বিসিসি মেয়র হিরন কর্তৃক ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত

আবদুর রাজ্জাক তরঙ্গ নামক একটি কোচিং সেন্টার দখলে নিয়েছে। এ ঘটনায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের  মেয়র শওকত হোসেন হিরনের নিকট  সেন্টারের স্বত্তাধিকারী ভুক্তভোগী যুবক বিচারের জন্য অভিযোগ দেন। কিন্তু মেয়র হিরনের ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবী করেন বিচার প্রার্থী।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বরিশাল নগরীর কর্মাশিয়াল কলেজের বিপরীতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য তরঙ্গ কোচিং সেন্টার খুলেন যুবক বিপ্লব। তার বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদী এলাকায়। পিতার নাম হরিপদ ভৌমিক। মায়ের নাম তরঙ্গ বালা। মায়ের নাম দিয়ে এ কোচিং সেন্টারটি খুলেন। গত বছর থেকে পলিটেকনিক রোডে তরঙ্গ কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। চলতি বছরের কয়েক মাস আগে বিসিসি মেয়র হিরনপন্থী ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তরঙ্গ কোচিং সেন্টারের অর্ধেক অংশীদার হতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে সেন্টারের সকল হিসাব নিকেষ রাজ্জাক করছে। বিপ্লবের নিকট কোন হিসাবও দেয়নি। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই সেল ফোনে বিপ্লবকে রাজ্জাক সাফ জানিয়ে দেয় তরঙ্গ কোচিং সেন্টারের কখনো নামও উচ্চারন করবি না। এখন থেকে এটা আমার। বাড়াবাড়ি করলে জীবন কেড়ে নেয়া হবে। ১৭ জুন শুক্রবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহানগর আ’লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরনের নিকট লিখিতভাবে রাজ্জাকের দখল সন্ত্রাসের বিষয়টি জানিয়ে বিচার দাবী করেন বিপ্লব। সিটি মেয়র তাকে বলেছেন ১৯ জুনের মধ্যে বিষয়টির সমাধান করা হবে। রোববার রাতে মেয়রের পিএস সেল ফোনে বিপ্লবকে বলেন রাজ্জাকসহ কোচিং সেন্টারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজন এসে সেন্টারের হিসাব নিকেশ দেখিয়েছে। তাতে রাজ্জাক আপনার(বিপ্লব) নিকট আরো নাকি টাকা পাবে। বিপ্লব বলেন এটা তো মেয়রের ন্যায় বিচার হলো না। রাজ্জাক ও তার সহযোগীরা মেয়রকে সাজানো নাটকের ন্যায় উপস্থাপন করেছে। ভূয়া হিসাবে নিকেশ দেখানো হয়েছে দাবী করে বিপ্লব বলেন কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অর্ধলক্ষাধিক টাকা দেনা হয়েছি। দেনা পরিশোধ করতে পারছি না। কোচিং সেন্টার আমার নিকট থেকে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে ক্যাডার আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন কোচি সেন্টারের অভ্যন্তরেই আমার বাসা। বাসার মালামালও লুটে নিয়েছে রাজ্জাক ও তার সহযোগীরা। সে আমাকে হুমকী ধামকী দিচ্ছে। আমি এখন জীবনের চরম নিরাপত্তাহীন রয়েছি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নিরুপায় হয়ে বিসিসি মেয়রের নিকট বিচার চেয়েও পাইনি। দেশের মানবাধিকার সংস্থাসহ আইনগত পন্থায় ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলেন বিপ্লব।

ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন আমি কোচিং সেন্টার দখলে নেয়নি। শুরু থেকেই এই কোচিং সেন্টারটি পলিটেকনিকের ছাত্ররা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালনা করে আসছে। তিনি বলেন বিপ্লব আমার নিকট কোন টাকা পাবে না উল্টো ওর নিকট টাকা পাব। আর বিষয়টি মেয়র তো সমাধান করে দিয়েছে। মেয়রের একান্ত সচিব খান মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু জানান রাজ্জাক মেয়রের নিকট হিসাব নিকেশ দেখিয়েছে। সেখানে বলছে বিপ্লবের কাছে রাজ্জাক টাকা পাবে। এছাড়া মেয়র রাজ্জাককে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরো জানান মেয়রের সিদ্ধান্তের বিষয়টি বিপ্লবকে সেল ফোনে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত গত বছরের ৪ মে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের মধ্যকার বিভাজনে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের মুল হোতা আবদুর রাজ্জাক। আ’লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসীনের পর রাজ্জাক আ’লীগের শীর্ষ কয়েক নেতার আস্তাভাজন হিসাবে নিজেকে জাহির করে টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজীসহ নানাবিধ অন্যায় অপকর্ম করে আসছে। বর্তমানে রাজ্জাক বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরন পন্থী হিসাবে পরিচিত।