কালকিনিতে ওসি’র বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ!

মারাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের দফায় দফায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিরহ গ্রামবাসীর উপর পুলিশ কর্মকর্তাদের বর্বর হামলার ঘটনায় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শাহীন মন্ডলের তদন্ত কার্যক্রমকে ‘মিডিয়া তদন্ত’ বলে ক্ষতিগ্রস্থদের দাবী। তদন্তের নামে তিনি সাধারণ মানুষের সাথে প্রহসন ও মিথ্যাচার  করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বৃস্পতিবার বর্ষবরণের র‌্যালীতে রঙ ছুড়ে মারার জের ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ, দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় নিরব থেকে বাসা বাড়িতে ঢুকে পুলিশের তান্ডবে শিশু ও মহিলাসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়। এ সময় পুলিশ ৪টি বাড়িতে ভাংচুর করে। পুলিশের নির্যাতনের শিকার বিক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা কালকিনি ভূরঘাটা সড়ক অবরোধ করে রাখলে র‌্যাবের মৃদু লাটি চার্জে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

তাৎক্ষানিক ইউএনও’র উপস্থিতিতে আওয়ামীলীগ ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জরুরী সভায় বসলে তোপের মুখে পড়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শাহীন মন্ডল। পরে তিনি নির্যাতিতদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশস্থ করেন। পরের দিন শুক্রবার মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন করে দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবী করে নির্যাতিতরা।

পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবীর ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম শাহীন মন্ডল মিডিয়া কর্মীদের জানিয়েছিলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে’। গত ১৬এপ্রিল  “কালকিনিতে বর্ষবরণে ছাত্রলীগের বখাটেপনা, পুলিশের তান্ডবে আহত অর্ধশতাধিক!” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

তার এ বক্তব্য বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু ঘটনার ৩দিন অতিবাহিত হলেও কোন তদন্ত কার্যক্রম কারো নজরে নেই বা কারো জানা নেই। তদন্তের জন্য তিনি কোন আহত ব্যক্তি বা কোন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সাথেও কথা বলেননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মধ্যযুগীয় কায়দায় পুলিশি নির্যাতনে গুরুতর আহত স্কুল শিক্ষিকা আফরোজা বেগম(৩২) জানান, ‘কীভাবে আমাদের পুলিশ পিটাইছে তা কার কাছে গেলে বিচার পাইমু, পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছিলাম ওসি না-কি তদন্ত করে বিচার করবেন, কোথায় তদন্ত সেরকম তো আমরা কিছুই দেখছি না। বরং তিনি দেশের মানুষের সাথে তদন্তের নামে মিথ্যাচার করেছেন’।

তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম শাহীন মন্ডল বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করলে তো আমিই করবো না-কি। পুলিশ যে কায়দায় তদন্ত করে সে কায়দায়ই তদন্ত করছি’।