মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ৫৩বছর পর মৃত্যু সনদ!

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর এ অনিয়মের প্রভাব পড়ছে আদালতে বিচারাধীন মামলায়। অভিযুক্ত ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে গেলে তিঁনি দু’ জন সাংবাদিককে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় সৃর্ষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আলীনগর ইউপির কোলচোরি সস্তাল গ্রামের সৈয়দ আলী ফরাজী ১৯৫৩সালে সৌদি আরবে হজ্ব থেকে দেশে ফেরার পথে জাহাজে তাঁর স্বাভাবিক মৃতু হয়। তাঁর সফর সঙ্গী চাঁচা মোহন ফরাজী বাড়িতে এসে মৃত্যুর খবর জানান। তার মৃত্যুর পর থেকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকশিত প্রত্যেকটি গেজেটে তাঁকে মৃত দেখানো হয়েছে। কিন্তু জমিজমা নিয়ে দ্বন্ধ থাকায় পাশ্ববর্তী লক্ষীপুর এলাকার চরলক্ষীপুর গ্রামের দাদন হাওলাদারের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ওই ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান হাওলাদার মৃত সৈয়দ আলী ফরাজী ২০০৬সালের ৬জুন মারা গেছে উল্লেখ করে একই বছরের ৬আগষ্ট মৃত্যু সনদ প্রদান করে। এ মৃত্যু সনদ ব্যবহার করে দাদন হাওলাদার মাদারীপুর জজ আদালতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মৃত সৈয়দ আলী ফরাজীর বিরুদ্ধে ২০০৮সালে মামলা দায়ের করেছেন।

মৃত সৈয়দ আলী ফরাজীর ভাইয়ের ছেলে সামছুল হক ফকির(৮২) জানান, আমার চাঁচা সৈয়দ আলী ফরাজী হজ্জে থেকে ফেরার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। সে সময় আমরা অনেক ছোট ছিলাম। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের ২০০৬সালের মৃত্যু সনদ দেয়ায় আমরা হয়রানীর শিকার হচ্ছি’।

মৃত সৈয়দ আলী ফরাজীর ছেলের স্ত্রী সোনাবান বিবি(৭০) জানান, ৫০বছর আগে আমার বিয়ের হলেও আমার শশুরকে দেখিনি, স্বামীর কাছে শুনেছি তিঁনি হজ্জে গিয়ে মারা গেছেন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান কীভাবে তাঁর মৃত্যু সনদ ২০০৬সালে দিলেন।

উক্ত এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মাদ তালুকদার বলেন, ‘সৈয়দ আলী ফরাজীকে আমরা চোখেই দেখি নাই। শুনেছি অনেক বছর পূর্বে তিনি হজ্জে গিয়ে মারা গেছেন। মৃত্যু সনদ দিতে আমাকে অবগত করার নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান কীভাবে দিয়েছে তা আমার জানা নাই’।

আলী নগর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আঃ মান্নান মাতুব্বর জানান, মৃত্যু সনদের ব্যাপারে আমার কাছে কোন কাগজপত্র নেই। তাই এ ব্যাপারে কোন সঠিক উত্তর দিতে পারবো না।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মিডিয়া কর্মী শহিদুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম মিন্টুকে লাঞ্চিত করে সাংবাদিকদের নামে প্রকাশ্যে বিষেদাগার করেন। প্রেসক্লাবের সামনে বসেই সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করার ঘটনায় ওই দিন দুপুরে প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা ।