বরিশালে এক যুবতী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা

মাহমুদ শিকদারের ফতোয়ায় মঙ্গলবার রাগে ক্ষোভে অভিমানে এক যুবতী আত্মহত্যার চেষ্টায় বিষপান করেছে। যুবতীর নাম সোনিয়া আক্তার(১৮)। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, নগরীর সিএন্ডবি রোডের দিনমজুর হুমায়ুন কবিরের কন্যা সোনিয়া আক্তার। বছর খানেক আগে সেল ফোনে গোপালগঞ্জের আবদুল কুদ্দুস আকনের পুত্র সুমনের(২৩) সঙ্গে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। কয়েক দিন আগে প্রেমিক যুবক সুমন সোনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সিএন্ডবি রোডের শশুড়ালয় হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে বেড়াতে আসে। সোমবার রাতে স্থানীয় কয়েক উশৃঙ্খল যুবক ওই বাড়িতে গিয়ে সোনিয়া ও তার স্বামীকে জিম্মী করে এলাকায় প্রকাশ করে এই দু’জন অবৈধভাবে বসবাস করছে। উশৃঙ্খলরা স্থানীয় ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিসিসির প্যানেল মেয়র আলতাফ মাহমুদ শিকদারকে জানান দেয় যে, স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে এখানে অবৈধভাবে যুবক-যুবতী থাকছে। রাতেই প্যানেল মেয়র সেখানে এসে পরিবারকে বলেন ব্যাভিচার করার জন্য ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক দু’জনকে শাস্তি প্রদান করা হবে। নচেৎ তাদেরকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকী দেন প্যানেল মেয়র। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সোনিয়া অভিমানে বিষপান করে। এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। জরুরী বিভাগের ভর্তি নং.২২১২০/১৫। ফতোয়ার কারনে আত্মহননের চেষ্টার ঘটনার খবর পেয়ে নিজেকে রক্ষা করতে উঠেপড়ে লাগেন প্যানেল মেয়র আলতাফ মাহমুদ শিকদার। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় প্যানেল মেয়র পরিবারকে ম্যানেজ করতে হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে ছুটে যান। পাশাপাশি শেবাচিম হাসপাতাল থেকে নাম কেটে বাড়িতে নিয়ে  আসার চেষ্টা করেন প্যানেল মেয়র। সোনিয়ার পিতা হুমায়ুন কবিরকে অনেকটা ম্যানেজ করতে সক্ষমও হয়েছেন তিনি। হুমায়ুন কবির হঠাৎ ভোল পাল্টে সাংবাদিকদের বলছেন আমার কন্যা বিষপান করে নি। এছাড়া প্যানেল মেয়র কোন ফতোয়াও দেয় নি। কিন্তু শেবাচিম হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রেকর্ড রয়েছে সোনিয়া পয়জনিং পান করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। অপরদিকে পিতা হুমায়ুন কবির স্বীকার করেছেন যে রাতে প্যানেল মেয়র তাদের বাড়িতেই শালিসী করেছেন।

সোনিয়ার মা মাহমুদা বেগম বলেন এলাকার কয়েক ব্যাক্তি প্যানেল মেয়রকে খবর দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর প্যানেল মেয়র পরিবারের সকলকে বকাবকি করে বলেছেন অবৈধ সম্পর্কের দায়ে ইসলামী শরীয়তনুযায়ী বিচার করা হবে। আর শরীয়তনুযায়ী বিচার করলে মেয়েকে দোররাও মারা হতে পারে। তানা হলে তাদেরকে পুলিশ কিংবা র‌্যাবের নিকট সোর্পদ করা হবে।

এদিকে বিসিসি’র প্যানেল মেয়র আলতাফ মাহমুদ শিকদারকে প্রথমে ফোন দেয়া হলে তিনি অগ্নিমূর্তি রূপ ধারনের সুরে বলেন আপনারা এসব পাইছেন কোথায়। আমি কোন ফতোয়া দেয়নি। তবে বাড়িতে গিয়ে শালিশী করেছি। বিয়ে না করেই তারা অবৈধভাবে থাকছে এজন্য তাদেরকে বলেছি তোমাদের এখন কঠিন শাস্তি দেয়া উচিৎ। পুলিশ বা র‌্যাবকে খবর দিয়ে তোমাদেরকে তুলে দেয়া হবে।