এবার যৌতুকের বলি এক সন্তানের জননী ইয়াসমিন

ইয়াসমিন বেগম নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মুখে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে হত্যভাগ্য গৃহবধূর লাশ তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার পর থেকে ঘাতক স্বামী ছালাম সরদার পলাতক রয়েছে।  

প্রত্যক্ষদর্শী, গৌরনদী হাসপাতাল সূত্রে ও নিহত গৃহবধূ ইয়াসমিন বেগমের ভাই ইব্রাহিম জমাদ্দার জানান, গৌরনদীর সীমান্তবর্তী বাবুগঞ্জের ইসলামপুর গ্রামের মৌজে আলী সরদারের পুত্র ঢাকার গামেন্টর্স শ্রমিক ছালাম সরদারের সাথে তিনবছর পূর্বে পাশ্ববর্তী ঠাকুরমল্লিক গ্রামের মৃত কাঞ্চন জমাদ্দারের কন্যা ইয়াসমিন বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ওই দম্পত্তি ঢাকার ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে আসছিলো। এরইমধ্যে তাদের সংসারে ১ টি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। অতিসম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার কথা বলে ছালাম সরদার তার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগমের ভাইদের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। টাকা আনতে অপরাগতা প্রকাশ করায় প্রায়ই ইয়াসমিন বেগমকে শারিরিক নির্যাতন করা হতো। গত এক সপ্তাহ পূর্বে উভয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। গত মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে যৌতুকের টাকার জন্য ছালাম ও তার পরিবারের লোকজন পূর্ণরায় ইয়াসমিনকে চাপ প্রয়োগ করে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে যৌতুকলোভী পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ইয়াসমিনকে শারিরিক নির্যাতন করে। নির্যাতনে ইয়াসমিন জ্ঞানশূণ্য হয়ে পরেন। এসময় ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য গৃহবধূর মুখে বিষঢেলে আত্মহত্যার চেষ্ঠার কথা এলাকায় রটিয়ে দেয়া হয়। কৌশলে পাষন্ড স্বামী ছালাম গৃহবধূ ইয়াসমিনকে ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে গৌরনদী হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ইয়াসমিনকে জরুরি ভিত্তিতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন বিকেলে গৃহবধূ ইয়াসমিন মারা যায়। চিকিৎসকেরা ইয়াসমিনকে মৃত ঘোষনা করার পর পরই পাষন্ড স্বামী ছালাম সরদার স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়।

গতকাল বুধবার সকালে লোকমুখে খবরশুনে নিহত ইয়াসমিনের ভাই ইব্রাহিম জমাদ্দার বরিশাল হাসপাতালে ছুঁটে যান। বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশ নিহত ইয়াসমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করেন। ময়না তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার বিকেলে হতভাগ্য ইয়াসমিনের লাশ তার ভাই ইব্রাহিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহত গৃহবধূ ইয়াসমিন বেগমের ভাই ইব্রাহিম জমাদ্দার আরো জানান, যৌতুকের দাবিতে তার বোনকে নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনায় তিনি (ইব্রাহিম) বাদি হয়ে মামলা দায়ের করবেন।