আজ রোববার বরিশালে শুরু হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ৩৬ ঘণ্টা হরতাল। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে এবং বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে গাছ ফেলে ও টায়ারে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে অবরোধ সৃষ্টি করছে পিকেটাররা। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টহলদল ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অবরোধ তুলে দিচ্ছে । তবে যানবাহন ভাঙচুরের কোনো খবর পাওয়া যায় নি। এদিকে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল প্রতিহত করতে যুবলীগ ও ছাত্র লীগের নেতা কর্মীরা সকাল থেকে বিভিন্ন মোরে অবস্থান করছে ।
এদিকে, টায়ারে অগ্নিসংযোগ করার সময় রোববার ভোর ৬টায় নগরীর প্লানেট ওয়ার্ল্ড শিশু পার্কের সামনে থেকে শামীম নামে এক পিকেটারকে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুর্লিশ। অপরদিকে, ভোর ৬টায় প্রতিদিনের রুটিন অনুযায়ী একযোগে বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে পর্যায়ক্রমে অভ্যন্তরীণ ১০টি রুটের সবকটি লঞ্চ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে জানিয়েছে লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা। বরিশাল লঞ্চ মালিক সমিতির যুগ্ম-আহ্বায়ক খোরশেদ আলম জানান, অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে এবং থাকবে। এখানে হরতালের কোনো প্রভাব নেই। এ ছাড়া বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর রুটের যাত্রীবাহী বাস নিয়ম অনুযায়ী সকাল থেকে চলাচল করছে । ভোর ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৪০ টি বাস যাত্রী নিয়ে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড ত্যাগ করেছে।
বেলা ১০ টায় নগরীর সাগরদী বাজার এলাকায় ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলম ও সাধারন সম্পাদক নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যানবাহন চলাচল করতে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে । এছাড়া ২৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার কর্মকার পিংকুর নেতৃত্বে রুপাতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস ও টেম্পু, মাহিন্দ্রা চালকদের যানবাহন চালু রাখতে উৎসাহিত করতে দেখাগেছে । পরে তারা বিএনপির হরতাল প্রতিহত করার শ্লোগান দিয়ে মিছিল বের করেন ।
অপরদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদের পরিস্থিতি ও কিছুটা স্বাভাবিক। সেখান থেকে সকাল থেকে ১১ টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটের বেশ কয়েকটি বাস চলাচল করছে । সকাল থেকে দূরপাল্লার ১০/১২ টি বাস চলাচল করছে । তাছাড়া বিকল্প যান অটোরিক্সা, টেম্পু বা মাহিন্দ্রো ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের চলাচল প্রতিদিনের ন্যায় স্বভাবিক রয়েছে । ভিযোগ রয়েছে, হরতালের সুযোগে এসব যানের ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ আদায় করা হচ্ছে। ফলে, যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে যাত্রীদের নিয়ে কয়েকটি বাস ছেড়ে গেছে। যাত্রী তুলনামূলক একটু কম হওয়ায় বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে ছেড়ে যাবে।
অপরদিকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড, নথুল্লাবাদ, লঞ্চঘাট, রূপাতলী, জেলখানার মোড়, নতুনবাজার, বাংলাবাজার, আমতলার মোড়, বিএম কলেজ, চকবাজার, কাকলীর মোড়সহ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। নগর জুড়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নগরীর সকল পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিত পুরোপুরি শান্ত। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।