এডিপি’র প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে চুড়ান্ত বিল দাবি

নানকের নাম ভাঙ্গিয়ে চুড়ান্ত বিল তুলতে চাইলে বিল দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় লাঞ্চিত করা হয়েছে প্রকৌশলীকে। প্রকৌশলী বিল না দিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিয়েছেন।    

সংশ্লিষ্ঠ অফিস সূত্রে জানাগেছে, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিপি) ২০১০-২০১১ অর্থবছরে উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে ১০ গ্র“পের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে আগৈলঝাড়া এলজিইডি বিভাগ। এতে রাজিহার ইউনিয়নে ১ টি প্রকল্পে ৮ লাখ ২৬ হাজার ১ শ ৬৮ টাকা,বাকালে ১ টি প্রকল্পে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩ শ ১৬ টাকা, বাগধায় ৩ টি  প্রকল্পে ৮ লাখ ৩২ হাজার ১ শ ৮০ টাকা, গৈলায় ৩টি প্রকল্পে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ১ শ ৭৫ টাকা ও রতœপর ইউনিয়নে ২ টি প্রকল্পে ৭ লাখ ২৭ হাজার ৮২ টাকা সহ  মোট ৩৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯ শ ২১ টাকা প্রাক্কালন ব্যয় বরাদ্দ করা হয়। টেন্ডারের শুরুতেই উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের কব্জায় সকল কাজ নিতে চাইলে  আওয়ামীলীগের একাংশের সাথে চরম বিরোধ বাঁধে। দীর্ঘ দিনেও বিরোধ নিস্পত্তি না হওয়ায় বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাবার উপক্রম হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর বিশ্বাস ও উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম সহ স্থানীয়দের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থকদের ৭ গ্র“প ও আওয়ামীলীগের একাংশকে ৩ গ্র“পের কাজ দিয়ে সমঝোতা করে দেন। ৩০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার নিয়ম থাকলেও উপজেলা প্রকৌশলী ২২ জুন ব্যাক ডেট দিয়ে ফাইলে স্বাক্ষর করেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খাঁন গতকাল ৬ জুন পর্যন্ত উপজেলা সদরে ছিলেন অনুপস্থিত। তরিঘড়ি করে ঠিকাদাররাও কাজ শুরু করেন। ৩০ জুন  কাজের ৫০ শতাংশ শেষ হলেও টাকা ফেরত যাবার আশংকায় পে-অর্ডার নিয়ে প্রকৌশলী নজরুল ৮ টি প্রকল্পের অনুকুলে বিল ছাড়  দিলেও ২ টি প্রকল্পের টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিন চাঁদত্রিশিরা কারিকর বাড়ির সামনে পানি নিষ্কাসনের জন্য কপাট সহ কালভার্ট ও মাটি দ্বারা বাঁধ নির্মান বাবদ ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫ শ ৫৪ টাকার কাজ না হওয়ায় বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। বাগধা ইউনিয়নের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ঠিকাদার ছিলেন মেসার্স অনিক এন্টার প্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী নিত্যান্দ হালদার। তবে কাজটি সাব কন্ট্রাক নিয়েছিলেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের ভাতিজা জাকির সেরনিয়াবাত। অন্যদিকে গৈলা ইউনিয়নের মধ্য শিহিপাশা গ্রামে হানিফ সরদারের বাড়ির পূর্ব পার্শ্বের ভাঙ্গায় ১ লাখ ৫ হাজার ৫ শ ৭০ টাকার  কালভার্ট নির্মান না হওয়ায় ওই টাকাও ফেরত দেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের দ্বায়ীত্বে ছিল মেসার্স হারুন ব্রাদার্স এর স্বত্বাধিকারী সরদার হারুন রানা। একাজটিও সাব কন্ট্রাক নিয়েছিলেন জাকির সেরনিয়াবাত। জাকির বাগধা, রতœপুর ও গৈলা সহ  ৩ টি কাজের সাব কন্ট্রাকটর হিসেবে জড়িত ছিলেন। তবে এর মধ্যে একটি কাজ সম্পন্ন করলেও বাকি দুটি কাজ না করেই  বিল তুলতে চেয়েছিলেন। ৩০ জুনের মধ্যে  ২ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন না করা এমনকি সাইট এলাকায় কোন মালামাল সরবরাহ না করেই সাব কন্ট্রাকটর জাকির তার চাচা মন্ত্রী নানকের নাম ভাঙ্গিয়ে চুড়ান্ত বিল তুলতে চাইলে প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বিল দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তাকে গালমন্দ সহ লাঞ্চিত করে জাকির। উপজেলা প্রকৌশলী কাজ না হওয়ায় ১০ টির মধ্যে দু’টি প্রকল্পের বিল না দিয়ে বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরত দিয়েছেন বলে জানান। এব্যাপারে জাকির কোন কাজ করেননি জানিয়ে বলেন, প্রকৌশলীকে তিনি কোন গালমন্দ করেননি।