বসবাসরত মুরুং হেডম্যান ও কার্বারীদের নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ মে) আলীকদম সেনা জোন সদরে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল এসএম ইমরানউজ্জামান। এতে উপস্থিত ছিলেন নবাগত জোন লে.কর্ণেল শাহিদ মোস্তফা ও জোনের ভারপ্রাপ্ত উপ-অধিনায়ক মেজর একেএম সাইফুল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম, লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল এসএম ইমরানউজ্জামান বলেন, পাহাড়ি এলাকায় মুরুং উপজাতি সেনা বাহিনীর অকৃত্রিম বন্ধু। মুরুংদের উন্নয়ন সেনা বাহিনী সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় মুরুং যুবক অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছেন মর্মে দাবী করে জোন কমান্ডার বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নয়নে পাহাড়ি এলাকার হেডম্যান ও কার্বারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আশির দশকে মুরুং বাহিনী গঠিত হয়ে সেনা বাহিনীর সহযোগি হিসেবে পার্বত্য এলাকা থেকে সন্ত্রাস নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তিনি বলেন, অধিক বয়সী মুরুংদের অবসর দিয়ে তার স্থলাভিষিক্ত যোগ্য ছেলেকে মুরুং বাহিনীর সদস্য নির্বাচন করতে হবে। শক্তি, সামর্থ্য ও বুদ্ধিমত্তার ওপর ভিত্তি করে মুরুং বাহিনীর কমা-ার নিয়োগ করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। জোন কমান্ডার আলো বলেন, আলীকদম বর্তমানে ১৩৯ জন মুরুং বাহিনীর সদস্য বেতন-ভাতার আওতায় রয়েছে। অচিরেই লামা উপজেলার মুরুং বাহিনীকে পুনর্গঠিত করে কার্যক্রম শুরু করা হবে। দু’-তিন মাস অন্তর লামা-আলীকদমের মুরুং বাহিনীর সদস্য ও হেডম্যান-কার্বারীদের নিয়ে সেনা বাহিনী বৈঠক আয়োজন করবে।
এতে মুরুং নেতারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি এলাকায় ম্রো ন্যাশনালিষ্ট পার্টি (এমএনপি) নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ মুরুংদের বিপদগামী করার অপচেষ্টা শুরু করেছে। তারা এ গ্রুপের কার্যক্রমে প্রত্যাখান করে বলেন, মুরুংদের উন্নয়নে একমাত্র মুরুং বাহিনীই অতীতে অসামান্য অবদান রেখেছে। আর সেনা বাহিনী এ বাহিনীর মনোবল ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মতবিনিময় সভায় মুরুং নেতারা লামা ও আলীকদম উপজেলার কয়েকটি এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্রাবাস নির্মাণসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবী-দাওয়া তুলে ধরেন। সেনা বাহিনীর জোন কমা-ার তাদের দাবী দাওয়া পূরণে শ্রীঘ্রই কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
আলীকদম প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদ কর্তৃক মুরুং সম্প্রদায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্বলিত “পার্বত্য চট্টগ্রামের মুরুং উপজাতি” শীর্ষক বইটি উপস্থিত হেডম্যান-কার্বারীদের বিতরণ করা হয়। মতবিনিময় সভায় মধ্যহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুরুং নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেংপুং হেডম্যান, ইয়োংলক মুরুং, মেনদন মুরুং কমা-ার, রাংক্লাং মুরুং ও সাংতাই মুরুং প্রমুখ।