যে ব্যর্থতা ইতিহাস ক্ষমা করে না

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ গত ২৩ মার্চ এক আলোচনা সভায়, ‘… ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের আমির মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ড. ইউনূসের ব্যাপারে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন (সংবাদ ২৪ মার্চ ‘১১)।’ এই সভায় উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে হানিফ সাহেব আমিনীকে গ্রেফতারের দাবি জানান।

Blek২৪ মার্চ অন্য এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ইউনূস ইস্যুতে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেস্নকের বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীনতাযুদ্ধ নস্যাৎ করতে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বাঙালি ভয়ে মরে ঢুকে যায়নি; রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। বর্তমান জামানায় নতুন ইস্যুতে আবারও মার্কিন নৌবহর আসবে বলে লিখছে কোন কোন পত্রিকা। আমরাও বলে রাখছি, বাঙালি রক্ত দিয়ে যেমন স্বাধীনতা এনেছে, তেমনি প্রয়োজন হলে রক্ত দিয়েই স্বাধীনতা রক্ষা করবে। মার্কিন নৌ বহরকে বাঙালি ভয় পায় না (প্রথম আলো : ২৫ মার্চ ২০১১)।’

আওয়ামী লীগের দু’জন শীর্ষ নেতার উপরোক্ত বক্তব্য এমন সময় প্রকাশিত হয়েছে যখন বাংলাদেশে ইসলামী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী এবং মার্কিনিদের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছে। আমিনী জনসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে ‘টেনেহিঁচড়ে নামানোর’ মতো হিংস্র বক্তব্য দিয়েছেন এবং প্রায় একই সময়ে বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ‘ইউনূস ইস্যুতে’ মার্কিনমন্ত্রী বেস্নক বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে তাচ্ছিল্য করে সরকারকে নির্দেশ আকারে বলেছেন ইউনূসের সঙ্গে ‘মর্যাদাপূর্ণ (!)’ সমঝোতা করতে। মার্কিনিদের কথা না শুনলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে আসবেন না এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন গেলে ওবামার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বেস্নক। আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে বাংলাদেশকে শাসিয়েছেন বেস্নক এবং বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট উলফেনসন।

২৪ ঘণ্টা অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে; আমিনী গ্রেফতার হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও বেস্নকের তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়নি। সংবাদপত্র থেকে জানা যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নাকি ওয়াশিংটনে ইউনূস ইস্যুতে প্রচার অভিযান চালানো হবে। বাস্তবে দেশবাসী এখন পর্যন্ত সরকারের মন্ত্রী এবং শাসকদলের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে যেটুকু প্রতিক্রিয়া পেয়েছে তা একদমই ঘরের ভেতর থেকে দেয়া প্রতিক্রিয়া। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী কোন ‘লীগের’ পক্ষ থেকে বেস্নকের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত রাস্তায় নেমে কোন বিক্ষোভ করতে দেখা যায়নি। আশরাফ সাহেব তো ১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করেছেন, যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ। এখন তো আশরাফ সাহেব সাধারণ সম্পাদক। তিনি আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক ইস্যুতে কতটুকু সক্রিয় করতে পারলেন? ইসলামী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের অপমানজনক তৎপরতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের তরুণ সমাজ কেন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন? বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অবমাননার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ বাঙালি তরুণদের পক্ষ থেকে বাংলার রাজপথ বিক্ষোভে কাঁপিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কথা ছিল আমিনী এবং বেস্নকের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়ার। ‘৭১ সালে অস্ত্র হাতে যুদ্ধের ময়দানে এবং ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীনের নেতৃত্বে রাজপথে বাঙালি তরুণরা তাদের বীরত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু এখন? মনে হচ্ছে সবই কথার ফুলঝুরি, অতীতের সাফল্য নিয়ে বাহাদুরি! আওয়ামী লীগ যে একটি রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল বর্তমান প্রেক্ষিতে তার সামান্যতম প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না কেন তার কোন সদুত্তর আশরাফ সাহেবরা দেবেন কি-না তা জানি না; কিন্তু বাস্তব রাজনীতি দাবি করছে এখনই তীব্র রাজনৈতিক সক্রিয়তার।

মওদুদ গংরা প্রতিদিন হুঙ্কার দিচ্ছেন, তারা ক্ষমতায় গিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের গ্রহণ করা সব ভালো পদক্ষেপগুলো ‘বাতিল’ করে দেবেন! এমন কি সর্বোচ্চ আদালতের নেয়া ‘পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী’ বাতিলের সিদ্ধান্তও নাকি মওদুদ গং বাতিল করবেন!! শুনতে বেমানান ঠেকলেও মওদুদ গংরা বলা থেকে বিরত হচ্ছেন না।

