উজিরপুরে প্রকাশ্যে এক যুবকের চক্ষু উৎপাটন

প্রকাশ্যে এক যুবকের চাকু দিয়ে খুচিয়ে একটি চক্ষু উৎপাটন করেছে প্রতিপক্ষরা। নষ্ট করে দিয়েছে অপরটিও। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার শোলক ইউনিয়নের উত্তর শোলক গ্রামে এঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের হামলায় চোখ হারানো যুবকের নাম মোঃ ইউসুফ আলী (৩০)। সে ওই এলাকার আকমত আলী আকনের পুত্র। ইউসুফ আলী বর্তমানে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এঘটনার জন্য থানা পুলিশের দায়িত্ব অবহেলাকে দোষারোপ করছেন ইউসুফের স্বজনরা। আহতের পিতা আকমত আলী আকন জানান, সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে শোলক ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড থেকে বিজয়ী প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনকে সমর্থন দেয় ইউসুফ। এতে ক্ষিপ্ত হয় প্রতিবেশি পরাজিত প্রার্থী বাশার সিকদার। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার জের ধরে কয়েকদিন পূর্বে তাকে (আকমত আলী) মারধর করে বাশারের চাচাতো ভাই সেলিমসহ কয়েকজন। এই ঘটনায় তিনি থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়। এর ধারাবাহিকতায়  বৃহস্পতিবার রাতে একই গ্রামের পাশ্ববর্তী ফুফুর বাড়ী থেকে ইউসুফকে ধরে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষ বাশার গ্র“প। ইউসুফকে শোলক গ্রামের তেতুল তলা নামক স্থান নিয়ে গিয়ে তার হাত পা বেধে তাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা চাকু দিয়ে খুচিয়ে ইউসুফের একটি চোখ উৎপাটন করে এবং অপরটি নষ্ট করে দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ইউসুফকে উদ্ধার করে প্রথমে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে রাতেই ইউসুফকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা করা হবে বলে আকমত আলী জানান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ইউসুফ আলী জানান, পরাজিত মেম্বর প্রার্থী বাশারের চাচাতো ভাই সেলিম, এছাহাক মোল্লা, নজরুল, জাহাঙ্গীর ও খোকনসহ ১২/১৫ জন তাকে ফুফুর বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করে। পরে চাকু দিয়ে খুচিয়ে চোখ তুলে ফেলে। ছুটির দিন থাকায় শেবাচিম হাসপাতালের ৪র্থ তলায় চক্ষু ওয়ার্ডে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। নাম প্রকাশ না করে কর্তব্যরত ইন্টার্নী চিকিৎসক জানান, বাম চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। ডান চোখে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্থায়ী অন্ধত্ব বরন করার সম্ভাবনার কথা জানান তিনি। পুলিশের প্রতি অভিযোগ করে ফুফু অনোয়ারা বেগম বলেন, পুলিশকে বারবার খবর দেয়ার পরেও তারা আসতে দেরি করে। তাদের কারনে ইউসুফের চক্ষু হারাতে হয়েছে। তারা ঠিক সময় মতো আসলে এঘটনা ঘটতো না। ইউসুফকে উদ্ধারকারী উজিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম শেখ আনোয়ারা বেগমের অভিযোগ অস্বীকার করে  বলেন, নির্বাচন ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটছে। ইউসুফের এক চোখ প্রায় উঠিয়ে ফেলছে। অপর চোখ রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবুও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।