রাষ্ট্রীয় ৩ টি জাহাজ চলছে সার্ভে সার্টিফিকেট বিহীন

সার্ভে সার্টিফিকেট বিহীন অবস্থাতেই। সরকারী প্রতিষ্ঠানের নৌযান হওয়া সত্তেও প্রতিদিনই দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীন যাত্রীবাহী নৌপথে রাষ্ট্রিয় এ তিনটিসহ অন্য নৌযানগুলো বেআইনীভাবে চরম ঝুকি নিয়ে হাজার হাজার যাত্রী পরিবহন করে চলেছে।

রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসির ৫টি জাহজের মধ্যে এমভি অস্ট্রিজ, এমভি টার্ন নামের দুটি জাহাজের সাভে সনদ থাকলেও বাকি ৩ টি এমভি সেলা, এমভি লেপচা ও পিএস মাসুদ নামের জাহাজের কোন সার্ভে সনদ নেই দীর্ঘ দিন ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর সাথে বরিশাল ও খুলনা বিভাগীয় সদর সহ মংলা বন্দরের যাত্রী ও পণ্য পরিবহনকারী অতি জনগুরুত্বপূর্ণ যাত্রীবাহী এ নৌযান চলছে রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি’র দায়িত্বশীলমহলের উদাসীনতায়। একাধিক নৌযানগুলোর প্রয়োজনীয় সার্ভে সার্টিফিকেট হালনাগাদ করা হয়নি গত কয়েক বছর যাবত। এমনকি মাস ছয়েক আগে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের জরিপকারক নৌযান ‘পি.এস.মাহসুদ’ পরিদর্শন করে কিছু  ত্র“টি বিচ্যুতির কথা জানিয়ে নৌযানটির খোলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করনের লক্ষে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জমা দেয়ার তাগিদ দিলেও কতৃপক্ষ অদ্যাবধি তা প্রস্তুতই করেননি। ফলে এর সার্ভে সার্টিফিকেটও আর সংগ্রহ করা হয়নি। একই অবস্থা সংস্থাটির ‘পিএস লেপচা’ ও ‘এমভি সেলা’ জাহাজ দুটিরও।

সার্ভে সার্টিফিকেট বিহীন অবস্থায়ই তলা ও খোলের নাজুক অবস্থাতে ‘পিএস লেপচা’ জাহাজটিও একই রুটে দীর্ঘদিন চরম ঝুকির মধ্যে বিবেকহীনভাবে যাত্রী পরিবহনের পরে গত ১মার্চ তা মেরামতে পাঠান হয়েছে। এ নৌযানটিরও গত কয়েক বছর ধরে প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কার সহ এর সার্ভে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়নি।

অনুরূপ অবস্থা এরুটের বিকল্প নৌযান ‘এমভি সেলা’র। ২০০৫ সালে পূণর্বাসন ও যাত্রী সুবিধা পূণর্বিন্যাসের পরে আর এ নৌযানটির সার্ভে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়নি। সম্প্রতি চাঁদপুরঘাটে একই সংস্থার অপর একটি নৌযানের সাথে দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হবার  পরে এমভি সেলা মেরামত করা হলেও সার্ভে সার্টিফিকেট না থাকায় তা  এখন ঢাকা ঘাটে পড়ে আছে।

বিআইডব্লিউটিসির একটি সূত্র জানায়, ঢাকা * চাঁদপুর * বরিশাল * ঝালকাঠী * পিরোজপুর * মোড়েলগঞ্জ * মোংলা * খুলনা নৌপথে চলাচলকারী দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীন যাত্রীবাহী রকেট স্টিমার সার্ভিসটির জন্য ৪টি প্যাডেল জাহাজের ১টি গড়ে বিকল থাকছে। এমনকি গত বছরখানেক যাবত প্রায়ই ২টি করে নৌযানও বিকল বা বন্ধ থাকছে।

রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল সংস্থা-বিআইডব্লিউটিসি’র ইতিহাসে চরম অব্যাবস্থা,অনিয়ম ও আকণ্ঠ দূর্নীতিতে নিমজ্জিত এর যাত্রী সেবা (?) ব্যাবস্থা অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবী করেছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন-সার্থ সংরক্ষন কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মিজানুর রহমান ।

তারমতে সঠিক ও সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার অভাবে সংস্থাটির কোন নৌযানই সময়মত মেরামত ও রক্ষনা-বেক্ষন হচ্ছেনা। অথচ নৌযান মেরামতের নামে কতৃপক্ষের জ্ঞাতসারে সংস্থাটির ঢাকা ঘাটে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় দেখান হলেও তার সাথে বাস্তবতার ফাড়াক অনেক।

এমনকি আরো বছরখানেক আগে বার্ষিক মেরামতের সময় পেড়িয়ে যাবার পরেও দীর্ঘদিন বিবেকহীন ঝুকি নিয়ে পিএস লেপচা জাহাজটিতে যাত্রী পরিবহনের পরে গত ১মার্চ তা সংস্থার ডকইয়ার্ডে নেয়া হলেও সরঞ্জমাদির অভাবে তার মেরামত এখনো শুরুই হয়নি। নৌযানটির ডকিং সহ এর খোলের প্লেট সমুহ পরিবর্তন জরুরী হলেও কোন বাস্তব পদক্ষেপ নেই এখনো।

অথচ মাত্র তিনমাস পরেই রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। রোজা ও ঈদের ভীড় সামাল দিতে সংস্থাটির ৪টি প্যাডেল জাহাজ ছাড়াও বিকল্প স্ক্রুহুইল জাহাজ ‘এমভি সেলা’ যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত করার কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি’র অনেক দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়া জরুরী বলেও মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল।

এবিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক মোশারেফ হোসেন বলেন বিষটি আমার জানা নেই তবে খোজ নিয়ে বলতে পারব। বিআইডব্লিউটিসির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নূরুল আফসার তিনটি জাহাজের সার্ভে সনদনেই স্বিকার করে বলেন, সরকারের সম্পদ তার ওপর অনেক পূরানো আনেক জামেলা আছে। তার পরও আমরা জাহাজ গুলো মেরামতের জন্য পাঠিয়েছি  মেরামত সম্পন্ন হলেই সার্ভে সনদ সংগ্রহকরা হবে।