কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এসেছে কুমির – এবার সাংবাদিকদের বরাদ্দ লুটপাট

থেকে ৩দিনব্যাপী ঝালকাঠিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের বুনিয়াদী কর্মশালা ব্যাপক বিশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে। কোর্সের সমন্বয়কারী সিনিয়র প্রশিক্ষক রাফিজা বেগমের অনুপস্থিতিতে ৩ দিনের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাফিজা বেগম শুধু ঝালকাঠিতেই নয় এর পূর্বে ৩০টি কোর্সের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেছিল। সেখানেও রাফিজা বেগম অনুপস্থিত। কর্ম চালিয়েছেন অফিস সহকারী দিয়ে। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ১৫ জুন সকালে ঝালকাঠি সার্কিট হাউজস্থ ভেন্যুতে নির্ধারিত সময়ের পর শুরু হয়েছে কর্মশালার উদ্বোধনী সভা। কোর্সের সমন্বয়কারী অনুপস্থিত থাকায় উপস্থাপনা ও পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটে। হিমশিম খেতে হয় পিআইবির মাহবুব সাত্তারকে। বার বার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাফিজা বেগমের কাছ থেকে নির্দেশনা নিতে হয়েছে। জানা গেছে, কোর্স পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে অসুস্থতার ভান করে শুরুর দিনই থাকেননি।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, প্রতি একজন অংশগ্রহণকারীর জন্য ব্যাগ, কলম ও খাতার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬৫০ টাকা। অথচ গতকাল প্রতি অংশগ্রহণকারীদের ৫টাকা দামের কলম, একটি ফোল্ডার ও ১২ টাকা দামের একটি খাতা দেয়া হয়েছে। এ খবর পিআইবিতে ছড়িয়ে পড়লে সকলে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। পিআইবি সূত্র জানায় , ব্যাগ, কলম ও খাতার জন্য বরাদ্দ৬৫০ টাকা প্রতি ১জন অংশগ্রহণকারীর জন্য। দুপুরের খাবার, সকাল ও বিকেলের নাস্তা বাবদ বরাদ্দ প্রতি ১জনের জন্য ২৯০টাকা। অথচ গতকাল সকালে একটি পঁচা ও দাগী আপেল, ছোট একটি মিষ্টি ও একটি সমুচা দেয়া হয়েছে। দুপুরের খাবারের জন্য বরাদ্দ ২২০ টাকা অথচ গতকাল সার্কিট হাউজের বাবুর্চিদের দিয়ে রান্না করা বেগুনভর্তা, কুমড়া,ডাল ও মুরগী দিয়ে দুপুরের ভাত খাওয়ানো হয়েছে।

অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছে এ যেন এতিমখানার খাবার। বিকেলে বিস্কুট ও চা দেয়া হলেও অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীরা বিস্কুট পায়নি। সকালও বিকেলের নাস্তা বাবদ বরাদ্দ ৭০ টাকা। সুত্র জানায়, ঝালকাঠিতে ৩ দিন ব্যাপী কর্মশালার জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রশিক্ষন সামগ্রীর জন্য ৬৫০ টাকা, প্রতি জনের জন্য প্রতিদিন দুপুরের খাবারের জন্য ২২০ টাকা,সকাল ও বিকেলের নাস্তা বাবদ ৭০টাকা,প্রতি জনের সম্মানী ৯০০ টাকা, ভেন্যু ভাড়া ৪০০০ টাকা ।কোর্স সমন্বয়কারী পিআই বিতে ৩২জন অংশগ্রহণকারীর বাজেট বরাদ্দ দিলেও অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাস্তবে ২৮ জন।সূত্র জানায়, কোর্স সমন্বয়কারী খাবার খাত ও ব্যাগ, কলম, প্যাড, হ্যান্ড আউট খাত থেকে জনপ্রতি আয় করবেন বহু টাকা। খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অংশগ্রহণকারীরা। জনপ্রতি ৩ দিনে ১জনের জন্য সম্মানী রয়েছে ৯শ’ টাকা। যাতায়াত বিলও রয়েছে।

জানা গেছে, সম্মানী ও যাতায়াত বিল খালি ভাউচারে স্বাক্ষর নেয়ার পায়তারা চলছে। এছাড়া বিষয় সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্বদের দিয়ে কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে না। রিসোর্সপার্সন যত বাহির থেকে নেয়া হবে তাদের সম্মানী দিতে হবে প্রতি ক্লাসের জন্য ১০০০ টাকা এজন্য কোর্স সিডিউলে সমন্বয়কারীর নাম একাধিক রিসোর্স পার্সনদের জায়গায় নাম রয়েছে। এ কোর্স নিয়ে তামাশা করছে রাফিজা বেগম এ প্রশ্ন পিআইবি কর্মকর্তাদের। যার থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে জ্ঞান নিবে সেই প্রশিক্ষক যদি হয় দুর্নীতিবাজ ও অর্থ আত্মসাতকারী ও প্রতারক তাহলে?

এদিকে ঝালকাঠিতে পিআইবির কর্মশালা শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী মূলক সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন পত্রিকাও অনলাইন সংবাদ সংস্হার ওয়েব সাইট থেকে ডাউনলোড করে পিআইবির কর্মকর্তারা পড়ে হতবাক হন। এদিকে শীর্ষ স্থানীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা কর্মশালার দিক নজর রাখছেন। তারা মঙ্গলবার থেকেই নজরদারী করছেন। সূত্র জানায়, সংবাদটি প্রচারিত হলে ঝালকাঠির সমকাল প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয় আমার দেশ পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে। অথচ বাদ দেয়া হয়েছে স্বাধীনতা স্বপক্ষের পত্রিকা সাংবাদিকদের। এদিকে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা একই ব্যক্তির ভাষণ বার বার শুনে বিরক্তি ও ত্যাক্তকর ভাব প্রকাশ করেছেন। এদিকে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে প্রশিক্ষণ হওয়ায় ভেন্যু ভাড়া ৪০০০ হাজার টাকা বেচে গেলেও ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ভেন্যুর টাকা সমান সমান করা হবে বলে সূত্র জানায়।

এদিকে আজ ২য় দিনের মত কোর্স শুরু হবে অথচ আজকেও কোর্স সমন্বয়কারী রাফিজা বেগম থাকবেন অনুপস্থিত বলে সূত্র জানিয়েছে।