বরিশালে সরোয়ার গ্রুপের বিক্ষোভ মিছিল

এখানকার ত্রি বিভক্ত বিএনপির  বিরুদ্ধে বিএনপিই যথেষ্ট। খোদ বিএনপিই এবার বিএনপির বিরুদ্ধে রাজপথে মিছিল মিটিং করছে। গত ৯ মে সাংসদ এ্যাড মজিবুর রহমান সরোয়ার গ্রুপের লোকজন কর্তৃক কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান রাজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনাকে মিথ্য বলে দাবী করছে সরোয়ার সমর্থিতরা। সরোয়ার সমর্থিত জেলা-মহানগর বিএনপি ও ছাত্র দল নেতৃবৃন্দরা এ কারনে গতকাল এমপি সরোয়ার সহ ১০/১২জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার শ্লোগানে বরিশাল মহানগরীতে মিছিল-মিটিং করেছে । এর বাইরে আজ আবার মিছিল করতে যাচ্ছে মহানগর যুব দল নেতাকর্মীরা। গোটা দেশবাসী রাজনকে কুপিয়ে জখম করার খবর জানলেও এ মামলাকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে যে মিছিল মিটিং করা হচ্ছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে খোদ বিএনপি দলের মধ্যেই নিন্দার ঝর বইতে শুরু করেছে।

গতকাল বিএনপি সাংসদ সরোয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকে বিকেল ৫টার এই বিক্ষোভ মিছিল মিটিং এর সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলা বিএনপির য্গ্নু আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক। মিছিলটি নগরীর ফজলুল হক এভিনিউ রোড থেকে কাঠপট্রি রোড হয়ে টাউন হল চত্তরে এসে শেষ হয়। সহিংসতার আশংকায় এ সময় পুলিশ সার্বক্ষনিক মিছিলটির দিকে নজর রেখেছে। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম শাহীন, প্যানেল মেয়ার আলতাফ মাহমুদ সিকদার, আয়শা তৌহিদা লুনা, কাউন্সিলর মীর জাহিদুল করিম জাহিদ, কোতয়ালি বিএনপির সভাপতি এনায়েত হোসেন বাচ্চু জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মাসুদ হাসান মামুন, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এইচ এম তছলিম উদ্দিন, যুগ্ন আহবায়ক শামছুদ্দোহা আজাদ, মহানগর ছাত্র দলের আহবায়ক খন্দকার আবুল হোসেন লিমন, যুগ্ন আহবায়ক আরিফুল ইসলাম জনি, বরিশাল কলেজের সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক উলফত রানা রুবেল, মহানগর স্বেচ্ছা সেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক বশিরুল আলম বশির সহ চুন্নু মৃধা, বেলায়েত হোসেন, জলিল, মিঠু, মুক্তি মাহমুদ মানিক সহ অনেকে।

উল্লেখ্য, রাজন সমর্থিতদের দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হচ্ছেন, সাংসদ মজিবুর রহমান সরোয়ার, কামরুল ইসলাম রতন, আলাউদ্দিন, মাহাফুজুর রহমান পিন্টু, আরিফুর রহমান মুন্না, ফিরোজ খান কালু ও মাহফুজুর রহমান মিঠু সহ অজ্ঞাত কয়েকজন।

উল্লিখ্য, সোমবার রাত সাড়ে ৯টায়  বরিশাল সদর উপজেলার কাউয়ার চর ফেরীতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গাড়ির বহরের পিছনের গাড়িতে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান রাজন আসছিলেন। এসময় রাজন অনুসারি ও বরিশাল সদর আসনের সাংসদ মজিবুর রহমান সরোয়ারের কর্মিদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে বিএনপির কেন্দীয় নেতৃবৃন্দ নগরীর সার্কেট হাউজে বিশ্রাম নিতে গেলে সেখানে  তারেক জিয়া জিন্দাবাদ, অপর পক্ষ সরোয়ার ভাই জিন্দাবাদ স্লোগানকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায় বিএনপি নেতা রাজনকে এলাপোথারী কুপিয়ে জখম করে।

রাজনকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১০টায় শেবাচিম হাসপাতালে রাজনকে দেখতে যায় হান্নান শাহ, কেন্দ্রীয় নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে আসলে হান্নান শাহকে দেখে সেখানে উপস্থিত বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ারকে উদ্দেশ্যে করে কটুক্তি করে নানা শ্লোগান দেয়। একই সঙ্গে হান্নান শাহকে আহত রাজনকে দেখতে বাধা প্রদান করে।

উত্তেজিত হয়ে কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে, এমপি সরোয়ারকে বিভাগের সব পদ পদবী দিয়ে দেন। এরবাইরে আর কাউকে কোন পদ দেয়ার দরকার নেই। সরোয়ারের কর্মিরা রাজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করেছে দাবী করে এমপি সরোয়ারের সাংগঠনিক শাস্তি চাওয়া হয়। প্রায় ১০ মিনিট অপারেশনের থিয়েটারের সামনে হান্নান শাহকে নেতা-কর্মীরা অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের শান্ত করেন। এসময় কয়েক কর্মী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে হান্নান শাহ বিএনপি তো রাজনকে দেখতে যান বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রজনকে ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে।