আগৈলঝাড়ায় প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ ও শীতের কারণে

বিভিন্নস্থানে শুটকি পল্লী গড়ে উঠেছে। বিল বাওড়ে ঘেরা আগৈলঝাড়া ও পার্শ্ববর্তী উজিরপুর, কোটালীপাড়া উপজেলার মৎস্য অঞ্চল হিসেবে রাজাপুর সুপরিচিত। মাছ শিকার পেশার সাথে জড়িত দরিদ্র পরিবারগুলো অধিক লাভের আশায় ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত মাছ শুটকির সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারণ এসময় বিলাঞ্চল শুকিয়ে যাওয়ায় দেশী ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পরে। ফলে মাছের প্রাচুর্যতা ও সহজলভ্যতার কারণে এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ সংকটের কারণে শুটকির প্রতি ঝুঁকে পরে জেলে পল¬ল্লীর বাসিন্দারা। পুরুষের পাশাপাশি মহিলা ও শিশুরা এসময় এ পেশায় অতিরিক্ত শ্রম দিয়ে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু বাড়তি আয়ের চেষ্টা করেন। বাড়তি আয়ের কারণে তাদের পরিবারে ক্ষণস্থায়ী স্বচ্ছলতাও দেখা দেয়। রাজাপুর ও চলাইরপাড় শুটকি পল্লীর কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সিডরে তাদের সব মাছ ভাসিয়ে নিয়ে ১৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা সে ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে আবার নতুন করে মাছ সংগ্রহ শুরু করলেও এবছর শৈত্যপ্রবাহের কারণে তারা মাছ শুকাতে না পারলেও তাদের মুখের হাসি শুকিয়ে নিচ্ছে। কুয়াশা ও প্রবল শীতের কারণে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া আগাম দাদন নিয়ে শুরু করা ব্যবসা নিয়ে বর্তমানে শংকিত এসব জেলে পল্লীর মৎস্যজীবিরা। মাছ সংকটের কারণে এবছর বুইচা শুটকি ১শ’ থেকে ১শ’ ৩০ টাকা, বাইন ২শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা, শৌল ২শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা, টেংড়া ৩শ’ থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ কাঁচামাছ তাদের বেশী দামে কিনতে হচ্ছে। এসকল শুটকি মাছের দেশের বিভিন্নস্থানে চাহিদা থাকলেও প্রধানতঃ ঢাকা, সিলেট ও ফেনীতে রপ্তানী করা হয়। এই শুটকি পল্লীর শুটকির ব্যাপক চাহিদার অন্যতম কারণ এখানে প্রাকৃতিক উপায়ে মাছ শুকানো হয়। কোনরকম ফরমালিন বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়না এখানে। তবে ওই ব্যবসায়ী আরও জানান, দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার জন্য আড়তদাররা কৃত্রিম উপায়ে (ফরমালিন) মাছ সংরক্ষণ করেন। ওই পলীর মাছ কাটার কাজে নিয়োজিত হাসিরানী, আয়না রানী ও শোভা রানী জানান, সিডরে তাদের বসতঘর সহ শুটকি পলী সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হলেও তারা তা পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই এবছরের শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার কারণে আবার ক্ষতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। মাছ শুটকি করে যা আয় করে তাদিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসার চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। তারা আরও জানান, বর্তমান মৌসুমে বিলে মাছ কম থাকায় তাদের দুঃখ দূর্দশা এবার বেড়েছে। সরকারী সহজশর্তে লোন পেলে শুটকি পলীর সাথে জড়িত মৎস্যজীবিদের পরিবার স্বাবলম্বী হওয়াসহ দেশে বিদেশে শুটকি রপ্তানী করে এনে দিতে পারে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা।


বিশেষ বিজ্ঞপ্তিঃ লেখকের এই লেখাটি সর্বস্বত্ব সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতিরেকে লেখার আংশিক বা পূর্ণ অংশ কোন ধরনের মিডিয়ায় পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না, উপরোক্ত শর্তের ব্যতিক্রম হলে তার বা ঐ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিস্তারিত যোগাযোগ করুন- এইচ, এম সুমন Mobile : +৮৮ ০১১৯০৭৯০৩৯৯