আলীকদম খাদ্য গুদাম থেকে ১১১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য পাচারের অভিযোগ

কর্মকর্তাসহ ৭ জন গ্রেফতারের একদিন পর বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকেও গতকাল (শনিবার) সকালে ১১১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (গম) কালোবাজারে পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাচারের ঘটনার খবর পেয়ে আলীকদম জোনের সেনাবাহিনীর একটি দল এবং দায়িত্বশীল বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পাচারকৃত খাদ্যশস্য বর্তমানে আলীকদমের জনৈক প্রভাবশালী ব্যবসয়ীর বিভিন্ন গুদামে মজুদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সেনা সদস্যরা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পাচার করা খাদ্যশস্যে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরবিহীন গত ২৭ জুন  তারিখের কিছু কাগজ পত্র প্রদর্শন করেন। কিন্তু সে সব কাগজ প্রকল্প সভাপতিদেরও কোন স্বাক্ষর ছিলনা। যোগাযোগ করা হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম কায়সার আলী সাংবাদিকদের জানান, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের ডিও লেটার দিয়ে পহেলা জুলাইর পর খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহ বিধিসম্মত নয়। অর্থবছর শেষে গুদাম সীল হয়ে যাবার কথা। কিন্তু এরপরে খাদ্যশস্যগুলি প্রশাসনিকভাবে আটক না হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আলীকদম উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ক্রাইপুং মুরুং ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ধুংমং মার্মা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যথাসময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের ডিও’র কাগজ প্রেরণ না করায় এ অনিয়ম করতে হয়েছে। তারা জানান, জুন ফাইনের দু’দিন পূর্ব থেকে ইউএনও আলীকদম কর্মস্থলের বাইরে থাকায় ডিও লেটার স্বাক্ষরে বিলম্ব হয়। চলতি অর্থবছরের নতুন কোন ডিও নেই মর্মে জানিয়ে তারা বলেন, সদ্য সমাপ্ত ২০১০-২০১১ অর্থবছরের টেস্ট রিলিফ (টি আর) এর খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হচ্ছে। যা সরকারি নিতিমালার মধ্যে পড়েনা।

গতকাল ২ জুলাই শনিবার সকালে ট্রাক নং- দিনাজপুর- ট-১১-০০৬০ এবং ঢাকা- ল- ৫১ যোগে  আলীকদম খাদ্য গুদাম থেকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এ সকল খাদ্যশস্য অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। এ সময় সেনা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয় তাদের।

পাচারের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে খাদ্য কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতিদের মোবাইলে ডেকে এনে গতঅর্থ বছরের ইস্যূকৃত বিভিন্ন কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিতে দেখা যায়। অভিযোগ উঠেছে, অর্থবছর শেষ হওয়ার পরেও এসকল খাদ্যশস্য ছাড় করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ টন প্রতি ৫ হাজার টাকা হারে উৎকোচ গ্রহণ করেন। গতকাল (২ জুলাই) গত অর্থবছরের ইস্যুকৃত কাগজপত্র দেখিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যশস্য ছাড় করার বিষয়ে বান্দরবান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম কায়সার আলীর সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি’। আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের নিকট কোন মন্তব্য করতে অপরগতা প্রকাশ করেন।