আন্দোলন চাঙ্গা করতে বিএনপির সাংগঠনিক সফর

সফর শুরু করবেন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃবৃন্দ। জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, সরকারের ব্যর্থতা ও জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সরকার বিরোধী আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এ সফরের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, এসব ইস্যুতে জনমত গড়ে তোলার জন্য দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফরের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জানা গেছে, দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফরের জন্য ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯টি সাংগঠনিক টিম গঠন করেছেন। বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে এসব টিম গঠন করা হয়েছে। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের এসব টিমে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফরের জন্য গঠিত এসব টিমের দলনেতাসহ অন্যান্য সদস্যদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

সাংগঠনিক সফরের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংগঠনিক সফরের পরিকল্পনা আমাদের দলের রয়েছে এ ব্যাপারে কাজ চলছে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে জানানো হবে।

সাংগঠনিক সফর কবে নাগাদ শুরু হচ্ছে জানতে চাইলে যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান জানান, ইতিমধ্যে ১৯টি টিম গঠন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেই সফরের সময়ক্ষণ নির্ধারণ করা হবে। অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম জানান, ২৩ এপ্রিল জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে সাংগঠনিক সফর শুরু হতে পারে।

গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংকট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারী, ভারতের সঙ্গে ঋণসহ বিভিন্ন অসম চুক্তি, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে দলীয়করণ, রাজনৈতিক মামলা এক তরফা প্রত্যাহার, উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবু হত্যাকাণ্ডসহ আইন-শৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে।

বিএনপির নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ মনে করেন, গুরুত্বপূর্ণ এসব ইস্যুতে আন্দোলন যতটা বেগবান হওয়ার কথা ছিল তা করা সম্ভব হয়নি। দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নেতাকর্মীদের নিস্ক্রিয়তা ও জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারার কারণে তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন কর্মসূচি চাঙ্গা হচ্ছে না। সাংগঠনিক সফরের মাধ্যমে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন। নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে সরকার বিরোধী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে। তবে কোনো কোনো নীতি নির্ধারক মনে করেন, সরকারের দমন নিপীড়নের কারণেই বিএনপির আন্দোলন বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মহাজোট সরকারের গত আড়াই বছরে চারদিন হরতাল ব্যাতীত বিএনপি সভা, সমাবেশ ছাড়া অন্য কোনো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভাগ-জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল দলটি।