ওই পল্লীর হাসেম খলিফা (৫৭) জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি তাল পাতা দিয়ে পাখা বানানোর কাজ করছেন। তার পরিবারের সদস্যদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফলে তিনি এখনো এ পেশায় টিকে আছেন। সিডর ও আইলায় পাখা তৈরির প্রধান উপকরন তাল পাতা বিনষ্ট হওয়ায় পর থেকেই তাদের উপকরন সংকটে পড়তে হয়। গৌরনদীসহ পাশ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অধিক মূল্যে তালপাতা ও বাঁশ ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। বছরের নয় মাসই তারা এ কাজ করে থাকেন। হাসেমের পরিবারের সাত সদস্য এ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে।
তার কন্যা সিমু আক্তার নবম ও কাজল অষ্টম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। স্কুল থেকে ফিরেই বাবার সাথে একত্রিত ভাবে পাখা বানানোর কাজ করছে। একমাত্র আয়ের উৎস হাত পাখা বানিয়েই রোগাক্রান্ত হাসেমের সাত সদস্যর সংসার চলে। তার পরিবারের সকলে মিলে একদিন এক’শ পিচ করে পাখা তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি পাখা তৈরি করতে তাদের খরচ হয় দু’টাকা আর পাইকারি হিসেবে বিক্রি করা হয় তিন টাকায়।
ওই পল্লীর আরেক হস্ত শিল্পী কাসেম খলিফা জানান, সপ্তাহে একদিন পাইকার এসে বাড়ি বাড়ি থেকে হাত পাখা ক্রয় করে নিয়ে যায়। পাখা তৈরি করাই হচ্ছে তাদের পল্লীর প্রধান আয়ের উৎস। তাল পাতা দিয়ে তৈরি তাদের হাত পাখা বিক্রি হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন মেলা, হাট-বাজার, বাসষ্ঠ্যান্ডসহ বিভিন্ন দোকানে। তিনি আরো জানান, উপকরনের মূল্য বৃদ্ধির পর অর্থাভাবে এ পেশার সাথে জড়িত আরো প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার পেশা পরিবর্তন করেছে। বাকি পরিবারগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হলে সহজ শর্তে সূদ মুক্ত ঋণ দেয়ার জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তেক্ষেপ কামনা করেছেন। একই ভাবে জানান, ওই পল্লীর হস্তশিল্পী আবুল হোসেন, শাহজাহান খলিফা, স্বপন খলিফাসহ একাধিক ব্যক্তি।