হত্যা মামলার বাদীকে ফাঁসাতে দুই আইনজীবীর বিতর্কিত ভূমিকা

এরকম কারসাজীর নেপথ্যে রয়েছেন দুই আইনজীবী। কারসাজিতে ওই মামলায় সমন জারীর নোটিশ প্রাপ্তির পর  বরিশালের  অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট খাদেম উল কায়েসের আদালত থেকে  আলম হাওলাদার (৬০) রোববার আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। এসময় গত বছর মুলাদীতে সংঘটিত রহস্যজনক চুরি মামলার বাদী সাজমা বেগম আদালতের কাঠগড়ায় দন্ডায়মান ছিলেন। জেরাকালে উপস্থিত ছিলেন না বাদী সাজমা বেগমের নির্ধারিত আইনজীবী মোঃ মোখলেছুর রহমান। তবে নয়ন নামের এক আইনজীবী জেরায় অংশগ্রহণ  করেন।

আদালত থেকে নেমে সাজমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আলম হাওলাদারকে তিনি চেনেন না। এমনকি জীবনে দেখেনও নি। তিনি আরও জানান, আইনজীবী শেখ আবদুল কাদেরের কাছে মামলার জন্য যাই। তখন সেলিমা পারভীন সেতু নামের এক মহিলা আইনজীবী তার পাশে বসা ছিল। আইনজীবী কাদেরের নিকট তিন  আসামীর কথা বলেছি। পরে মোখলেছুর রহমান বাচ্ছু আমার মামলার আবেদনে আলম হাওলাদারকে ৪নম্বর আসামী হিসেবে জড়িয়ে দেয়। রোববার বিষয়টি তিনি জেনে হতবাক হয়ে যান।

সুত্র জানায়, আলম হাওলাদারের ছেলে মাসুদ রানা হাওলাদারকে ২০০৪ সালের ৪এপ্রিল বরিশাল নগরীর ডিআইজি অফিসের প্রধান ফটকে একদল সন্ত্রাসী লোমহর্ষক হত্যা করে। ওই মামলার বাদী আলম হাওলাদার।  এরপর ওয়ান ইলেভেনের সময় আলম হাওলাদারের ভাতিজা বাবুল হাওলাদারারের ৯ টুকরো লাশ ভাটিখানা থেকে উদ্বার করে পুলিশ। দুটি মামলা এখন বিচারধীন। মামলা দুটিতে আইনজীবী সেলিনা পারভিন সেতুর ভাই কাশীপুরের রিপন হাওলাদার সহ ৮ জন  আসামী রয়েছে।

আলম হাওলাদার জানান, আইনজীবী সেতু দীর্ঘদিন ধরে হত্যা মামলার গতি অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখন আইনজীবী বাচ্ছুকে ব্যবহার করে  আমাকে চুরি মামলার আসামী করা হলো।  

জানা গেছে,২০১০ সালের ২৭ মে দিবাগত রাতে মুলাদী উত্তর গাছুয়া গ্রামের কাসেম বেপারীর বসতঘরে চুরি সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় কাসেম বেপারীর স্ত্রী ২৮ মে থানায় মামলা দায়ের করে। ওই ঘটনায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত প্রতিবেদন  ১৯ডিসেম্বর দাখিল করেন উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ মনসুর আলী। তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন বাদীর বক্তব্যের সাথে আর্জির গড়মিল পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে বাদী চলতি বছরের ২১এপ্রিল আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। ২৪এপ্রিল আদালত আসামী বিরুদ্ধে সমন জারী করেন। শনিবার সন্ধ্যায় আলম হাওলদারারের কাছে চুরি মামলার সমন জারীর নোটিশ পৌছে। বাদীর কৌশলী মোঃ মোখলেছুর রহমান বাচ্ছুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে জানান, বাদী সাজমা বেগম আলম হাওলদারের নাম বলেছে।

উল্লেখ সেলিমা পারভীন সেতু, শেখ  আবদুল কাদের ও মোখলেছুর রহমান বাচ্ছু একই চেম্বারে আইন ব্যবসা করে আসছেন।