গৃহকর্তার নির্যাতনে এক শিশু মৃত্যুশয্যায়

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় রক্ত দিয়ে Hasinaচিকিৎসকরা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

পুলিশ ও শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পুকুরদিয়ার মাইরছড়া গ্রামের ব্রিক ফিল্ড শ্রমিক মো. হানিফের অভাব-অনটনের সংসারে ৬ সন্তান নিয়ে দিন কাটছিল। ছয় মাস আগে তার শিশুসন্তান হাসিনাকে (১১) ঢাকায় বসবাসকারী মেজর আখতার শিবলুর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজে দেয়। সামান্য টাকা দেয়ার কথা থাকলেও টাকা দেয়া তো দূরের কথা, গৃহকর্তা মেজর শিবলু ও তার স্ত্রী নিপার অমানুষিক নির্যাতনের ফলে শিশুটি এখন মৃত্যুশয্যায়।

শিশুটির বড় বোন কুলসুম ও নাজমা জানান, বাসার কাজে ভুল করার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে প্রায় সময় তার বোন হাসিনাকে গৃহকর্তা ও স্ত্রী মারধর করত। গরম খন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিত। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরে। এক পর্যায়ে ২৬ মার্চ রাতের আঁধারে হাসিনাকে ঢাকার মতিঝিল এলাকায় তাদের বাসার গেটের সামনে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ফেলে যায়। নাজমা জানান, টাকার অভাবে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে পারিনি। তাই ২৭ মার্চ ফেনী সদর হাসপাতালে নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে মুমূর্ষু ছোট বোনকে ভর্তি করাই। অর্থের অভাবে ওষুধ ও রক্ত কেনা সম্ভব না হলে রেড ক্রিসেন্ট কর্মীরা সাহায্যে এগিয়ে আসেন।

ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হাসিনা আক্তার জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিত্সা চলছে।

ফেনী রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যুব ইউনিটের সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম হাজারী রূপক জানান, ফেনী সদর হাসপাতালের ১ নং ওয়ার্ডের ১২ নং বেডে চিকিত্সাধীন অমানবিক নির্যাতনের শিকার শিশুটি রক্তের অভাবে মৃত্যুশয্যায় পতিত হলে রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে ২ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। নির্যাতিত শিশুটি গরিব হওয়ায় তার চিকিৎসা কাজে সমাজের বিত্তবান লোকজনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

শিশুটিকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। দু’চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী আহাম্মদ আল মামুন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি অমানবিক। থানায় অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গৃহকর্তা মেজর শিবলুর পারিবারিক মোবাইল ফোনে (০১৭১২৮১৪১৭১) যোগাযোগ করে তার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করে মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায়নি।

সূত্র: আমারদেশ