ধ্বংসের পথে আগৈলঝাড়ার তাজমহল

কীর্তিটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ ধ্বংসের পথে। মোঘল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তমা মমতাজের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য অপূর্ব শৈল্পিক নিদর্শন আগ্রার তাজমহল নির্মাণ করে স্মৃতিকে বুকে আগলে রাখেন। ঠিক তার মত পূর্ব পুরুষদের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল¬শ্রী গ্রামের তালুকদার ডা. শরৎ চন্দ্র দাশগুপ্ত বিপুল অর্থব্যয়ে ১৯৪১ সালে বাংলা (১৩৪৭) নিজ বসতবাড়ির সামনে আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে ৭ স্তম্ভ বিশিষ্ট একটি স্মৃতিসৌধটি  নির্মাণ করেন। বাবাও মায়ের নামে এটির নামকরণ করা হয় “কালীতারা নিত্যানন্দ স্মৃতি মন্দির”। এলাকার লোকজনের কাছে এটি ‘‘তালুকদার বাড়ির তাজমহল’’ নামে পরিচিতি পায়। স্মৃতিসৌধের প্রতিটি স্তম্ভে অপরাপর বংশধরদের নাম খোদাই করে লেখা রয়েছে। চারিদিকে ৪টি সুউচ্চ মিনার ও উপরিভাগের বৃহত্তর মিনারটির সংগে তাজমহলের হুবহু সাদৃশ্য রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যযে, এই স্মৃতিসৌধের নির্মাতার মৃত্যুর পরে তার জমিজমা নানাভাবে বেহাত হয়ে যায়। বর্তমানে জনৈক নিমাই ডাক্তার বসবাস করছেন ওই বাড়িতে। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে স্মৃতিসৌধের ভগ্নদশা দেখা গেছে। এছাড়াও চারপাশে গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনা রয়েছে। এর মধ্যে খরকুটা রেখে কদাচার করা হয়েছে। কয়েকটি স্তম্ভে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বছর দু’এক আগে স্মৃতিসৌধের অভ্যন্তরে রাখা পানবরজের পরিত্যক্ত  মালামালে কে বা কারা অগ্নিসংযোগ করলে এই ফাঁটলের সৃষ্টি হয়। এই প্রাচীন কীর্তিটির দ্রুত সংস্কার করা না হলে অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে পুরাতন কীর্তিগুলি সরকারীভাবে কোন সংস্কার না করায় তা ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এব্যাপারে পুরাকীর্তি বিভাগ আজও কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানাগেছে। তাজমহল ছাড়াও বাগধা ও গৈলায় অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। যা সংস্কার করলে পর্যটক, ভ্রমণপিয়াসী, পুরাকীর্তি গবেষকদের মনে সাড়া যোগানোসহ অনেক অজানা ইতিহাস উদ্ধার হতে পারে। সরকার পেতে পারে প্রচুর রাজস্ব।