আত্মহত্যার আগে কিশোরী সোনিয়ার লিখে যাওয়া চিরকুট গতকাল শনিবার সকালে জব্দ করেছে থানা পুলিশ। অপরদিকে শুক্রবার রাতে নিহত কিশোরী সোনিয়া আক্তারের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার দু’দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও এখনো বখাটে লিটন হাওলাদার প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনতিবিলম্বে বখাটে লিটনকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন ব্র্যাকের মানবাধিকার সংগঠনসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।
আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি (অতিরিক্ত দায়িত্বে) এস.আই জসিম উদ্দিন বলেন, আমি শনিবার সকালে চিরকুট সম্পর্কে অবগত হয়েছি। তাৎক্ষনিক থানার এস.আই আবুল খায়েরকে দিয়ে চিরকুটটি জব্দ করিয়েছি। তবে নিহতের গৃহে শোকের মাতম চলায় এখনো কেউ যৌণ হয়রানীর কারনে কিশোরী সোনিয়ার আত্মহত্যার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম হাওলাদার জানান, তার কন্যা সোনিয়া আক্তারকে (১৭) আগৈলঝাড়া শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলো। দীর্ঘদিন থেকে সোনিয়াকে পাশ্ববর্তী বাড়ির প্রভাবশালী মোফাজ্জেল হাওলাদারের পুত্র লিটন হাওলাদার বিয়ের প্রলোভনে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। বখাটে লিটনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে সোনিয়াকে বিভিন্ন ধরনের উত্যক্ত করে আসছিলো। এ ঘটনার তার বড় মেয়ে তানিয়া বেগম গত ২৩ মার্চ দুপুরে প্রতিবাদ করায় লিটন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তানিয়াকে কুপিয়ে জখম ও সোনিয়াকে মারধর করে আহত করে। এঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের কাছে বিচার দেয়ার অপরাধে বখাটে লিটন ক্ষিপ্ত হয়ে ২৪ মার্চ সকালে সোনিয়াদের গৃহে গিয়ে পরিবারের সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে অভিমানী সোনিয়া ওইদিন (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষপান করে। পরবর্তীতে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনিয়া মারা যায়। আত্মহত্যার পূর্বে সোনিয়া তার পড়ার টেবিলে একটি চিরকুট লিখে রেখে গেছে। ওইচিরকুটে লেখা রয়েছে “আমার মৃত্যুর জন্য লিটনই দায়ি”।