নিহত গৃহবধূর দাফন সম্পন্ন এলাকায় শোকের ছায়া ॥ ফাঁসির দাবি

লাশের ময়না তদন্ত শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। বিকেল সাড়ে তিনটায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ গ্রহন করেন নিহত গৃহবধূর চাচাতো ভাই শহিদুল ইসলাম টুকু। Stop Women Violanceওইদিন বিকেল চারটায় এ্যাম্বুলেন্সযোগে নিহত পারুল বেগমের লাশ তার পৈত্রিক বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এসময় তার (পারুলের) নিকট আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকার আকাশ-বাতাস ভাড়ি হয়ে ওঠে। ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটায় পারিবারিক গোরস্তানে পারুলের লাশ দাফন করা হয়। অপরদিকে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে মামলার সকল আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি করেছেন গৌরনদীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উন্নয়ন প্রচেষ্ঠা, ব্র্যাকের মানবাধিকার সংগঠন ও গৌরনদী ডট কমের নেতৃবৃন্দরা। পুলিশ মামলার মূলহোতা নিহত পারুল বেগমের শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল আদালতে প্রেরন করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে উপজেলার পূর্ব শাহজিরা গ্রামে গত ৬ ফেব্রয়ারি (রবিবার) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম কর্তৃক গৃহবধূ পারুল বেগমের (২০) ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে পারুল জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় মরে যাওয়ার আতংকে মনোয়ারা নির্যাতনের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য পারুলের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনের তাপে পারুল জ্ঞান ফিরে পেয়ে ডাকচিৎকার শুরু করেন। পাশ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে মুর্মুর্ষ অবস্থায় পারুলকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন (রবিবার) বিকেলে এ্যাম্বুলেন্সযোগে অগ্নিদগ্ধা পারুল বেগমকে ঢাকার সোহয়ার্দী হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুর সাড়ে এগারোটার দিকে অগ্নিদগ্ধা পারুল মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।   

এ ঘটনায় ওইদিন (সোমবার) রাতে নিহত পারুলের পিতা পশ্চিম শাহজিরা গ্রামের শারিরিক প্রতিবন্ধী মোতালেব মুন্সী বাদি হয়ে ৬ জনকে আসমামি করে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে নিহত পারুলের স্বামী আল আমিন ফকির, তার মা মনোয়ারা বেগম, বোন পারুল আক্তার, বোন জামাতা সেকান্দার আলী মোল্লা, ভাবী কলি বেগম ও চাচা আনোয়ার ফকির। পুলিশ ওইদিন রাতেই ঘটনার মুলহোতা নিহত পারুলের শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করে।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম-পিপিএম বলেন, পারুলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরার সাথে সাথেই অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপন করে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের জোর প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।