‘ইউনূস ইস্যুতে’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুপ্ত থাকা বিপজ্জনক লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যেন ‘১/১১’-এর বিপরীতে ‘২/২২’ সংঘটন করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের একটি চিহ্নিত ‘এলিট গোষ্ঠী’। একটি ‘দৈনিককে’ ঘিরে এই ‘এলিট গোষ্ঠী’ বেশ ভালোভাবেই সক্রিয় আছেন। এরা একটি কৌশল অবলম্বন করে খুবই সতর্কভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা প্রচার করছেন দেশে এখন কোন রাজনীতি নেই। অর্থাৎ তাদের ভাষায় ‘নো পলিটিক্স (!)’। এরা বলছেন ‘রাজনীতি’ মানে ‘দুর্নীতি’! দলগুলো নিচু মানের অযোগ্য লোকদের দ্বারা ঠাসা!! তার মানে দেশকে ‘সুশীল (!) সমাজের’ নেতৃত্বে পরিচালনার জন্য ‘ডিপলিটিসাইজেশন দরকার !! এরপরই আবার ফিরে আসবে পলিটিক্স’!!! সেই ‘পলিটিক্স’ হবে ‘এলিট সমাজের’ পলিটিক্স। এই ‘এলিট সমাজ (!)’ বাংলাদেশের রাজনীতির ওপরতলায় বেজায় শক্তিশালী। এরা বাংলাদেশের সরকারগুলোকে চোখ রাঙিয়ে শাসানি দেয়। সময় সময় হাত মুচড়িয়েও দেয়। যেন এরা রাষ্ট্রের ওপরে আর এক রাষ্ট্র। যাকে ‘সুপ্রা-স্টেট’ বললে বাড়তি বলা হয় না। এই ‘সুপ্রা-স্টেটের’ আলাদা সরকার আছে। আছে ‘বন্ধুরাষ্ট্র (!)’ গুলো। যার প্রয়োজনে বৈধ সরকারের আমন্ত্রণ ছাড়াই ‘বেস্নক’ ছুটে চলে আসেন। ইউনূস বলে দেন; ‘প্রধানমন্ত্রী চাইলে (!)’ তিনি (ইউনূস) আলোচনায় বসতে প্রস্তুত! ইউনূস জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের কোন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন? স্বাধীন-সার্বভৌম একটি দেশের নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তি ইউনূসের সঙ্গে কি প্রয়োজনে ‘আলোচনায়’ বসতে চাইবেন? বরঞ্চ ব্যক্তি ইউনূসের প্রয়োজন হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য দরখাস্ত করার। এখান থেকেই প্রমাণিত হয় আলোচ্য ‘সুপ্রা-স্টেটের’ সুপ্রা রাষ্ট্র প্রধান, কথিত এলিট গোষ্ঠীর সরকার প্রধান হলেন ইউনূস।

একটি ‘দৈনিককে’ ঘিরে ‘সুশীল সমাজ (!)’ এবং বড় ও মাঝারি মাপের এনজিও লর্ডদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই ‘এলিট সমাজের’ কাছে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আত্মমর্যাদার ব্যাখ্যা ভিন্ন ধরনের। এনজিও লর্ডদের ‘ডোনার’ এবং সুশীল সমাজের বিশ্বায়নের যুগের সভ্য দুনিয়ার ‘বন্ধুদের’ নাকি অধিকার আছে ‘দরিদ্র ও অসভ্যদের’ দেশে ‘রাষ্ট্রের’ সীমা না মেনে চলার! ‘অসভ্য’ রাজনৈতিক দল ও তাদের অদক্ষ (!) সরকারের চাপকে ‘নিউট্রাল (!)’ করার জন্য ‘ডোনার’ এবং ‘বিদেশি বন্ধুদের’ হস্তক্ষেপ নাকি বৃহত্তর স্বার্থে খুবই প্রয়োজন! এদের ভাষায় ‘সার্বভৌমত্ব-স্বাধীনতা’ নাকি ‘ব্যাকডেটেড ইমোশন’!
একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ তাই আর বিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ বসে নেই। ‘নতুন ইস্যুতে আবারও মার্কিন নৌবহর’ আসলে ‘বীর বাঙালি’ কীভাবে তাদের প্রতিরোধ করবে আশরাফ সাহেব তা বলেননি। খোদ আওয়ামী লীগ সরকার এবং দলে ‘সপ্তম নৌবহরের’ লোকজন বসে আছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহার পারভেজ এবং তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে সরকারের স্পর্শকাতর তথ্যগুলো পাচার করে দিয়েছেন। সৈয়দ আশরাফ বীর বাঙালিকে প্রতিরোধের আশ্বাসবাণী শোনালেন, কিন্তু নিজ সরকার থেকে এখনো গওহর পারভেজ এবং তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীকে বরখাস্ত করতে পারেননি! বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীন আহমেদ ঘরে বসে বক্তৃতা দিয়ে বীর বাঙালিকে জাগিয়ে তোলেননি। বাংলার হাট, ঘাট, মাঠ ও রাজপথ চষে ফিরেছেন তারা। বাঙালি জাতিকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলেছিলেন বলেই ‘৭১ সালে ‘বীর বাঙালি’ সপ্তম নৌবহরকে একটুও ভয় পায়নি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে ‘দুই নৌকায়’ পা রাখা চলবে না। ওয়াশিংটনে গিয়ে ‘লবিস্ট’ নিয়োগ করে ‘সপ্তম নৌবহর’ রুখে দেয়া যায় না। বীর বাঙালির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদাও রক্ষা করা যায় না।

