বর্তমান সরকারের সময়েই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে

 তদন্তের ভিত্তিতে ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া  বর্তমান সরকারের মেয়াদেই সম্পন্ন করা হবে / যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তা ক্রমাগত চলবে, কোন অপরাধী তার থেকে রেহাই পাবেনা/ তবে যে সকল ব্যক্তি সুনির্দিস্ট অপরাধের ভিত্তিতে বর্তমানে আটক রয়েছেন, তাদের বিচার বর্তমান সরকারের আমলেই সুসম্পন্ন হবে / গত ১১ই জুন, বস্টনে, নিউ ইংল্যান্ড আওয়ামী লীগের  বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বৃত্তি প্রদান উপলক্ষে  আয়োজিত  সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম /   তিনি বলেন,  বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিতেই বিশ্বাসী ও পরিচালিত,বিন্দু মাত্র বিচ্যুত নয়  / সংবিধান সংশোধন বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপনের পর পাশ হওয়া  পর্যন্ত অপেক্ষা করুন  দেখবেন তাতে আপনাদের প্রত্যাশাই প্রতিফলিত হয়েছে / মন্ত্রী  কামরুল ইসলাম আরো বলেন, বাংলাদেশে মুক্তি যুদ্ধের সময় লোক সংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি/ বর্তমান সময় পর্যন্ত ঐ সকল লোকের মধ্যে চার কোটি লোকই মারা গেছে / বাকি রয়েছে সাড়ে তিন কোটি, অপর দিকে বৃদ্ধি পেয়েছে আরো ১২ কোটি নতুন লোক / বিগত নির্বাচনে আমাদের ১ কোটি নতুন প্রজন্ম প্রথমবারের মত ভোটার হয়েছে এবং তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে / তাই আমাদের তাদের জন্য এবং  আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য কাজ করতে হবে/ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নতুন প্রজন্মের কল্যানে সুদুর প্রসারী পরিকলপনা  গ্রহন করে কাজ করে যাচ্ছেন, যাতে তারা যুগ উপযোগী হয়ে গড়ে উঠে /  সুদুর প্রবাসে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে জানার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম  নিউ ইংল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রশংসা করেন ও তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান/ প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিস্ট ইতিহাসবিদ ও  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: মুনতাসির মামুন  বলেন, আমরা বঙ্গ বন্ধুর  সংবিধান চাই, যাকে আমরা ৭২ এর সংবিধান বলি / বঙ্গবন্ধু অতি অল্প সময়ে আমাদের এমন একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন যার  মাধ্যমে  তিনি ধর্মনিরপেক্ষ, শোষন মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে চেয়েছিলেন / আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে / বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীনতা চাননি, বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিব চেয়েছিলেন বাংগালী জাতিকে, পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করে সামাজিক অন্যায় -অবিচার ও বৈসম্য  থেকে মুক্তি দিতে , সাম্প্রদায়িকতা ও সামরিক শাসনের নামে নিপীড়ন নির্যাতন ও জুলুমের হাত  থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে / ১৯৭৫ সালে জিয়াউর রহমান আমাদের সমস্ত অর্জনকে ধ্বংস করে আবার আমাদের পাকিস্তানে নিয়ে গেলেন/ যার থেকে মুক্ত হতে ৩০লক্ষ লোককে শহীদ হতে হল, ২লক্ষ মা বোনকে ইজ্জত দিতে হল / জিয়া তাদের সে ত্যাগকে তুচ্ছ করে সেই ঘাতক, মৌলবাদী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিল / জাতিকে খন্ডিত করে পাকিস্তানেই ফিরিয়ে নিল / জিয়া জানত ক্ষমতায় থাকতে হলে, জাতিকে বিভক্ত করে রাখতে হবে, নইলে ক্ষমতায়  থাকতে পারবেনা / ঢাকার যে স্থানে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষন দিয়েছিলেন, পাকবাহিনী আত্মসমর্থন করেছিল, সে পবিত্র স্থানের কোন স্মৃতি রাখেনি/ সেখানে  করেছিল শিশু পার্ক / জিয়া  বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের  সকল স্মৃতি মুছে দিতে চেয়েছিল / কিন্তু ইতিহাস ইতিহাসই  থেকে যায়, তাকে কখনোই  চিরতরে ধ্বংস করা যায়না / আমরা পাকিস্তানমার্কা জিয়া এরশাদের সংবিধান চাইনা, আমরা বঙ্গবন্ধু মুজিবের সংবিধান চাই, আমরা ৭২ এর ধর্মনিরপেক্ষ, সংবিধান চাই/

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে কাউকে একটি কথাও  বলেননি, তিনি এসেছিলেন যুদ্ধাপরাধীদের বাচাঁতে, তাদের  বিচার প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্থ করতে / আব্দুস সালাম শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য ও বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য  দেশে বিদেশে সকলকে ঐক্য বদ্ধভাবে কাজ করতে অনুরোধ জানান / নিউ ইংল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ওসমান গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ গবেষনাগারের বিশিস্ট বিজ্ঞানী, ও নিউ ইংল্যান্ড ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বৃত্তি কমিটির আহ্বায়ক ড: বামুন দাশ বসু, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাকিকুল ইসলাম খোকন / সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নিউ ইংল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদ মামুন /  অনুষ্ঠানে কলেজ গামী নতুন প্রজন্মের তিন জন মেধাবী ছাত্র –ছাত্রীকে এক হাজার ডলার করে বৃত্তি প্রদান করা হয় / অনুষ্ঠানে আওয়ামী শিল্পীবৃন্দ সংগীত পরিবেশন করেন ও পরে বিখ্যাত চলচিত্র  প্রযোজক ও পরিচালক  কবির আনোয়ার তাঁর ঝর বৃষ্টির নীড় চলচিত্রটি প্রদর্শন করেন / হল ভর্তি দর্শক শ্রোতা সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন

ছবি: জামাল মিয়াজী (বস্টন)

সুহাস বড়ুয়া/হাকিকুল ইসলাম/বিশ্বজিত সাহা: