যৌতুক লোভী স্বামীর খপ্পরে গৃহবধূ শিউলী

যৌতুক লোভী প্রতারক স্বামী আক্কাচ আলী মৃধা। পূণরায় তিন Sheuli Begumলক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় শারিরিক নির্যাতন শুরু করে আক্কাচ। নির্যাতনের একপর্যায়ে গৃহবধূ ও তিন কন্যা সন্তানের জননী শিউলী বেগমকে তাড়িয়ে দেয়া হয় তার বাবার বাড়িতে। গত আটমাস ধরেই অসহায় শিউলী বেগমের ঠাঁই মিলেছে তার বাবার বাড়িতে। এ ঘটনায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিসহ পৌরসভার সালিশ সভায়ও বিচার দিয়ে কোন সুফল পাননি শিউলী। উপায়অন্তুর না পেয়ে অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়ের করে শিউলী এখন রিতিমতো বিপাকে পড়েছেন। মামলা উত্তোলনের জন্য তার স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকজনের অব্যাহত হুমকির মুখে অসহায় গৃহবধূ শিউলী এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। মামলায় সঠিক বিচার পাবেন কিনা এ নিয়েও শিউলী চরম শংকিত। অসহায় গৃহবধূ শিউলী সঠিক বিচার পেতে প্রসাশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ভালুকশি গ্রামের।

গৌরনদী উপজেলার বড় গ্রামের প্রবীণ ব্যবসায়ী নাজেম আলী সরদারের কন্যা অসহায় গৃহবধূ শিউলী বেগমের অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৬ ফেব্র“য়ারি পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার ভালুকশী গ্রামের নোয়াব আলী মৃধার পুত্র আক্কাচ আলী মৃধার সাথে তার সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবিকৃত একলক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে পরিশোধ করা হয়। বিয়ের পরবর্তী সময়ে একে একে তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। স্বামী আক্কাচ আলী মৃধা পরিবহনের সুপারভাইজারের চাকুরি নেয়ার কয়েক মাস পর গাড়ি ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ী শশুড় নাজেম আলী সরদারের কাছে ৭ লক্ষ টাকা ধার হিসেবে দাবি করেন। নিকট আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলনসহ নাজেম আলীর সহয় সম্পত্তি বিক্রি করে আক্কাচের দাবিকৃত ৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হয়। গত আট মাস পূর্বে আক্কাচ আলী শশুড় নাজেম আলীর কাছ থেকে পূর্বের ধার হিসেবে নেয়া ৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করেই আরো তিন লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে। তার (আক্কাচের) দাবিকৃত যৌতুকের তিন লক্ষ টাকা না দিলে শিউলীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করারও হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে গৃহবধূ শিউলীর সাথে আক্কাচের বিরোধ দেখা দেয়। ফলে শিউলীকে প্রায়ই শারিরিক নির্যাতন শুরু করে যৌতুকলোভী স্বামী আক্কাচ আলী। নির্যাতনের একপর্যায়ে (আট মাস পূর্বে) সন্তানদের রেখে গৃহবধূ শিউলী বেগমকে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, এ ঘটনায় অসহায় শিউলী ও তার পরিবারের লোকজন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিসহ গৌরনদী পৌরসভার সালিশ সভায়ও সঠিক বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। এতে শিউলীর যৌতুক লোভী প্রতারক স্বামী আক্কাচ আলী মৃধা ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। কয়েকদিন পরেই শিউলীর প্রতারক স্বামী আক্কাচ আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। উপায়অন্তুর না পেয়ে গত ১২ এপ্রিল অসহায় শিউলী বেগম বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকলোভী প্রতারক স্বামী আক্কাচ আলী মৃধাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এ খবর জানতে পেরে মামলা উত্তোলনের জন্য আক্কাচ ও তার পরিবারের লোকজনে মামলার বাদি শিউলী বেগম ও তার পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাদের অব্যাহত হুমকির মুখে অসহায় শিউলী বেগম এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে অসহায় শিউলী প্রসাশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।