বরিশাল-১ আসনের আওয়ামীলীগ সমর্থক নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রানচাঞ্চল্য

গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের নির্যাতিত আওয়ামীলীগ কর্মী গোলাম হেলাল মিয়া জানান, বিগত বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সন্ত্রাসীরা তার বসত ঘর, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, শারিরিক নির্যাতনসহ পুকুরের মাছ লুট করে নিয়েছে। দীর্ঘদিনেও সে বিএনপির সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের কথা কাউকে জানাতে পারেননি। বলেন, জানিয়ে কি হবে, আজ সময় এসেছে সেইসব কথা বলার, কমিশনের কাছে বিচার প্রার্থনায় বরিশাল সার্কিট হাউজে গিয়ে সব বলবো।

ইল্লা গ্রামের নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রনব রঞ্জন ওরফে বাবু দত্ত জানান, ইতিপূর্বে বিচারের আশ্বাসে তিনি জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করেও কোন সুফল পাননি। এবার সরকারি তদন্ত কমিশনের কাছে শেষ বারের মতো বিচারের আশ্বাসে তিনি আবেদন করবেন বলেও উল্লেখ করেন।

গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আহ্বায়ক কালিয়া দমন গুহ জানান, দীর্ঘদিন পরে হলেও সরকারি তদন্ত কমিশনের সম্মুখে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার নির্যাতিত আওয়ামীলীগ সমর্থক নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন যেতে চাচ্ছে। তবে অধিক দুরত্বের কারনে অধিকাংশ নির্যাতিত পরিবারের লোকজন বরিশাল সার্কিট হাউসে উপস্থিত হতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক সরকারি তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে সরকারের তদন্ত কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য সফল হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর পরই জোটের ক্যাডাররা বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায়) নির্বাচনী এলাকায় হত্যা, ধর্ষন, লুট, হামলা, ভাংচুরসহ ব্যাপক নির্যাতন ও সহিংসতা চালায়। ওইসময় এ দু’উপজেলার হাজার-হাজার আওয়ামীলীগের নির্যাতিত নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীলে আশ্রয় নিয়েছিলো। তৎকালীন চারদলীয় জোটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী শপথ নেয়ার পর পরই এ আসনে প্রথম সফরে এসেছিলো। ওই সময়ের হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিত আওয়ামীলীগ সমর্থকদের কোন নেতা আশ্রয় না দেয়ায় গত ৯ বছরেও চারদলীয় জোটের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোন মামলা হয়নি। সংশ্লিষ্ট থানায় দু’একটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সেসব অভিযোগ থানা থেকে উধাও হয়ে যায়।

সূত্র মতে, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার সহস্রাধীক আওয়ামীলীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর জোটের সন্ত্রাসীরা নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিলো। এছাড়াও ওইসব সন্ত্রসীদের হামলায় প্রান দিতে হয়েছে আওয়ামীলীগ সমর্থক আগৈলঝাড়ার বীর বাহাদুর ও গৌরনদীর সফিকুল ইসলাম বুলেটকে।