গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় রাজনীতির দুয়ার সবার জন্যে সমানভাবে খোলা থাকে এবং এ খোলা পথে যে কেউ প্রবেশ করার অধিকার রাখে। এ অর্থে তারেক জিয়া ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে প্রবেশ উল্লেখ করার মত কোন ঘটনা হওয়ার কথা ছিলনা। কিন্তু বাস্তবতা হল এরা শুধু রাজনীতিতে ই প্রবেশ করেনি, বরং প্রবেশ করেছে ক্ষমতার রাজনীতিতে। গত ৩৯ বছর ধরে দেশীয় রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য চরিত্র ব্যরিস্টার মওদুদের মত ব্যক্তিরা যখন সেমিনার বসে তারেক জিয়াকে হীরার টুকরা হিসাবে আখ্যায়িত করতে বাধ্য হন আমার মত ম্যাংগো পিপলদের ধরে নিতে হবে গোলমাল হচ্ছে কোথাও।
এবার আসুন গোলমালের দিকে চোখ ফেরানোর চেষ্টা করি। ঢাকার ৬৭ নং পুরানা পলটন লাইনে রাজপ্রাসাদের মত বিশালকায় একটা বাড়ি। ৫ কোটি টাকা নগদ মূল্যে ক্ষমতা হারানোর মাত্র ক’মাস আগে ক্রয় করে নেন দেশীয় রাজনীতির কথিত হীরার টুকরা তারেক জিয়া। এই সেই তারেক জিয়া যার পিতা জেনারেল জিয়ার মৃত্যুর পর জিয়া পরিবারের সততা আর অসহায়ত্বের হূদয় বিদারক কাহিনী প্রচার করে জাতিকে চোখের পানিতে ভাসানো হয়েছিল। হতে পারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি বিরোধী প্লাটফর্ম মিথ্যাচার করছে তারেক জিয়ার সততা নিয়ে, কিন্তু এই লেখক চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রমান করবে উল্লেখিত বাড়ি ক্রয়ে ক’বছর আগের এতিম জিয়া পরিবারের সংশ্লিষ্টতা। রাজনীতিতে কি এমন গুপ্তধন লুকানো থাকে যা দিয়ে এতিম হতে কোটিপতি বনতে এক দশক সময়ও অপেক্ষা করতে হয়না? চুরি? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রাজনীতিবিদ নামের একদল প্রফেশনাল চোর তাদের চুরির সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার নতুন ধান্ধা হিসাবে বেছে নিয়েছে তারেক জিয়া নামের নতুন পীর। ভণ্ড পীরের ভণ্ড মুরীদ্দের মুখেই হীরা উপমা শোভা পায়, এতে অবাক হওয়ার বিশেষ কিছু নেই।
মার্কিন দেশে বসবাসরত আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের পাবলিক রেকর্ডও এমন কোন সার্টিফিকেট দেবেনা, যা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইমাম মেহেদী হিসাবে আবির্ভূত হওয়া যাবে। প্রোব রিপোর্টের মতেঃ
– ১৪ই জুন, ১৯৯৮ সালে জয়কে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের টারান্ট কাউন্টিতে গ্রেফতার করা হয় বিনা লাইসেন্সের হ্যান্ডগান ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্যে। শাস্তি হিসাবে তাকে ১২০ দিনের জেল, ২৪ মাসের প্রবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানা করা হয়।
– ৬ই ফেব্রুয়ারী, ২০০০ সালে জয়কে পুলিশ গ্রেফতার করে অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালানোর জন্যে।
– মার্চ ১৯, ২০০০ সালে জয়কে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে গ্রেফতার করা হয় মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্যে। তাকে ৩০ দিনের সাসপেন্ডেড জেল, ১২ মাসের প্রবেশন এবং ৪০০ ডলার জরিমানা করা হয়।
মা শেখ হাসিনার প্রথম টার্মে জনাব জয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াজেদ কনসালটিং ও সিম গ্লোবাল সার্ভিস নামে দুটি কোম্পানী খুলে ছিলেন, যেগুলোর বাৎসরিক টার্নওভার ছিল যথাক্রমে ৬১,০০০ ও ৩৫,০০০ ডলার। এই ব্যবসাকে সাইনবোর্ড বানিয়ে এই ’বিজ্ঞানী’ ভার্জিনিয়ার ফলস্ চার্চের ৩৮১৭ বেল মেনর কোর্ট রোডে ১ মিলিয়ন ডলার দিয়ে নিজের নামে সম্পূর্ণ নতুন একটা বাড়ি ক্রয় করেন। এ ছাড়া একই এলাকার ৪৮২৫ মার্টিন ষ্ট্রীটে ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার মূল্যে আরও একটি বাড়ি ক্রয় করেন স্ত্রীর সাথে যৌথনামে।
মার্কিন দেশে মাতাল হয়ে গাড়ি চালানো এবং ছিঁচকে অপরাধে শর্ট টার্ম জেল ও জরিমানা বিশাল কোন অপরাধ নয়। এগুলো মদ ও যৌনাচার আক্রান্ত টিপিক্যাল মার্কিনি চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জয় ওয়াজেদ মাতালামীর কারণে মার্কিন জেলে গেলে বাংলাদেশ রসাতলে যাবে এমনটা ভাবার নিশ্চয় কোন কারণ নেই। কিন্তু একই জয়’এর বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবেশ নিয়ে যারা আনন্দ জোয়ারে ভেসে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন উপরের তথ্য গুলো তাদের জানা থাকলে বোধহয় ভাল হবে।
১৫০ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশকে পরিচালনা করতে যদি তারেক জিয়ার মত প্রফেশনাল চোর আর ওয়াজেদ জয়ের মত লম্পট যুবকদের আমদানি করতে হয় তা হলে আমরা ধরে নিতে পারি গোটা একবিংশ শতাব্দী জুড়েই বাংলাদেশ বিশ্ব চুরি ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রতিযোগীতায় চ্যাম্পিয়ন হতে বাধ্য থাকবে।
Source : AmiBangladeshi.OrG