নৌকার সমারোহ এখন আটঘর ও ইন্দেরহাটে

যাতায়াতের প্রধান বাহন নৌকার সমারোহ এখন স্বরূপকাঠীর আটঘর, কুড়িয়ানা ও ইন্দেরহাটে। সন্ধ্যা নদীর শাখা খালে যুগ যুগ ধরে চলে আসা নৌকার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়াও হাজারো মানুষের ঢল নামে। প্রতিদিন এসব হাটে হাজার হাজার নৌকার পসরা বসিয়ে বিকিকিনি চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

রবিবার সকালে সরেজমিনে আটঘর, কুড়িয়ানার বিখ্যাত নৌকার হাটে দেখা গেছে ক্রেতার উপচেপড়া ভীড়। শুধু নৌকাই নয় বৈঠাও বিক্রি হয় এই হাটে। বরিশাল জেলার উজিরপুর, বানারীপাড়া, পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী ও ঝালকাঠী জেলার একটি অংশের প্রায় সহস্রাধিক পরিবার এ পেশার সাথে জড়িত। নৌকা তৈরীর মিস্ত্রি ও পাইকাররা জানান, এ অঞ্চলের ডুবিল, চামির, একতা, আতারপাড়া, গাগর ও আটঘর গ্রামে এসব নৌকা তৈরী হয়।

মিস্ত্রিরা জানায়, পেনিস ও টালাই নামের দু’ধরনের নৌকা তারা তৈরী করেন। পেনিস নৌকা ৬শ টাকা থেকে ৮শ এবং টালাই নৌকা ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি করছেন। ঝালকাঠীর শেখেরহাটের মিস্ত্রি আলামউদ্দিন গতকাল এ বাজারে দু’টি নৌকা বিক্রি করতে এসেছিল। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, একটি পেনিস নৌকা তৈরী করতে তার একদিন সময় লাগে। খরচ হয় প্রায় ৫শ’ টাকা। প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য মাস থেকে নৌকা তৈরীর কাজ শুরু করেন যা চলে একটানা আশ্বিন মাস পর্যন্ত।
নৌকা ব্যবসায়ীরা জানায়, বিক্রি ভাল হলেও তাদের পকেটে পয়সা জমে না। এ বাজারে রয়েছে ইজারাদারদের নির্যাতন ও খামখেয়ালী পনা। ইজারাদাররা নৌকা প্রতি শতকরা ৬ টাকা সরকার থেকে নির্ধারিত থাকলেও আদায় করছে ১০টাকা। যা দেখার কেউ নেই। আক্ষেপের সাথে নৌকা বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন এ পেশার সাথে জড়িত। পুঁজি না থাকায় বেশি নৌকা তৈরী করতে পারছি না। ঝালকাঠীর নথুল্লাবাদ গ্রামের কবির জানান, প্রতিবছর এ হাটে তিনি নৌকা কিনতে আসেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর নৌকার দাম একটু বেশি। কারণ হিসেবে জানা গেছে কাঠের দাম বেড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় নৌকার এ হাটে ক্রেতা বা বিক্রেতাদের জন্য বসার কোন ব্যবস্থা করেনি ইজারাদাররা। তাছাড়া সামান্য বর্ষা হলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাক ভেজা হতে হয়। এ ব্যাপারে আলাপকালে এখানকার ইজারাদারের প্রতিনিধি শাহ আলম জানান রাস্তার উপরে (খালের পাড়ে) হাট বসায় তারা কিছুই করতে পারছে না।