বরিশালের মাফিয়া ডন কুতুব রানা’র আত্মসমর্পন

  পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ  সন্ত্রাসী বরিশাল কুখ্যাত শেখ মাসুদ আহমেদ রানা ওরফে কুতুব রানা গতকাল দুপুরে আদালতে আতœসর্ম্পন করেছে। এর পূর্বে আতœসমার্পন করেছিলেন নাজিরের পোলের রফিকুল ইসলাম খোকন ওরফে মামা খোকন। ৯৬’র সেভেন স্টার বাহিনীর প্রধানদের মধ্যের আতœসমার্পনের বাকী এখন ৫জন। বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চতুর্থ স্পেশাল ট্রাইব্যুানালে রানা আতœসর্ম্পন করলে বিচারক মজ্ঞুরুল আলম তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেয়। আদালত থেকে পাওয়া তথ্যনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের ১০ অক্টোবর শীর্ষ সন্ত্রাসী পানামা ফারুক ও কুতুব রানার নেতেৃত্ব নগরীর আমানতগঞ্জের মৃত্যু ফিরোজ ব্যাপারীর বাসভবনে বোমার বিস্ফোরন ঘটিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছিল। ২০০১ সালের ১৬ আগষ্ট এই ঘটনায় মৃত্যু ফিরোজ ব্যাপারীর স্ত্রী ফরিদা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। সে সময় ২০০৯ সালের ১৩ নভেম্বর কোতোয়ালী থানার তৎকালীন এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বরিশাল আদালতের বিশেষ ট্রাইব্যুানাল (চতুর্থ) বিচারক মাহাবুবুর রহমান ২০০৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রত্যোককে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করে। ও দিকে কুতুব রানার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের কাহিনী সম্পর্কে গোরস্থান রোডের একটি সূত্র জানিয়েছে এই সেই কুতুব রানা যার নামে বাচ্চাদের ভয় দেখিয়ে ঘুম পরান হতো। তার পরিচয় সম্পর্কে জানাযায়, বরিশাল জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ কুতুব উদ্দীন আহমেদের পুত্র কুতুব রানা। তার অন্যতম সহযোগী ছোট ভাই এর নাম মনা। কুতুব রানা বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ । বাড়ি নগরীর গোরস্থান রোড। তার রাইফেলের গুলিতে আমির শাহ সড়কের আবদুর রহিম নামের  এক যুবক নিহত হয়েছে। কুতব ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সে সময় মামলা দায়ের হলেও  সেই মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। ১৯৯৬-২০০১ সালে সন্ত্রাসী কুতুব রানা নগরীতে যে ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করেছিল যা এখনও নগরবাসীর কাছে লোমহর্ষক ইতিহাস। কুতুব রানা অস্ত্রের মহড়া দিতেন দিনে দুপুরে। বিগত আ’লীগ শাসনামলে প্রতি সপ্তাহে অন্তঃত দু-একবার ফাকা গুলিবর্ষন করা ছিল তার নেশা। নগরবাসীকে আতঙ্কে রাখা ছিল তার শখ। শহর বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মাহমুদ হোসেন মেহেদী হত্যার খলনায়ক এই কুতুব রানা। কিন্তু প্রভাশালী মহলের তদবিরের কারনে সে সময় তিনি বেচে যান। ক্ষমতার ভারে দিশেহারা হয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এবায়েদুল হক চাঁনের বাড়ি ভাংচুর লুটপাট করেছিল এই কুতুব বাহিনী। তার ছোট ভাই মনাকে দিয়েই বেশীর ভাগ অপর্কম হাসিল করাতেন কুতুব রানা। তৎকালীন সময় তার বাহিনীর ক্যাডাররা ছিনতাই, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে এমন কোন অঘটন নেই যা তারা করতেন না।  বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমপি মজিবর রহমান সরোয়ারের কাউনিয়ার বাড়িতেও হামলা চালিয়েছিল এই কুতুব রানা। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর বরিশাল থেকে ভারতে পালিয়ে যান কুতুব রানা ও তার সহযোগীরা।