গৌরনদীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে শাশুড়ি

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার দুপুরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত শাহজিরা গ্রামে। মুর্মুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা অগ্নিদগ্ধা গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন বিকেলে অগ্নিদগ্ধা গৃহবধূকে ঢাকায় প্রেরন করা হয়।

অগ্নিদগ্ধা গৃহবধূ পারুল বেগমের (২০) পিতা একই গ্রামের শারিরিক প্রতিবন্ধী মোতালেব মুন্সী জানান, গত একবছর পূর্বে শাহজিরা গ্রামের মৃত সাত্তার ফকিরের পুত্র আল-অমিন ফকিরের সাথে তার কন্যা পারুল বেগমের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবিকৃত যৌতুকের ৩৫ টাকা পরিশোধ করা হয়। বিয়ের পরবর্তী সময়ে পূর্ণরায় যৌতুকলোভী আল-আমিন ও তার পরিবারের লোকজন তার (মোতালেবের) কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা যৌতুক আনার জন্য পারুলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। তাদের দাবিকৃত যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকার করায় প্রায়ই পারুলকে শারিরিক নির্যাতন করা হতো। সম্প্রতি নির্যাতনের একপর্যায়ে পারুলকে তার (মোতালেবের) বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এনিয়ে অতিসম্প্রতি গ্রাম্য সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তনুযায়ী পারুলকে তার স্বামী আল-আমিনের বাড়িতে দিয়ে আসা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে পূর্ণরায় যৌতুকের টাকার জন্য আল-আমিনের মা মনোয়ারা বেগম পারুলকে শারিরিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে পারুল জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় যৌতুকলোভী মনোয়ারা বেগম পুড়িয়ে মারার জন্য পারুলের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পারুলের ডাকচিৎকারে পাশ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে মুর্মুর্ষ অবস্থায় তাকে (পারুলকে) উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন বিকেলে এ্যাম্বুলেন্সযোগে অগ্নিদগ্ধা পারুল বেগমকে ঢাকা হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক বলেও মোতালেব মুন্সী উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে শাহজিরা গ্রামের ইউপি সদস্য ও গ্রাম্য সালিশদ্বার বাদশা মীরার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পাওয়ার ট্রিলার চালিয়েই চলছে আল-আমিনের সংসার। এলাকায় আল-আমিন একজন ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত। তবে তার মা মনোয়ারা বেগম কারনে অকারনে পারুলকে শারিরিক নির্যাতন করতো বলেও তিনি উল্লেখ করেন।