ধানসিঁড়ি নদী খনন কাজে অনিয়ম

কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতার ঝালকাঠির সেই ধানসিঁড়ি নদীর খনন নিয়ে চলছে দুর্নীতি। এক সময়ের  ঐতিহ্যবাহি এ নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় খনন কাজের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সাড়ে ৪ কিঃ মিঃ খনন কাজের জন্য এ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু খনন কাজে ঠিকাদারের সাথে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আকবর হায়দার দূর্নীতিতে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগীতা না করে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। ঠিকাদার খালে পানি রেখে দু’পাড়ে ২ টি স্কাভিটা মেশিন দ্বারা খাল খননের নামে পাড় ছেটে ৩ মাস অতিবাহিত করেছে। কিন্তু মেশিন দ্বারা খালের মধ্যস্থান না পাওয়ায় খালেও মাঝে মোটেই কাটা হচ্ছে না। বাঁধ না দেওয়ার কারনে খালে জোয়ারের পানি চলাচলের মধ্যেই মাটি রেখেই চলছে খনন কাজ। ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, খালটির নীচে ৮ থেকে ১০ ফিট গভীর এবং পাশে ৫০ ফিট চওড়া করা হওয়ার কথা রয়েছে। বরিশালের ঠিকাদার মেসার্স শামিম আহসান এ কাজ করছেন। প্রায় ৩ মাস আগে খালের দু’পারের মাটি ছাটা কাজ শুরু করা হয়। জুনের মধ্যে এর খনন কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। ঝালকাঠি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আকবর হায়দারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খালটির দুপাড় কাটার পাশাপাশি নীচেও কিছু জায়গা কাটা হয়েছে। কিন্তু ঐ দিনই খনন কাজের স্থান পিংড়ি ও সাচিলাপুরে ছিল সম্পূর্ন উল্টো চিত্র।

 স্থানীয় জাকির হোসেন, রেজাউল গাজি, মিজান ও এছহাকসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, ঠিকাদার  নীচের মাটি না কেটে পাশ কেটে সময় ক্ষেপন করছে। সাড়ে ৪ কিলোমিটারের দুপার্শ্বে বাঁধ দিয়ে ৩ মাস ধরে শুধু পাশ কাটা হচ্ছে। এতে দু’পাড়ের প্রায় ৪শ একর জমির সেচ কাজ বন্ধ হয়ে পরেছে। তাই আউশের ভরা মৌসুমেও এ বছর বাধের আওতাভূক্ত জমিতে কোন আবাদ হয়নি। তারা আরও বলেন, এভাবে ধীর গতিতে পাড় ছাটার  কারনে জোয়ারের পানির খালের তলদেশ তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি সরে গেলে নীচ মাপা হলে ৮ ফিট এর বেশী গভীর হবে না। তাই খালের নীচের মাটি না কেটে ঠিকাদার এ দুর্নীতি ও টালবাহানা করছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এলাকাবাসি এ খাল খননে দুর্নীতি করায় দুই বার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো। তখন ঠিকাদার দরপত্র অনুযায়ী কাজ করার প্রতিশ্র“তি দিলে আবার কাজ শুরু করা হয়। এ ব্যাপারে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আকবর হায়দার সাংবাদিকদের জানান, খালের পাড় ছাড়াও কিছু স্থানের নীচ কাটা হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী এ কাজ হচ্ছে। আগামী জুন মাসে এ কাজের মেয়াদ শেষ হবে। খনন কাজ শেষ হলেই মাপা হবে। এ কাজের ঠিকাদার মোঃ শফিকুল ইসলাম চুন্ন জানান, ধানসিঁড়ি নদী খননের কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ দুই বছর। এখন পর্যন্ত তলা কাটা হয়নি। এ বার বর্ষা শুরু হলে খালের তলদেশের অংশ কাটা হবে না। তা আগামী বছর শুকনা মৌসুমে কাটা হবে।