সিএমএমইউ’র দরপত্রের লটারীর ড্র স্থগিত

কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান ও মেরামতের প্রায় ৮ কোটি টাকার ঠিকাদারী কাজের দরপত্রের লটারীর ড্র স্থগিত করা হয়েছে। লটারীর ড্র নিয়ে ঠিকাদারদের মধ্য উত্তেজনার সৃষ্ঠি হলে এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোডের সিএমএমইউ অফিসে ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ২৪ ফেব্র“য়ারী প্রায় তিন কোটি টাকার দরপত্রের লটারীর ড্র’ নিয়ে ঠিকাদারদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্ঠি হলে প্রায় দুই ঘন্টা লটারীর ড্র বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ প্রহরায় ড্র সম্পন্ন হয়। তবে এবারে পুলিশ প্রহরায়ও লটারীর ড্র সম্পন্ন হয় নি। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল ১০ টায় নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোডের সিএমএমইউ’র কার্যালয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান ও মেরামত’র একশ’ গ্র“প কাজের দরপত্রের লটারীর ড্র হওয়ার কথা ছিলো। তবে জেলা যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহবায়ক হাসান মাহমুদসহ অর্ধশত ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়ে সকল কাজ তাদের অনুকূলে দেয়া জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কাজে দাবী জানায়। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন চুন্নুর নেতৃত্বে এক দল ঠিকাদার লটারীর ড্র’র পক্ষে অবস্থান নেয়। এখবর ছড়িয়ে পরলে অন্যান্য ঠিকাদারদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্ঠি হয়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে র‌্যাবের একটি দলে সেখানে অবস্থান নেয়। দুপুর একটার দিকে লটারীর ড্র’র ব্যবস্থা করা হয়। তবে লটারীর গুটিতে একাধিক নাম্বার লেখা থাকায় লটারীর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ঠিকাদাররা। এসময় তারা ড্র বন্ধের জন্য আহবান জানায়। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে লটারীর ড্র স্থগিতের কথা ঘোষনা করে নির্বাহী প্রকৌশলী।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহবায়ক হাসান মাহমুদ বলেন, লটারীর ড্র শুরু করতে দুপুর একটা পেরিয়ে গেলে অধিকাংশ ঠিকাদারই অফিস ত্যাগ করে চলে যায়। তাই আ’লীগের যাতে কোন ধরনের বদনাম না হয় তার জন্য সকল ঠিকাদারের উপস্থিতিতে লটারীর ড্র সম্পন্ন করা জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আহবান জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে তিনি লটারীর ড্র স্থগিত করেন। ঠিকাদারদের মধ্যে উত্তেজনার কথা অস্বীকার করে সিএমএমইউ’র নির্বাহী প্রকৌশলী দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, দরপত্র আহবান কমিটির কয়েকজন সদস্য তার কক্ষে আসতে বিলম্ব করায় কিছু সময় লটারী ড্র বন্ধ ছিল। পরে লটারীর ড্র’র প্রক্রিয়া শুরু হলে কয়েক জন ঠিকাদার তাকে জানায় তাদের নিকট আত্মীয় মারা গেছে। তাই লটারীর ড্র বন্ধ রাখার জন্য তাকে অনুরোধ করে ওই ঠিকাদাররা। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে লটারীর ড্র স্থগিত করা হয়। আগামী রোববার ড্র অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।

লটারীর গুটির ব্যাপারটি এড়িয়ে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বিভাগের ৬ জেলায় ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান ও মেরামতের জন্য দুটি ভাগে ১০০ গ্র“পের দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। জিওবি ফান্ডের ছিলো ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার মেরামতের ৫০ গ্র“প কাজ। ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের (৫০ প্যাকেজ) জন্য বরাদ্ধ হলো ৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ১০ ফেব্র“য়ারী জিওবি’র মেরামত কাজের জন্য এবং ২৩ ফেব্র“য়ারী কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান কাজের দরপত্র জমাদানে শেষ দিন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দরপত্র জমা পরে। যার মধ্যে জিওবি’র বিপরীতে ৭৬১ টি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের বিপরীতে ৩০৬ টি দরপত্র জমা পরে। কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অনেক বড় কাজ ছিলো। তাই ঠিকাদারদের সংখ্যাও ছিলো বেশি। এ কারনে ঠিকাদারদের নিজেদের মধ্যে একটু উত্তেজনার সৃষ্ঠি হয়। তবে পুলিশ পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন নেয়। ফলে সেখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি। পুরো সময় ধরেই পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলো। তিনি বলেন লটারীর গুটির মধ্যে একটু সমস্যা থাকায় ঠিকাদাররা ড্র মেনে নিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ড্র স্থগিত করা হয়।