হানিফ সাহেব যথার্থভাবেই বুঝতে পেরেছেন উগ্র ধর্মান্ধ আমিনীরা রাষ্ট্রদ্রোহী। আমিনীকে গ্রেফতারের জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়াও সঠিক ছিল। কিন্তু আমিনী গ্রেফতার হননি! এই যে, আমিনী গ্রেফতার হলেন না; তার জন্য হানিফ সাহেব এখন কোন নতুন দাবি তুলবেন? উগ্র ধর্মান্ধ ইসলামপন্থি এবং ইউনূসপন্থি এলিট সমাজের ‘মুরুবি্ব’ কী একই ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী? রাজনীতির ভাষায় গোলমেলে মনে হলেও অঙ্কের হিসেবে উত্তরটা ‘একই’ হয়ে দাঁড়ায়। এই হিসেবটা মওদুদগংরা খুব ভালোভাবে বোঝেন বলেই তারা মনে করছেন দ্রুতই ‘ক্ষমতা’ ফিরে পাবেন! তবে একথা ঠিক, রাজনীতিতে অঙ্কের হিসাব সব সময় কাজে আসে না।

সরকারের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমিনীদের গ্রেফতার করার প্রয়োজন আছে ঠিকই। তার চেয়েও বড় প্রয়োজন জনগণকে রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত করে আমিনীদের জনগণও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। কোটি কোটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাঙালিকে রাজপথে টেনে এনে আমিনীদের যোগ্য প্রতিউত্তর দেয়া আশরাফ সাহেব এবং হানিফ সাহেবদের জন্য অসাধ্য কিছু হতে পারে না। সরকার গঠন করার তিন বছর হতে চলল; কিন্তু এই রাজনৈতিক কর্তব্যটি তারা সম্পাদন করার প্রয়োজন অনুভব করলেন না_ নাকি এই কর্তব্য পালন করতে পারলেন না তা আজও জাতির কাছে স্পষ্ট হলো না। আজ পরিস্থিতির চাপে পড়ে ‘গ্রেফতারের’ দাবি তুলছেন এবং ‘৭১ সালের ‘বীর বাঙালিকে’ স্মরণ করছেন! গত তিন বছরে যদি কমপক্ষে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আহ্বান এবং কমিটেড একদল তরুণকে আওয়ামীপন্থি ছাত্র ও যুবদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন এবং টে-রবাজ, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের তরুণ সমাজের নেতৃত্ব থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে পারতেন, তাহলে আজ ‘৭১ সালে বীর বাঙালিদের গর্বের কথা স্মরণ করা মানানসই হতো আশরাফ সাহেবদের জন্য। তাই শুধু প্রশাসনিক শক্তি দিয়ে নয়; নৈতিক এবং মনস্তাত্তি্বকভাবে উগ্র ধর্মান্ধ আমিনীদের এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তর থেকে পরাজিত করা, বিতাড়িত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং সরকারের স্থবিরতার কারণে আমিনীদের মনোবল নতুন করে বেড়ে উঠতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে নয়; রাজনৈতিক এবং আদর্শিক কর্তব্যবোধ থেকে নিজেদের প্রস্তুত করাই এখনকার বড় কাজ। নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরীর রাজধানীতে বিক্ষোভ করতে পারে এবং মহান স্বাধীনতা দিবসে শিবির যুদ্ধপরাধী নিজামী-মুজাহিদদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে পারে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধাতে পারে, কিন্তু আশরাফ সাহেব-হানিফ সাহেবদের ছাত্র-যুবরা বাঙলার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সম্মান রক্ষায় রাজপথে নামতে পারে না! আওয়ামী লীগ রাজপথে নেমে নিজেদের ‘বীর বাঙালির’ নেতা বলে প্রমাণ করতে পারে না!! এই ব্যর্থতা ইতিহাস ক্ষমা করবে না। প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সমর্থন যে দল এবং সরকারের পক্ষে সেই দল এবং সরকার আজ পর্যন্ত কোন স্বচ্ছ এবং সাহসী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারল না; এই যন্ত্রণা জাতি কীভাবে মেনে নেবে?