বোমার উৎস সন্ধানে অব্যাহত অভিযানে ১০টি গ্রাম পুরুষ শূন্য

লুটপাট ও বোমার বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার আতংকে ১০টি গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে । পৃথক তিনটি ঘটনায় দেড় শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ হওয়ায় বোমার উৎস অনুসন্ধানে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার এনায়েত নগর ইউপির কালাই সরদারের চর, কাজী কান্দি, সমিতির হাট ও মহরদ্দিরচর গ্রামে ৮মে রবিবার ভোর রাত ৪টায় থেকে ৬টা পর্যন্ত বাদল বাহিনীর প্রধান একাধিক হত্যা মামলার আসামী বাদল তালুকদারের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল তান্ডব চালিয়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ৩টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্ত্রাসীরা আতংক সৃষ্টি করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল সেট ও চার্জার লাইটসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের বাঁধা দিতে গেলে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১০জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বাদল বাহিনীর লোকজন গ্রাম ছেলে অন্যত্র চলে যায়। এই সুযোগে ওই দিন বিকালে কাশেম বাহিনী’র প্রধান কুখ্যাত ডাকাত কাশেম তালুকদারের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল তান্ডব চালিয়ে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়িতে ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্ত্রাসীরা আতংক সৃষ্টি করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল সেট ও চার্জার লাইটসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ২০জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরের দিন শনিবার উপজেলার চরদৌলত খা ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার মো: আবদুল মান্নানের সাথে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী কাউছার কবিরাজের সাথে প্রার্থীতা নিয়ে দ্বন্ধ হয়। পরে কাউছার কবিরাজের সাথে আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী চানমিয়া এক হয়ে গত রবিবার সন্ধ্যায় বাক-বিতান্ডায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটলে কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এবং  দফায় দফায় চলতে থাকে। রবিবার সকালের দিকে ওই তিন প্রার্থীর লোকজন মোক্তার হাট সেতুর উপর আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এ সময় প্রায় দেড় শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়। পুলিশ ২০রাউন্ড গুলি বর্ষণ করওে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যর্থ র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি পুলিশ) মোতায়েন করা হয়।

সূত্র জানায়, সংঘর্ষে বোমার বিস্ফোরণে প্রশাসনের টনক নড়েছে। সংঘর্ষেই এতো বোমার বিস্ফোরণ আসন্ন নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে। সংঘর্ষকালে বোমাগুলো কিভাবে আসলো ও কারা বা কোথায় নিয়ে গেল তার অনুসন্ধানে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযান অব্যাহত রেেেখছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশী করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্গলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের ভয়ে নিরহ গ্রামবাসী বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনদের বড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। রবিবার গভীর রাতে নতুন চরদৌলত খাঁ গ্রামে দুলাল খাঁর ঘর ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষ আবদুল মান্নানের লোকজন। এই রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মজিবর ফকির নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম শাহীন মন্ডল জানান,  ‘গ্রাম্য দলাদলীর কারনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সন্ত্রাসী ও বোমাবাজদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে। এখনো উক্ত স্থানে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা সার্বোক্ষনিক নিয়োজিত রয়েছে’।