তাজমহল-আল্লাহর মসজিদ-সরকার মঠ হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র

৪ কোনে ৪ টি গোলাকার ট্যারেট রয়েছে। ট্যারেটগুলোও কারুকার্য। মসজিদটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হচ্ছে এর কার্নিজগুলো বর্গাকার। মসজিদটির পূর্ব উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে প্রবেশ পথ রয়েছে। পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে ৩ টি মেহবার। প্রধান মেহবারটি বড় ও সু-সজ্জিত। মসজিদটির নির্মান ও স্থাপত্য কৌশল পর্যবেক্ষনে ধারনা করা হয়, মসজিদটি পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত। এ মসজিদটি দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে অসংখ্য লোক আসেন। এখানে প্রচলিত রয়েছে আল্লাহর মসজিদের জন্য কেউ কিছু মানত করলে তার মনবাসনা পূর্ণ হয়। বাংলাদেশের পর্যটন কর্পোরেশন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন হিসেবে এ মসজিদটিকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েই যেন দায় শেষ করেছেন। অথচ রক্ষনাবেক্ষনের মাধ্যমে এ মসজিদটি আরো আকর্ষনীয় করা যেতে পারে।

তাজমহলঃ
বাংলা ১৩৪৭ সালে জমিদার কামিনী গুপ্তের দ্বিতীয় পুত্র ডাঃ শরৎ চন্দ্র গুপ্ত তার পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নিজ বাড়ির পুকুর পারে ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে ৭ টি মূল স্তম্ভের ওপর বর্গকারে এ সমাধীটি নির্মান করেন। সমাধীর নামকরণ করা হয় কালিতারা নিত্যানন্দ স্মৃতি মন্দির হিসেবে কিন্তু নির্মান সৈলির কারনে এ অঞ্চলের মানুষ এটিকে তাজমহল বলে আখ্যায়িত করেছে। এটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রীতে অবস্থিত বলে এলাকায় এটি ফুল্লশ্রীর তাজমহল নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাজমহলটি এমনিভাবে তৈরী যার চারিপার্শ্ব দিয়েই তাজমহলের মত দেখা যায়। গৌরনদী-পয়সারহাট সড়কের ফুল্লশ্রী বাসষ্ট্যান্ডে নেমে যে কাউকে তাজমহলের কথা বললেই ওখানে নিয়ে যাবে। তাজমহলটির ওপরিভাগে বড় সুদৃশ্য মিনার রয়েছে। আর চারপাশে রয়েছে চারটি মিনার।

সরকার মঠঃ
গৌরনদীর প্রাচীন কীর্তির মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত ও আকর্ষণীয় হচ্ছে মাহিলারার সরকার মঠ। নবাব আলীবর্দি খানের শাসন আমলে এটি নির্মিত। কতিথ মতে, ইতালীর লিশা টাওয়ারের সংগে মিল রেখে সরকার রূপরাম দাস মঠটি নির্মান করেন। সরকার রূপরাম দাস ছিলেন নবাব আলীবর্দি খানের একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী। দুই শতাংশ জমির ওপর ভূমি থেকে ২৭ দশমিক ৪৩ মিটার উঁচু মঠটির ভেতরের বর্গাকারে একটি কক্ষ রয়েছে। মঠটির দক্ষিন দেয়ালে আছে একটি খিলান যুক্ত প্রবেশ পথ। প্রবেশ পথের ওপরে রয়েছে বিভিন্ন অলংকরন। মঠটির দক্ষিণে একটি বিশাল দীঘি। সু-উচ্চ এ মঠটি একটু কাঁত হয়ে আছে। মঠটির দক্ষিণপাশে দীঘি থাকার কারনে মঠটি কাঁত হয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন। আবার অনেকে বলেন নির্মাণ কাল থেকেই এটি এরকম হেলানো অবস্থায় রয়েছে। এখানেও বাংলাদেশের পর্যটন কর্পোরেশন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন হিসেবে এ মঠটিকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। সরকার মঠটি দেখার জন্য প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অসংখ্য লোক আসেন এখানে। নিয়মিত উৎসব ছাড়াও এখানে বৈশাখের অক্ষয় তিথিয়া, পৌষ পূর্ণিমা, শ্রাবনী পূর্ণিমা, রথ যাত্রাসহ বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়।