দিশেহারা বরিশাল আ’লীগের নেতা-কর্মীরা….

ও তার অঙ্গ সংগঠন। দক্ষিনাঞ্চলের আ’লীগের কর্নধর আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ঘিরে বরিশাল আ’লীগর মধ্যে এখন চলছে মান অভিমানের পর্ব। দক্ষিনাঞ্চলের অদ্বিতীয় এই নেতার ধর্য্য ধর” বানী শুনতে শুনতে ধর্য্যচ্যুত ঘটতে যাচ্ছে বরিশাল আ’লীগের। মান-অভিমান করে এখানকার ত্যাগী নেতারা একটু-একটু করে রাজনীতি থেকে দুরে সরে পরছেন।

দীর্ঘ সাড়ে ৯বছর অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে তারা এখন ক্লান্ত। আবার কেহ কেহ অভ্যন্তরীন প্রতিপক্ষের উপর এতটাই ক্ষুব্দ যে রাজনীতির মাঠে থেকেও না থাকার মত। বিরোধী দলের ৫বছর, তত্বাবধায়ক সরকারের ২বছর এবং ক্ষমতার আড়াই বছর মোট সাড়ে ৯ বছর পর্যন্ত আ’লীগের এই মহান নেতার ধর্য্য ধর বানীতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও প্রকাশ করতে নারাজ এখানকার আ’লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন।

এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনায় প্রত্যেক নেতা-কর্মীদের দীর্ঘ নিশ্বাষ ছাড়া আর কোন জবাব নেই। তদুপরি হাসানাত ভক্ত এসব অনুসারিরা তাদের এই প্রানের নেতার হুকুমের বাইরে যেতে সর্বদাই নারাজ। বিশেষকরে বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতারা না পারছেন বলতে না পারছেন সইতে।

রাজনীতির জন্য ইতিমধ্যে অনেক নেতা-কর্মীরা তাদের পারিবারিক সম্পত্তিও বিক্রি করেছেন। আবার কেহ হয়েছেন লঞ্চিত। বিরোধী দল কিংবা অভ্যন্তরীন কোন্দলের যে কোন ঘটনার সমাধানের জন্য শীর্ষ স্থানীয় এই নেতার কাছে ছুটে গেলে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তার শুধু একটাই আশার বানী তা হল ধর্য্য ধর। কিন্তু আ’লীগের এসব অবহেলিত নেতাকর্মীরা আর পারছেন না ধর্য্য ধরতে। এবার তারা তাদের নেতাকে পাশে চায়। চায় সারা বছরের বিলিয়ে দেয়া শ্রম এবং অর্থের যথাযথ মূল্যায়ন। তা ছাড়া এখানকার আ’লীগের সমার্থকরা মানষিকভাবে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় অবহেলিত ও ত্যাগী নেতারা এতিমের মত তাকিয়ে আছেন তাদের প্রানের নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র দিকে।

আ’লীগের একটি দায়িত্বশীল নিরপেক্ষ সূত্র বলছে, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে যারা হিরনের প্রতিদ্বন্দী মনে করে তারা আসলে ভূল করছেন। কারন মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই শওকত হোসেন হিরন দলীয় নেতা-কর্মীদের হাল ধরবেন বা ধরেছেন এটাই স্বভাবিক। আর এ কারনে বরিশাল আ’লীগের কর্নধর আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র রাজত্বে নতুন এক নেতৃত্বদানকারীর অবির্ভাব হয়েছে বা হবে তাও স্বাভাবিক। ক্ষমতা গ্রহনের পর আড়াই বছরে ধীরে ধীরে আ’লীগের নেতা-কর্মীদের নিকট পৌছে গিয়েছেন মেয়র হিরন। মেয়র হিসেবে অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহনের পর নেতা-কর্মীদের চেষ্টা করেছেন একটু একটু করে কাছে টানতে। দলের নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখে অনেক সময়ই মেয়র হিরনকে পাশে দাড়াতেও দেখা গেছে।

তবে এসব কিছুর মধ্যেও তার ব্যার্থতা সম্পর্কে দলীয় একটি সূত্র দাবী করছে, আ’লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিশেষ একটি মহল যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখছে তারা বেশ দাপটের সাথে শান্তিতেই দিন অতিবাহিত করছে। এমনকি বিভিন্ন দপ্তরের কাজ বাগিয়ে নিয়ে ইতিমধ্যে কামিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই চাওয়া পাওয়ার অসম বন্টনকে ঘিরেই আ’লীগের কর্মীরা মানষিক দিক থেকে ২ভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছে। তবে লীগের নেতা-কর্মীরা মানষিকভাবে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হলেও দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দরা বলছেন, মেয়র হিরনের কোন প্রতিপক্ষ নেই। কারন প্রকৃত পক্ষে মেয়র হিরনের প্রতিপক্ষ হিসেবে আ’লীগে নেতা কর্মীরা যাকে প্রতিদ্বন্দি মনে করছেন তার নাম আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। যিনি ১৯৯৬ সালে ছিলেন চীফ হুইপ। তা ছাড়া হাসানাত সর্ম্পকে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানে ভাতিজা। দক্ষিনাঞ্চলের অভিভাবক হিসেবে বরিশালের রাজনীতিতে হাসানাত হচ্ছেন অদ্বিতীয়। ক্ষমতা কিংবা জনসর্মথনে যার অবস্থান মেয়র হিরনের অনেক উর্দ্ধে। তদুপরি ক্ষমতাধর এই নেতা কেন সর্বদাই লীগের নেতা-কর্মীদের ধর্য ধরতে বলছেন এই প্রশ্ন এখন গোটা আ’লীগের।

বরিশাল জেলা আ’লীগের মধ্যে অবহেলিত এসব নেতা-কর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন- জেলা আ’লীগের সৈয়দ আনিছুর রহমান আনিছ, তারিক বিন ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন চুন্নু, যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন,সাধারন সম্পাদক ফজলুল করিম শাহীন, মহানগর যুবলীগের যুগ্নআহবায়ক খান মামুন, সাবেক ছাত্র লীগ নেতা বরিশাল কলেজের সাবেক ভিপি ফরহাদ বিন আলম জাকির, জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মিলন ভূইয়া, যুগ্ন আহবায়ক কাজী মনিরুল ইসলাম তারিক,  যুগ্নআহবায়ক তৌহিদুর রহমান ছাবিদ, সমর দাস , তারিন সহ ৫০এর অধিক অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক কাজী মনির উদ্দিন তারিক বলেন, আমি আর কি বলব। আমরাতো বিরোধী দলে থাকতে ছিলাম সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘর ছারা। আর এখন ক্ষমতার আমলে আমরা দলীয় কর্মীদের হাতে লাঞ্চিত হচ্ছি। ঘরের শত্রু বিভিশন। তবে দলের এসব দূর্দিনের জন্য তিনি মেয়র শওকত হোসেন হিরনকে দায়ী করে বলেন আ’লীগের এই বেহাল দশা একমাত্র মেয়রের কারনে। ত্যাগী নেতা- কর্মীরা এখনও অবহেলিত। অপর দুই ত্যাগী নেতা ছাবিদুর রহমান ছাবিদ বলেন, প্রত্যেক নেতা-কর্মীদের যুথাযথ মূল্যায়ন করা উচিৎ। এর বাইরে এই মুহুর্তে কোন মন্তব্য করতে পারবনা।