বরিশালে রাজাকার পুত্র মন্টু বাহিনীর তান্ডব

মন্টু বাহিনীর ক্যাডাররা চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে এলাকায় ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম, রাতের আধারে ভূয়া র‌্যাব সেজে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজিসহ অসামাজিক কর্মকান্ডে এলাকাবাসিকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্য ব্যক্তিকে শারিরিক নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে। এছাড়াও ওই বাহিনী কর্তৃক মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে এলাকার মেধাবী ছাত্রসহ সাধারন জনসাধারনকে। বাহিনীর প্রধান মন্টু ও তার বাহিনীর ক্যাডারদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা থাকা সত্বেও পুলিশ রহস্যজনক কারনে তাদের গ্রেফতার করছেন না বলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। এলাকার ভূক্তভোগীরা রাজাকার পুত্র সন্ত্রাসী মন্টু ও তার বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পেতে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে মন্টু ও তার বাহিনীর ক্যাডারদের গ্রেফতারের জন্য প্রসাশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, মন্টুর পিতা মোবারক মাস্টার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। বর্তমানে সেই রাজাকার পুত্র মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টু এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। চাঁদার দাবিতে গত বুধবার মসজিদবাড়ী গ্রামের কাঠমিস্ত্রি শাহ আলম বেপারীর ওপর অর্ততিক ভাবে হামলা চালায় মন্টু ও তার বাহিনীর ক্যাডারা। বানারীপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দিনমজুর শাহ আলম জনকণ্ঠকে জানায়, সকালে কাজ করতে পাশের গ্রাম তালাপ্রসাদ গেলে মন্টু বাহিনীর সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতন কওে পাশ্ববর্তী দিদিহার গ্রামে নিয়ে যায়। একপর্যায় শাহ আলম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মন্টু ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা শাহআলমকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা শাহআলমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপুর্বে ওই বাহিনী কর্তৃক লাঞ্চিত হন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার। মন্টু বাহিনীর হুমকির মুখে সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী থেকে ছিটকে পড়েন এই মুক্তিযোদ্ধা। পরে এলাকার অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল মন্টুকে সমর্থন না দেয়ায় নির্বাচনী দৌড়ে তৃতীয় অবস্থানে চলে আসে মন্টুর অবস্থান। এ কারনে মন্টু এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

এছাড়াও মসজিদবাড়ী গ্রামের ইলিয়াচ নামের এক যুবককে মারধর করে আহত করে মন্টু ও তার ক্যাডাররা। মন্টু বাহিনীর অন্যতম ক্যাডাররা হচ্ছে- দিদিহার গ্রামের আলী আকবরের পুত্র জালিস, শাশের আলীর পুত্র মোস্তাকিম, শামসু, ইসমাইল হোসেনের পুত্র রফিক, খলিল, ইব্রাহীম, নলশ্রী গ্রামের মনির হোসেন ও সুমন। এছাড়াও তার দলে রয়েছে ২৫/৩০ জন ক্যাডাররা। এসব সন্ত্রাসীরা গত রবিবার মসজিদবাড়ী গ্রামে বসে পূর্ণরায় ইলিয়াচ ও আনোয়ারকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এসময় গ্রামবাসীর সাথে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য মন্টু তার বাহিনীর ক্যাডার মনিরুজ্জামানকে নাটকীয় ভাবে আহত কওে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ইলিয়াচসহ আরো ১১ জনের বিরুদ্ধে হয়রানীর উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইব্রাহীম নামের এক মেধাবী ছাত্রকেও আসামি করা হয়েছে। ইব্রাহীম দীর্ঘদিন ঢাকায় থেকে পড়াশুনা কওে আসছেন। ইব্রাহীম জানিয়েছেন, সামনে তার মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা। এ অবস্থায় এ মিথ্যে মামলার কারনে তিনি ভীষণভাবে আতংকিত। স্থানীয় ভূক্তভোগীরা মিথ্যে মামলা থেকে রেহাই ও সন্ত্রাসী মন্টু বাহিনীর নির্যাতন থেকে পরিত্রান পেতে প্রসাশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।