কম্পিউটার শিক্ষার বেহাল দশা অধিকাংশ বেসরকারী স্কুল-কলেজে

Computerকম্পিউটরসহ যাবতীয় সরঞ্জামসহ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকা সত্বেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে শিক্ষার্থী বিহীন, কোথাও কোথাও নামেমাত্র শিক্ষার্থী রয়েছে। নিয়োগবিধি অনুযায়ী নূন্যতম শিক্ষার্থী নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ বিধি লংঘন করে কম্পিউটর শাখায় দক্ষতাবিহীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় মুখ থুবরে পড়েছে কম্পিউটর শিক্ষার। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার আজ অকেজো হয়ে যাচ্ছে। গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র।

সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা অধিদপ্তর, কম্পিউটর কাউন্সিল, জনতা ব্যাংক, ব্যক্তিগত অনুদান ও সংস্থার পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে উপজেলার ৩৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৪৩ টি কম্পিউটার সরবারহ করা হয়। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার কোর্স চালু না হওয়ায় ইতিমধ্যে প্রায় ৪৪টি কম্পিউাটর অকেজো হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় কম্পিউটার শিক্ষায় অদক্ষ ব্যক্তিComputerদের নিয়োগ দেয়ার কারনেই গৌরনদীতে এ কার্যক্রম মুখ থুবরে পরেছে। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভূয়া (জাল) সনদপত্র জমা দিয়ে কতিপয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানান, কম্পিউটার শিক্ষায় তাদের কোন পাঠদান করানো হয় না।

গৌরনদী গালর্স হাইস্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে জানা গেছে, এ কলেজে ১২টি কম্পিউটার রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি অকেজো। এখানে কলেজ শাখায় ২০০৪ সালে রত্না হেনা ও স্কুল শাখায় আজমিন নাহারকে নিয়োগ দেয়া হয়। অধ্যক্ষ মীর আব্দুল আহসান আজাদ জানান, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা কম্পিউটার সম্পর্কে অদক্ষ, তারা শিক্ষার্থীদের পাঠদানেও অযোগ্য। নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকরা কম্পিউটার জ্ঞান সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যে কারনে কোন ক্লাস নেয়া হচ্ছে না।

গত ১ ফেব্র“য়ারী ক্লাস নেয়ার জন্য লিখিতভাবে নোটিশ দেয়া হলে আজমিন নাহার স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ্য করেন। অভিযোগের ব্যাপারে আজমিন নাহারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,Computer অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একইদিন গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কথা হয় কম্পিউটার শাখার সহকারী শিক্ষক সৈয়দা সুরাইয়া নাসরীনের সাথে, শিক্ষার্থীদের কোন কোন প্রোগ্রাম  শেখানো হয় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের টাইপ শেখানো হয়। এ প্রোগ্রামের নাম কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আবার নাম কি ?  তিনি জানান, এ স্কুলে ৯টি কম্পিউটার রয়েছে। তার মধ্যে ৩টি অকেজো। নবম ও দশম শ্রেণীতে ১৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, কম্পিউটার বিষয়ে তাদের কোন ক্লাস নেয়া হয় না। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও একাধিক সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করেন, পূর্বের ম্যানেজিং কমিটি রাজনৈতিক বিবেচনায় মোটা অংকের ডোনেশন গ্রহণ করে নিয়োগ প্রদান করেছেন।

একই অবস্থায় হোসনাবাদ আলীয়া মাদ্রসা, কাসেমাবাদ আলীয়া সিদ্দিকীয়া কামেল মাদ্রাসা, নলচিড়া হাইস্কুল, গৌরনদী আল-হেলাল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার। এ ব্যাপারে গৌরনদী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে ভাবে কম্পিউটার শিক্ষার প্রসারতা লাভ করার উচিত ছিল, সে তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। গৌরনদী একাডেমিক সুপার ভাইজার গৌরাঙ্গ প্রসাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, কম্পিউটার শিক্ষার অবস্থা খুবই খারাপ। কম্পিউটর ও শিক্ষকসহ সকল লজিস্টিক সাপোর্ট থাকা সত্বেও  শিক্ষকদের অদক্ষতায় মুখ থুবরে পড়েছে এ শিক্ষা কার্যক্রম।