সরকারি গৌরনদী কলেজে ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাংচুর

বুধবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ঘন্টাকালব্যাপী ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় সড়কের দু’পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে দুরপাল্ল¬ার যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রসাশনের আশ্বাসে মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও দুপুর সোয়া ১টায় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষর কক্ষে তালা ঝুঁলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে কলেজের বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র ও দরজা, জানালা ভাংচুর করে।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, এবারের একাদশ শ্রেনীতে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড থেকে সরকারি গৌরনদী কলেজে ভর্তির জন্য বিজ্ঞান বিভাগে ১’শ ৫০, মানবিক বিভাগে ৩’শ  ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ শত জন শিক্ষার্থীর কোঠা নির্ধারন করা হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মজিদ হাওলাদার জানান, ৭৫০ জন ভর্তির আসনের বিপরীতে ভর্তি ইচ্ছুক ১ হাজার ৩’শ ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী আবেদন ফরম সংগ্রহ করে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ভর্তির কোঠা পূর্ন হলেও বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করেছে মাত্র ২৯ জন শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগে ১’শ ২১টি কোঠা শূন্যের বিপরীতে ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়। কিন্তু বোর্ডের অনুমতি না থাকায় ওইসব শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। কলেজে ভর্তির কোঠা বৃদ্ধি করে ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির দাবিতে ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহন করে। দুপুর ১২টায় বিক্ষুব্দরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্ঠ্যান্ডে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মহাসড়কের দু’পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে দুরপাল্ল¬ার যাত্রী, এ্যাম্বুলেন্সে বহনকারী রোগীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। দুপুর ১টার দিকে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (অতিরিক্ত দায়িত্বে) উপ-পুলিশ পরিদর্শক অসীম কুমার সিকদার ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালে দুপুর সোয়া ১টায় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যহার করে নেয়।

বিক্ষুব্ধরা পুর্নরায় মিছিল সহকারে কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষর কক্ষে তালা ঝুঁলিয়ে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এক ঘন্টারও অধিক সময় অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকদেরকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা কলেজের বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা ব্যাপক ভাংচুর করে।

এসময় পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরবর্তীতে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ হারিছুর রহমান হারিছসহ আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে বিক্ষুব্দদের ভর্তির আশ্বাস দিয়ে শান্ত করে।

সরকারি গৌরনদী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মজিদ অবরুদ্ধ ও ভাংচুরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ইতোমধ্যে বিষয়টি সমাধানের জন্য বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে গিয়েও বোর্ড থেকে কোন অনুমতি না পাওয়ায় সমাধান করতে পারিনি।