এই ভোটেও কি দলের কথা কইবো….!

হুনছি (শুনেছি) কয় দিন পরই নাকি ভোট, এই ভোটেও (নির্বাচনে) কি দলের কথা কইবো? প্রশ্ন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউপির উত্তর রমজানপুর গ্রামের ছলিমুদ্দিন খাঁর। একই এলাকার কবির খাঁ, রহিম খাঁ ও হাবিল সরদার বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইরা মোগো (আমাদের) কথা পত্রিকায় লেইখা নির্বাচন কমিশনকে জানাই দেন, মোরা (আমরা) এহনকার ভোটে (ইউনিয়ন পরিষদ) দলের কথা হুইনা বিপদে পড়তে চাইনা, দল ও প্রার্থী নিয়ে দুশ্চিন্তা করলে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাইমু না, মোরা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই’। আলীনগর ইউপির মীরাকান্দি গ্রামের ভোটার শাহাদাত হাওলাদার বলেন, ‘রাজার ভোট (জাতীয় নির্বাচন) ছাড়া আবার আওয়ামীলীগ-বিএনপি কিসের? দলের নাম বলে বিভ্রান্তি ছড়ালে লাভ হবে না’। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম প্রচারণার খোঁজ-খবর নিতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কথা হয় এসব ভোটারদের সাথে। একাধিক ভোটার জানান, ‘হঠাৎ করেই প্রার্থীদের আচার-আচারণের পরিবর্তন হয়ে গেছে। দুর থেকে কেউ এ এলাকায় এলেও বলতে পারবে কে প্রার্থী হচ্ছে। তবে দিন পাল্টে গেছে। দু’চার দিনের ভালোর দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না। বিগত দিনের কর্মকান্ডের ফলাফলই ভোটের হিসেব-নিকাশে ফুটে উঠবে বলে তারা মত প্রকাশ করেছেন এবং যোগ্যতা প্রমান করতে কেউ যাতে দলের নাম ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে তারা দাবী জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসন্ন হওয়ায়  ইতোমধ্যেই উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৫শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রার্থীরা যে যার মতো করে কৌশলে ভোটারদের মন যোগাতে উন্নয়নমূলক কাজে অংশ গ্রহন, মসজিদ-মন্দির ও দারিদ্রদের সহায়তা এবং সমাজ পরিবর্তনের রুপরেখা তুলে ধরাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের প্রতিশ্র“তি দেয়া শুরু করে দিয়েছেন। ভোটারদের সাথে আচার-ব্যাবহারও করছেন শিশু শুলুভ।

কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষার্থী ও সাহেবরামপুর এলাকার ভোটার রাসেল বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্থানীয়ভাবেই থাকা উচিত, এ নিয়ে সরকারী দল ও বিরোধী দলের তর্ক-বিতর্কের দৌড়-ঝাপ না করাই ভালো। যোগ্য প্রার্থীরাই এ নির্বাচনে বিজয়ী হবে, কোনো দলের সমর্থণ নিয়ে না’। কয়ারিয় ইউনিয়নের এক আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, ‘দলকে ভালোবাসি বলেই কি এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও দলকে ভোট দিবো! নির্বাচন আইলেই কতিপয় ব্যক্তিরা এলাকায় হাজির হয়, টাকার জোড়ে দলীয় সমর্থণ নিয়ে আসে, নির্বাচন গেলে আর খবর থাকে না। এদের দিন শেষ। দলীয় সমর্থণ প্রার্থীরা চাইলেও ভোটাররা সম্পূর্ণ বিপরীত’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি’র এক ইউনিয়নের সভাপতি বলেন, ‘দল তো আমরাই করি, আমরাও চাই যে যার যোগ্যতায় নির্বাচিত হউক, এ নির্বাচনে যাতে পৌরসভা নির্বাচনের মত দল নিয়ে বাড়াবাড়ি না হয় সে প্রত্যাশাই সকলে করছে’।