কালকিনিতে প্রশিকা’র কিস্তির টাকা আদায়ে পুলিশ সদস্যরা মাঠে!

কিস্তি আদায়ে পুলিশ নিয়ে মাঠে নেমেছে এনজিও সংস্থা ‘প্রশিকা’। গত এক সপ্তাহ ধরে গ্রাহকদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে গ্রেফতারের হুমকী-ধুমকী দিয়ে কিস্তির টাকা চাচ্ছেন প্রশিকা’র কর্মকর্তারা। পুলিশের ভয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারা অভাবগ্রস্ত মানুষেরা আতংকে দিন কাটাচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এনজিও সংস্থা প্রশিকা’র কালকিনি উপজেলায় অবস্থিত শাখাগুলো থেকে মাইক্রোক্রেডিট বিভাগের অধীনে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গরীব মানুষের মাঝে বিতরণকৃত ঋণের কিস্তি সাপ্তাহিক ভিত্তিতে আদায় করে থাকে। একাধিক কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারলে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির হয়। পুলিশ দিয়ে ডেকে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারলে গ্রেফতারের হুমকী দেয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিনে পৌর এলাকাসহ ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রশিকা’র কর্মকর্তারা থানা পুলিশের এক এএসআইকে নিয়ে ৭০থেকে ৮০বাড়িতে হুমকী দিয়ে এসেছে বলে প্রশিকা’র একাধিক ঋণ গ্রাহক জানিয়েছেন।

প্রশিকা’র ঋণ গ্রাহক পৌর এলাকার চরপাঙ্গাশিয়া গ্রামের মাসুদা বেগম বলেন, ‘অফিসাররা পুলিশ নিয়ে বাড়িতে আইয়া কিস্তি দিতে না পারায় হুমকী-ধুমকী দিয়েছে। ৭দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে না পারলে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে বলে জানিয়ে গেছে’। 

প্রশিকা’র কালকিনি উপজেলা শাখা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়মিত কিস্তি আদায় করতে না পারায় প্রশাসনিকভাবে চাপে রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঠিকমত আদায়কৃত কিস্তির টাকা ঢাকার প্রধান অফিসে না পাঠাতে পারলে তাদের বেতন আটকে রাখা হয়। বর্তমানে শতাধিক গ্রাহক ঠিকমত কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন না। বাধ্য হয়েই তারা পুলিশ নিয়ে কিস্তির টাকা আদায়ে মাঠে নেমেছেন। পুলিশের এএসআই ঋণ খেলাপীগের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় গালিগালজও করেছেন।

সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) ওবায়েদুর রহমান জানান, ‘প্রশিকা অফিস থেকে কালকিনি থানায় ৬০জনের বেশী ঋণ খেলাপীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছে। প্রশিকা’র কর্মকর্তারা ভেবেছে পুলিশ নিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ ভয়ে কিস্তির টাকা দিয়ে দিবে। তাই তারা আমাকে নিয়ে অনেক গ্রাহকের বাড়িতে গেছেন। ভয়ে অনেকে আমাদের কাছে আসেই নাই। কিস্তির টাকা পরিশোধে গ্রাহকদের ৭দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে’।

কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এনজিওদের অভিযোগে কোনো পুলিশের ফোর্স ব্যবহার না করার জন্য আমি তদন্তকারী দারোগাকে নির্দেশ দিয়েছি’।

প্রশিকা’র কালকিনি উপজেলা শাখার ব্যাবস্থাপক কাজী কামাল বলেন, ‘খেলাপী ঋণ দাতাদের ভয় দেখিয়ে কৌশলে টাকা উঠানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আসলে কাউকে আমরা গ্রেফতার করার ক্ষমতা রাখিনা’।