দক্ষিনাঞ্চল আন্ডার ওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ কর্তা বাদল গ্রেফতার

  ঢাকার হত্যা মামলা সহ একাধিক আমলার পলাতক আসামী বাদলকে  অবশেষে আগৈলঝাড়া পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। বাদলের বিরুদ্ধে মোহম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা সহ একাধিক মামলা রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়।

পুলিশের এএসআই নাসির ও মনির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী একাধিকবার পুলিশী অভিযানে পালিয়ে যাওয়া মশিউর রহমান বাদলকে রেববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। গতকাল সোমবার বাদলকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

কে এই বাদল:

পুলিশ জানায়, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আমবৌলা গ্রামের হাবিবুর রহমান ওরফে হবিব বখতিয়ারের ছেলে মশিউর রহমান বাদল। হবিব বখতিয়ার স্থানীয়ভাবে একজন মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। গত চার দলীয় জোট সরকারের সময় বাদলের উত্থান ঘটে ফেন্সিডিল ব্যবসার নিয়ন্ত্রনকারী হিসেবে। এসময় এলাকায় সে বিএনপি সমর্থিত হলেও ঢাকার মোহম্মদপুরে থেকে আওয়ামীলীগের এমপি হাজ্বী মকবুলের নাম ভাঙ্গিয়ে তার প্রধান ক্যাডার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিজেকে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ কর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এরপর তার চোখ পরে দক্ষিনাঞ্চলের অস্ত্র, মাদক, চোরাই মোটর সাইকেল ব্যবসা সহ অপরাধ জগতের ব্যবসার উপর। ভারতীয় সীমান্ত বেনাপোল হয়ে খুলনা-যশোর-গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট হয়ে বরিশাল রুটের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাদল  নিজ হাতে। স্থানীয়ভাবে তার অবৈধ ব্যবসা দেখাশুনার দ্বায়ত্বী দেয় আপন ছোট ভাই মাসুমকে। মাসুসও একবার ফেন্সিডিল সহ গ্রেফতার হয় মোহম্মদপুর থানায়।

২০০৪ সালের ২৯ মার্চ মোহম্মদপুর থানার সার্জেন্ট হত্যা মামলার প্রধান আসামী হয় বাদল। (জিআর মামলা নং-১৯৫/০৪)। ওই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী বাদল পলাতক থেকে একাধিকবার বিভিন্ন অপরিচিত (তার সহয়েগী ব্যবসায়ী) লোকজন নিয়ে নিজ এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরে যায়। ভৌগলিক প্রতিকুল পরিবেশের কারণে বাদলের বাড়িতে পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও যৌথ বাহিনী পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। একাধিকবার অভিযানের সময় পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে উপজেলা সদর দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বাদল। এছাড়াও একই বছর রমনা থানার  লুন্ঠন জিআর ১০০/০৪ মামলার অন্যতম আসামী এই বাদল। অপরাধ জগতে বাদলকে আইনী সহ সার্বিক সহযোগীতা করেন তার চাচা ঢাকা জজ কোর্টের আনজীবি মতিয়ার রহমান।  এছাড়াও ঝিনাইদহ ও শার্শার দুই চেয়ারম্যান তারে অবৈধ ব্যবসার পার্টনার বলে অভিযোগ রয়েছে। বাদল উত্তরায় ৭ কেজি স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত বলে বিস্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওই স্বর্ণের দোকান ডাকাতির পর তারই গ্রামের সোহানা আক্তার পুতুলের বাসায় ডাকাতি করা স্বর্ণের ব্যাগ রেখে পালিয়ে যায় বাদল। ওই মামলায় বিনা দোষে সোহানা দীর্ঘদিন কারাভোগ করে। বাদলের গ্রেফতারের খবরে ওই এলাকায় সাময়ীক স্বস্তি ফিরে এলেও তা স্থায়ী হবেনা বলে এলাকাবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস। কারণ,সহজেই বাদলের লম্বা হাতের কারণে আইনের ফাঁক দিয়ে সহজেই পার পেয়ে যাবে।