের ভেতরের এই পঙ্কিলতাতেই তনা নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেনি। তার প্রতিটি বই এসবের প্রমাণ। এই পর্যন্ত তনার যতগুলো বই বেরিয়েছে সব গুলোর ভেতরে কেবল অভিযোগ আর অভিযোগ। তার চোখে এই পৃথিবীতে কেউ ভালো না। সবাই খারাপ। সবারই কিছু না কিছু একটা দোষ সে বের করেছে এবং বইয়ে তা তুলে দিয়েছে কোনো প্রমাণ ছাড়াই।

দেখুন, হেলাল হাফিজ নাকি তার প্রেমে পড়েছিলো। যদিও ব্যাপারটি মিথ্যে। এই প্রেমে পড়া নিয়ে তনা তার “ক” বইটার অনেকগুলো পাতাই লিখেছে এই হেলাল হাফিজকে নিয়ে। একজন শ্রদ্ধেয় কবিকে করেছে অপমান মানুষের কাছে। আচ্ছা, যদি হেলাল হাফিজ তনার প্রেমে হাবুডুবুই খেয়েছেন ধরে নিলাম। কিন্তু এই ব্যাপারটাকে নিয়ে এত ব্যাঙ্গ করে লিখবে কেন তনা? ( পৃষ্ঠা ৬১-৬৫)

” তুই নিষিদ্ধ, তুই কথা কইস না” বইটার বইয়ের ৫৪ নাম্বার পাতায়, কেননা “পুজো কি,পুজো কেন” এই রচনাটির শুরুতেই তনা নিজেকে জাহির করতে গিয়ে বলেছেন,

“আমি ধর্মহীন মানুষ। যুক্তিবাদে,মুক্তিবাদে বিশ্বাসী। বিশ্বাসী লৌকিকে,ইহলৌকিকে,সাম্যবাদে,মনুষ্যবাদে,বিবাদ-বিতন্ডায়, বৈষম্যের প্রতিবাদে”

একজন মানুষের প্রেমে পড়া নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা তাহলে মনুষ্যত্বের মধ্যে পড়ে???

নিজের আপ্ন ভাবীকে নিয়েও মেয়েসুলবভ কুটনামী করতে ছাড়ে নাই তনা। আসলে যতই নারীবাদী লেখক হবার চেষ্টা করুক তনা, তাতে লাভ কি? নিজের ভেতরের নীচুত্ব তো আর এত সহজে যায় না। তনার গারবেজ বই “ক” তে ২৫ পাতায় “জীবনগুলো” নামে রচনায় তার ভাবী গীতাকে নিয়ে ইচ্ছা মত লিখে গিয়েছে। সব একপক্ষীয়। কোনো প্রমাণ নেই, কিচ্ছু নেই। এই ধরনের লেখা লিখি একজন ব্যাক্তিকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করে তোলে। এটা কত বড় অপরাধ তা কি তনা জানে? অবশ্য জানবেই বা কিভাবে, যেই মহিলা বলে “অক্সফোর্ড থেকে ব্যারিস্টারি পড়ে এসেছে” তার কাছে আর কি বা আশা করতে পারি আমরা??

আবার দেখুন তার ভন্ডামীর আরো ভয়ানক চালচিত্র-

উতসব,আচার, অর্থকড়ি অপচয় এসব বিষয় নিয়ে তনা আপার কয়েকটা কথা আর তার নিজের কথারই বিভক্তি আমাকে ভাবালো খুব। “তুই নিষিদ্ধ, তুই কথা কইস না” গ্রন্থের ৫৮ নং পৃষ্ঠায় তনা বলেছেন,

“ এরকম কি কেউ কখনো বলে যে, এবারের পুজোয় খরচের টাকাটা উন্মুল উদ্বাস্তু মানুষের জন্য ব্যয় করব। অথবা খরচ হতে যাচ্ছে যে কয়েক হাজার কোটি টাকা, সেই টাকা দুভাগ কি তিন ভাগ খরচ হবে অন্য খাতে। ইশকুলে পড়তে না পারা বালক-বালিকাদের লেখাপড়ায়! এবছর বাজি পোড়ানোর খাতে যে টাকা বরাদ্দ ছিলো, সে টাকাটা ছাই করে না দিয়ে বরং অন্য কিছু হোক”

এই টাকা বাঁচানোওয়ালী, দরিদ্রদের দুঃখে হতাশ হওনেআলী কলকাতায় এসে পাঁচতলার ফ্ল্যাটে থাকে। (সূত্রঃ তুই নিষিদ্ধ বইয়ের ৫৬ পৃষ্ঠা)।

আবার “তুই নিষিদ্ধ, তুই কথা কইস না” গ্রন্থের প্রথম রচনা “বন্দী আমি” তে আমরা দেখতে পাই, কলকাতা যাওয়ার আনন্দে তস্লিমা টানা ১ সপ্তাহ ধরে প্রিয় প্রিয় মানুষের জন্য শপিং করেছেন, নকি কিনেছেন তিনি? আসুন দেখি-

১) জামদানি শাড়ি
২) আদ্দির পাঞ্জাবী
৩)বই
৪)শুটকি মাছ
৫)মুক্তা গাছার মন্ডা
৬)নকশি কাঁথা
৭) আমের আচার

অথচ তনার বই খুল্লেই খালি বলে বৈষম্যহীনতার কথা, মানুষের কথা। তিনি তার উপরে উল্লেখিত বক্তব্যে কি বড় বড় লেকচারটাই না দিলেন উতসবে কেন মানুষ এত অর্থ নষ্ট করে , এই কথা বলে, কিন্তু দেখেন, কিছু কিনতে যাবার সময় আবার তনা আপা তালে ঠিক। কিনছেন তাদের জন্য যাদের আছে অন্ততঃ পক্ষে কিছুটা হলেও।

কলকাতার একজন দরিদ্র মানুষের জন্যেও কি তনা কিছু কিনেছিলো??? প্রশ্ন থেকে গেলো তনার কাছে।

এভাবেই তনা মানুষকে তার ফনা দিয়ে ছোবল দিয়ে বেড়ায় ও ভন্ডামী করে বেড়ায়। এই পর্যন্ত যত মানুষ তার উপকার করেছে সবাইকে সে ন্যাংটা করে ছেড়েছে তার মিথ্যা গল্প দিয়ে। এজন্যই তনাকে কেউ পছন্দ করে না এবং দেখতে পারে না। এই জন্যই তনার কোনো বন্ধু নেই। বান্ধব নেই। এই জন্যই বিভিন্ন নিক খুলে তনা নিজেই ব্লগে, ফেসবুকে নিজের প্রসংসা করে যায়। প্রমাণের জন্য তার হারাম টাকার বিনিময়ে দেশে একজন চামচিকে কে মোবাইল ফোন দিয়ে বসিয়ে রাখে। কিন্তু বুদ্ধিমান মানুষ মাত্রই তনাকে চিনে ফেলে।

 

লেখক : লেনিন হায়দার – নাগরিক ব্লগ