বরখাস্ত হয়েও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করলেন সবুর

ম্যানেজ করে  বে-আইনিভাবে নিজে বেতন সিট তৈরী করে মে মাসের পূর্ন -বেতন এবং বকেয়া  উত্তোলন করে নেয়ার এক চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। ঝালকাঠির নলছিটির ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত এই অধ্যক্ষের নাম আবদুস সবুর। এর আগে গত ৯ জুন বেলা ১১টার দিকে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের কোন চিঠি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে না দিয়ে আবদুস সবুর সন্ত্রাসী স্টাইলে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। তালাবদ্ধ দুটি কক্ষ ভাংচুর করে। তৎসময়ে তিনি হুমকির সুরে বলেছেন, যারা আমার বিরুদ্ধচারন করেছে এবার তাদের চাকুরিচ্যুতি করা হবে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারন শিক্ষকরা।

জানা গেছে, ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সবুরকে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়ের করা সরকারি গম আতœসাৎ মামলা, মাদ্রাসার অর্থ আতœসাৎ, অধ্যক্ষ হিসাবে অবৈধ নিয়োগ  পাওয়া নিয়ে জজকোর্টে মামলা ,গভর্নিংবডির সিদ্ধান্তকে বারবার অগ্রাহ্য করা, মাদ্রাসায় যোগদানের পর ৬ বছর কোন হিসাব না দেয়া সহ সুনির্দিষ্ট বহু অভিযোগে ২০০৮ সালের ৮ অক্টোবর সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হয়। যা আজ পর্যন্ত নিস্পত্তি হয়নি এবং মামলাগুলো চলছে। গভর্নিংবডির  মেয়াদ শেষ হওয়ায় বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ অবৈধ সুযোগ নেয়ার জন্য  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ জুন  ঝালকাঠি এন এস মাদ্রাসার  অধ্যক্ষকে গভর্নিং বডির সভাপতি করে একটি চিঠি ইস্যু করান। যিনি তার অতি নিকটাত্বীয়। সভাপতি করার এই চিঠি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মওলানা আব্দুর রাজ্জাকের পাওয়ার কথা।  
নিয়মানুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষই ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে  সভাপতি চাইবেন। সভাপতি বিধি মোতাবেক এডহক কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন। পাশাপাশি শিক্ষকদের বিলে স্বাক্ষর করবেন এবং  ৬০ দিনের মধ্যে পূর্নাঙ্গ  কমিটি করে আবার বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন। অবাক হলেও সত্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নতুন করে সভাপতি দেয়ার জন্য কোন আবেদন করেননি। অথচ  ৬ জুন নতুন সভাপতির চিঠি হাতে হাতে এনে ৯ জুন সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন এবং ক্লাক থেকে বেতন সিট জোর করে নিয়ে শিক্ষকদের  মে মাসের বেতন সহ নিজের  বেতন ও বকেয়া নতুন সভাপতির কাছ থেকে স্বাক্ষর করে ব্যংকে জমা দেয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ  এ সময় মাদ্রাসায় ছিলেন না। তিনি খবর পেয়ে  সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের  মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র ম্যনেজারকে দেখালে তিনি বিষয়টি আমলে না এনে সরকারী কোষাগারের টাকা বে-আইনীভাবে তাকে দিয়ে দেন। বিষয়টি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকরা ম্যনেজারকে অবহিত করলে তিনি জানান, কাগজপত্র দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে  ইসলামী বিশ্বাবদ্যালয়ের উপ-রেজিষ্টারের সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তারা শুধুমাত্র সভাপতি নিয়োগ দিয়েছেন। সভাপতি নিয়োগের চিঠি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে তার পাওয়ার কথা  বললে  উপ- রেজিষ্টার চুপ থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি  ড. এম আলাউদ্দিন আহমেদ জানান,  কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা শুধু সভাপতি নিয়োগ দিয়েছেন । যার অনুলিপি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পাওয়ার কথা । বিধি মোতাবেক সাময়িক বরখাস্তের  আদেশ  পূর্নাঙ্গ গভর্নিংবডি পর্যালোচনা করবে এবং সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক। বিশ্ববিদ্যালয় কারো সাসপেন্ড আদেশ প্রত্যাহার করে না। এটার জন্য বিধি রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাংবাদিকদের জানান, বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়ার আগে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় এসে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এডহক কমিটি হলে অবশ্যই আমার কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি আসবে। আমি কোন চিঠি পাই নাই। তাছাড়া এডহক কমিটির কাজ পূনাঙ্গ কমিটি করা। মামলাগুলো নিস্পত্তির আগে এবং তদন্ত  না হওয়ার আগে কি ভাবে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার হলো। সব কিছু ভূয়া বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করেন। এব্যাপারে নলছিটি থানায় একটি  সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ অন্যান্য শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রী,  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, এবং জেলা প্রশাসকের  আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে অধ্যক্ষ আবদুস সবুর এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ইতোমধ্যে বরখাস্তের খড়গ তুলে নিয়েছে গর্ভনিং বডি। তিনি বলেন ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসার আমি অধ্যক্ষ। এ কারনে বেতন উত্তোলন করেছি।