দিনমজুর আর দোকান কর্মচারী ভুলে গিয়ে কিছু সময়ের ছাত্রের স্বাদ

সময়ের লাইগ্যা  ছাত্রের স্বাদ পাইলাম। সবাই জহন কয় তুই ভাল রেজাল্ট করছোস তহন কান্না আসছিল। হগোলডির চাইতে বেশী খুশী মোর বাবা মা, মুইও খুশী।  কলেজে পড়ার খুব স্বাদ জাগে পারমু কিনা জানিনা। গৌরনদীর প্রত্যন্ত পল্লী বাকাই নিরাঞ্জন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান ও দোকান কর্মচারীর কাজ করে জিপিএ -৫  পাওয়া সুমন সরকারের কাছে নিজের ফলাফলে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এভাবেই  কথাগলো বলেন সুমন।

স্থানীয় লোকজন ও স্কুল শিক্ষকরা জানান, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের দোনারকান্দি গ্রামের বাবা জগদীস সরকার ও মা শোভা রানী সরকার কৃষান কৃষানীর কাজ করে সংসার চালান। তাদের ৪র্থ সন্তানের মধ্যে সুমন সরকার বড়। ছোট বেলা থেকেই সে মেধাবী। ৭ম শ্রেনীতে পড়াশোনা অবস্থায় বাবা, মা, ভাই ও বোনের  রুটি রুজির জন্য সংসারের প্রয়োজনে পড়াশোনা বন্ধ করে সে পরের জমি ক্ষেতে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন। তার মেধা দেখে স্কুল শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বাকাই বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ শাহজাহান মিয়া জানান, রোদ বৃষ্ঠিতে ভিজে দিন মজুরের কাজ করে পড়াশোনা করায় খুবই কষ্ট হয় সুমনের। পরে দোকানে কাজ করে। দোকানে কাজ করার ফাকে সে পড়াশোনা চালিয়ে যেত। কোন দিন প্রাইভেট পড়েনি। তিনি আরো বলেন, সুমন খুবই মেধাবী ও আত্ম বিশ্বাসী। কখনো দিন মজুর, কখনো দোকান কর্মচারী এই পরিবেশের মধ্যে সুমনের ছাত্র জীবন। সুমনের বাবা দিনমজুর জগদীস সরকার মা শোভা রানী সরকার ছেলের সাফল্যে খুবই খুশী। তারা বলেন, অরে মোরা কলেজেতে পড়াতে পারমু না। হেই খেমতা মোগো নাই। সুমন জানান,  কলেজে পড়ার খুব স্বাদ জাগে, পারমু কিনা এ নিয়ে হতাশায় দিন কাটে সুমন সরকারের। সে একজন ব্যাংকার হতে চায়।