ক্ষমতার আড়াই বছর শেষে মেয়র হিরনের প্রাপ্তি বদনাম না প্রশংসা?

মেয়র শওকত হোসেন হিরন ইতিমধ্যে নগরবাসীর দৃষ্টি কেরেছন। ৫বছর মেয়াদি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নগর পিতার দায়িত্ব এরিমধ্যে ২ বছর ৯ মাস অতিক্রম করেছে। আর এ ক’দিনে তার অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান থেকে শুরু করে শহরের সোভা বর্ধন , রাস্তা প্রশস্তকরন, নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনর জন্য মেয়র নাইট, মেয়র বাইট সহ যাত্রী ভোগান্তি দূরিকরনের লক্ষে সিটি বাস সার্ভিস, ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা ও মাহিন্দ্রর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে যথারিতী নগরবাসি বেশ শান্তিতেই দিন কাটচ্ছে। যে কারনে দলমতের বাইরে মেয়র হিরন নিস্বন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। যদিও অনেকেই উচ্ছেদ অভিযানকে ভিন্ন চোখে দেখছেন। তারা মেয়রের বিরুদ্ধে নানামুখি সমালোচনাও করছে। আবার কেই বলছে বিগত সিটি মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারের উন্নয়নমুলক কাজের উপর দিয়ে লোক দেখানো উন্নয়ন করছেন হিরন। ও দিকে সিটি কর্পোরেশনের একটি পুরোন বিশ্বস্ত সূত্র জানান, বিগত সিটি মেয়র এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার উচ্ছেদ অভিযানে সফল হতে পারেন নি। যা বর্তমান সিটি মেয়র বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে করে আসছেন। সেখান কার সূত্র জানায়, উচ্ছেদ অভিযানে মেয়র হিরন তার আপন বোনের ক্ষেত্রেও স্বজনপ্রীতি করেনি। বোনের লাগোয়া বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক। তথ্যনুযায়ী, অবৈধ দখলদারদের কারনে পুরান বাজারের ঐতিয্য অনেকটা বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। সেই অতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। মেয়র হিরন সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে  সড়ক গুলো বর্ধিতকরনের কাজ এখনও চলমান রেখেছে। সূত্র জানায়,এর আগে বান্দরোডের অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে সম্পত্তি উদ্ধার করেছে বিসিসি। বান্দরোডে অবৈধভাবে গড়ে ওঠে একুশ দোকান উচ্ছেদ করছে সিটি কর্পোরেশন। ওদিকে বরিশাল নদী খাল রক্ষা আন্দোলন কমিটিকেও তাদের নদী খাল রক্ষায় সেচ্চার থাকার আহবান জানান হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। তাছাড়া কাউয়ার চর নদী পারাপার টোল ভারা মওকুফকেও মেয়র হিরনের প্রশংসনীয় আরেকটি কাজ বলে মন্তব্য করছেন এই রুটে নদী পারাপারের যাত্রীরা। ভবিষ্যত শিশুদেরকে গড়ে তুলতে তিনি ঘোষনা দিয়েছেন বরিশালে শিশু বান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করবেন তিনি। শিশু হাসপাতাল নির্মানেরও পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। তবে এসব কিছুর বাইরে মেয়রের ব্যেক্তিগত কিছু লোক দলীয় গ্রুপিং’র কারনে অর্জিত প্রশংসার থেকে কিছুটা হলেও বেশী সমালোচনা  কুরিয়ে তার আড়াই বছরের অর্জনকে বির্তকিত করে তুলেছে। যাদের অন্যতমদের তালিকায় রয়েছে যুব লীগের বহিস্কৃত নেতা আবুয়াল হোসেন অরুন ও মেজবাহ উদ্দিন দ্বিপু, মোঃ মামুন, বিএম কলেজের যুগ্ন আহবায়ক মঈন তুষার, পলিটেকনিক কলেজের মিজানুর রহমান তালুকদার। অরুন দ্বিপু ও মামুন নগরবাসীর কাছে টেন্ডারবাজ হিসেবে ইতমিধ্যে স্বিকৃতি পেয়েছে। গত ৪মে পলিটেকনিক কলেজের আলোচিত মিজানগ্র“প ও রাজ্জাক গ্র“পের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মহানগর কমিটিই বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এরপর সর্বশেষ মঈন তুষার বনাম রফিক সেরনিয়াবাদ সংঘর্ষ । তবে মেয়র হিরন ক্ষমতায় এসে সবথেকে বেশী বির্তকিত হয়েছেন নথুল্লাবাদ বাস স্টান্ড থেকে শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন কে উচ্ছেদর মাধ্যমে বাস স্ট্যান্ড দখল করে। এর বাইরে মেয়রের একান্ত ব্যেক্তিগত মামুন-অরুন- দ্বিপু কর্তৃক গত ২১ মার্চ বিকেলে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিন কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ১১ ফেব্র“য়ারী দুপুরে যুবলীগ টেন্ডারবাজ মেজবাউদ্দীন দীপু ও আলাল ওরফে টাক আলালসহ ৬/৭ জন টেন্ডারবাজ গণপূর্ত’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোশারেফ হোসেনকে তাদের নির্দেশের বাইরে কাজ যাওয়ার অপরাধে গালিগালাজ ও চেয়ার থেকে টেন নিয়ে মাটিতে ফেলে বেধম মারধর করে। খবর পেয়ে  তথ্য সংগ্রহে  জনকন্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কাজী শামীম নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গেলে তাকেও ক্যাডার আলাল ওরফে টাক আলাল লাঞ্চিত করে ঘন্টা খানেক অবরুদ্ধ করে রাখে। এছাড়া গত ১১ মার্চ ঠিকাদার মামুন ও আবুয়াল হোসেন অরুনের তোপের মুখে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৪ গ্র“পের দেড় কোটি টাকার কাজের লটারী প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন।

সবশেষে সমস্ত আলোচনা সমালোচনার বাইরেও মেয়র হিরন সাধারন মানুষের কাছে যতটা বদনাম কুরিয়েছেন তার চেয়ে দ্বিগুন কুরিয়েছেন প্রশংসা। জানাযায়, এ্যাড. শওকত হোসেন হিরন বরিশাল বিভাগের মধ্যে ১৯৯০ সালে বয়সে সব থেকে কনিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বরিশাল সদর-৫ আসনে সংসদ নির্বাচনে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরপর ১৯৯৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে আ’লীগে যোগদান করেন মেয়র হিরন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ৪ আগষ্ট বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিধাতা তার কাপাল দেয়। নির্বাচনে শওকত হোসেন হিরন মেয়র নির্বচিত হন।