শহীদ কর্ণেলের পুত্রের আর্তনাত আব্বুর খুনীদের ফাঁসি চাই

-আবেগআপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলো পিলখানা ট্রাজেডিতে নিহত শহীদ কর্ণেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপলের স্কুল পড়ুয়া পুত্র নিলয় (১৫)। 

বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানদের হিংস্রতায় নিহত হয়েছিলেন ময়মনসিংহের বিডিআর সেক্টর কমান্ডার ও বরিশালের আগৈলঝাড়ার কৃতি সন্তান কর্নেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপল। পিলখানা ট্রাজেডির তিন বছর পরেও কান্না থামেনি কর্ণেল জাহিদের পরিবারের। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শহীদ কর্ণেল জাহিদের বৃদ্ধা মা জহুরা বেগম পুত্রের কথা ভেবে এখনো প্রায়ই সংজ্ঞাহীন হয়ে পরেন। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার চাঁত্রিশিরা গ্রামের মৃত কাসেম মিয়ার ৪ পুত্রের মধ্যে কর্ণেল বি.এম জাহিদ হোসেন চপল ছিলেন সবার ছোট। তাই তিনি (জাহিদ) ছিলেন পরিবারের সবার আদুরের। ১৯৮২ সালে কমিশনার পদে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। পিলখানা ট্রাজেডির মাত্র দু’মাস পূর্বে যশোর সেনানিবাস থেকে কর্নেল জাহিদ ময়মনসিংহ বিডিআর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যোগদান করেন। তার স্ত্রী নিশরাত হক ছন্দাসহ দু’পুত্র নিলয় ও নিরঝর থাকেন ঢাকার উত্তরার একটি ভাড়াটিয়া বাসায়। শহীদ কর্ণেল জাহিদের ছোট বোন আফরোজা সুলতানা রানী বলেন, BDRবিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানদের গুলিতে নিহত হওয়ার একদিন পর ঢাকার নবাবগঞ্জের ভেড়িবাঁধ এলাকা থেকে আমি প্রথম ভাইয়ার (জাহিদের) লাশ সনাক্ত করি।

শহীদ কর্ণেল বি.এম জাহিদ হোসেনের স্ত্রী নিশরাত হক ছন্দার সাথে আলাপকালে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, দেশকে আমি খুব ভালবাসি। আর ভালবাসি বলেই মনের টানে যারা দেশের জন্য একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করবে সেই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বি.এম জাহিদ হোসেনকে বিয়ে করেছিলাম। এইকি ভালবাসার প্রতিদান…! বলেই আবারো কান্নায় ভেঙ্গে পরেন নিশরাত হক ছন্দা। ক্ষোভের সাথে তিনি বলেন, আমার স্বামী ঘাতকদের হাতে নিহত হবার পর অনেকেই অনেক কিছুর আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু কেহই আমাদের খোঁজ রাখেননি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শুধু পেনশনের টাকা পেয়েছি। দু’সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে আমি এখন রিতীমতো চিন্তিত। তার পরেও তিনি বলেন, যারা আমাকে করেছে বিধবা আর সন্তানদের করেছে পিতৃহারা। সেইসব ঘাতকদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। ওইসব খুনীদের ফাঁসির রায় কার্যকর না করা পর্যন্ত জাতি কলংঙ্ক মুক্ত হবেনা বলেও তিনি উল্লেখ করেন।