মাছের ঘেরের গেট ভেঙ্গে দিয়েছে শতশত এলাকাবাসী

সাতলা গ্রামের স্লুইজ গেট থেকে নীলার খালে অবৈধ ভাবে নির্মিত পশ্চিম সাতলা একতা মৎস্য খামার- ২ এর গেট ও গড়া গতকাল শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে কোন প্রকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ছাড়াই ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।

সরেজমিনে এলাকাবাসীদের অভিযোগে জানা যায় পশ্চিম সাতলা গ্রামের ১২শ বিঘা ধানের মধ্যে স্থানীয় সাবেক মেম্বর আঃ রহমান মোল্লা , বি এন পি নেতা ইলিয়াছ হাওলাদার , টিটুল বিশ্বাস , গিয়াস মিয়া ইদ্রিস হাওলাদার, আ’লীগের নেতা রতন সমাদ্দার, নরেশ শিকদার মিলে ২০১০ সালে একতা মৎস খামার নামে একটি মৎস্য ঘের করে । মৎস্য ঘের নির্মানের পরে ঐ এলাকার ১২শ বিঘা জমির প্রায় ১৬লাখ টাকা মূল্যের ২হাজার মন ধান নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মোঃ ফজলুল হক হাওলাদার , নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক মোল্লা , ক্ষতিগ্রস্থ রুহল আমিন হাওলাদার, মোঃ কাইয়ুম ভাট্টি, বসন্ত সমাদ্দার , খলিলুর রহমান সহ শতাধিক গ্রামবাসী।

অন্যদিকে ঘেরের আওতায় থাকা সিংহ ভাগ জমির মুল মালিকেরা এব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে ভূক্তভোগী কৃষকেরা অভিযোগ করেছেণ পশ্চিম সাতলা একতা মৎস্য খামার ২ এর নামে আ’লীগ ও বি এন পি নেতারা প্রায় ১২শ বিঘা জমির ১০ হাজার কৃষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে মৎস্য চাষে বাধ্য করেছে। তারা আরো বলেন ঘেরের জমিতে শুধূ বোরোর আবাদ হয়। এ অঞ্চলে এই ফসলই কৃষকের একমাত্র ভরসা। কিন্তু প্রভাবশালীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পশ্চিম সাতলা গ্রামে নীলার খালের মুখে সুইচ গেট থেকে বরইভিটা পর্যন্ত খালের বাটাই বাড়ির দক্ষিন পার্শ্বে গেট গড়া দিয়ে খালের স্বাভাবিক চলাচলের বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই সাথে গত মৌসুমে সাবেক মেম্বর আঃ রহমান মোল্লা দেড় কোটি টাকায় মাছের ডাক কিনে ৯০লক্ষ টাকা ঘেরের সদস্যদের পরিশোধ করে। বাকী ৬০লক্ষ টাকা জমির মালিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা অদ্যবধি দেননি বলে ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেছেন। ফলে এ কারনে শত শত গ্রামবাসী চলতি মৌসুমে ওই জমিতে ঘের নির্মান করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বতস্ফুর্ত ভাবে নীলার খালের গেট গড়া গতকাল সকালে ভেঙ্গে  গুড়িয়ে দেয়। গেট গড়া ভাঙ্গার সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের আশংকা করা হলেও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার সার্থে একতা মৎস্য ঘের কমিটির কেউ গেট গড়ার কাছে যাননি। ফলে কোনরুপ সংঘর্ষ ছাড়াই নীলার খাল সহ ১২শ বিঘা জমিতে নির্মিত মৎস্য ঘের উন্মুক্ত হয়ে গেল ।

এব্যাপারে একতা মৎস্য ঘেরের সভাপতি ও স্থানীয় বি এন পি নেতা ইলিয়াছ হাওলাদার সাধারন সম্পাদক ও আ’লীগ নেতা রতন সমাদ্দার, আঃ রহমান মোল্লা , গিয়াস মিয়া সহ ঘের কমিটির অন্য সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন অধিক লাভ পেয়ে কৃষকেরা তাদের জমিতে নিজেদের ইচ্ছায় ঘের নির্মান করে মাছ চাষ করেছিল। একটি মহল অবৈধ সুবিধা আদায় করার জন্য এবং বিভিন্ন সময় অবৈধ ভাবে চাঁদা দাবী করে চাঁদা না পেয়ে, গ্রামের সাধারন মানুষদের ভূল বুঝিয়ে নীলার খালের গেট গড়া ভাঙ্গিয়েছে এবং গত মৌসুমে ঘের এর মাছে নির্ধারিত লাভ না হওয়ার কারনে বাকি ৬০লক্ষ টাকা জমির মালিকদের পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। যা কমিটির সকল সদস্যদের সভায় রেজুলেশন আকারে পাশ করা আছে। নীলার খালের গেট গড়া ভাঙ্গার ব্যাপারে মৎস ঘের কমিটির সভাপতি ইলিয়াছ হাওলাদার  ও সম্পাদক রতন সমাদ্দার একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।